×

সারাদেশ

মধ্যপাড়া পাথর খনিতে রেকর্ড, উৎপাদন ১ লাখ ৪৮ হাজার মে.টন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৩, ১১:৩৯ এএম

মধ্যপাড়া পাথর খনিতে রেকর্ড, উৎপাদন ১ লাখ ৪৮ হাজার মে.টন

মধ্যপাড়া পাথর খনি

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে মধ্যপাড়া খনি থেকে গত অক্টোবর মাসে রেকর্ড পরিমাণ ১ লাখ ৪৮ হাজার মে.টন পাথর উত্তোলন করা হয়েছে। এর আগে কখনই একমাসে এতো বিপুল পরিমাণ পাথর উৎপাদন করা সম্ভব হয়নি। খনির উৎপাদন ঠিকাদার জিটিসি খনি ভূগর্ভে বিশ্বমানের অত্যাধুনিক মাইনিং ইকুইপমেন্ট বসানোর পাশাপাশি ইউরোপিয়ান সুদক্ষ প্রকৌশলী-দল ও দক্ষ খনি শ্রমিকদের নিরলস প্রচেষ্টায় এটা সম্ভব হয়েছে।

এদিকে, প্রতিমাসে উৎপাদন বাড়লেও পাথর বিক্রিতে গতি নেই। গত অক্টোবর মাসে প্রায় দেড় লাখ টন পাথর উৎপাদনের বিপরীতে বিক্রি হয়েছে ৭৫ হাজার টন। এতে করে খনি ইয়ার্ডে বিভিন্ন আকারের প্রায় ৮ লাখ টন পাথরের বিশাল মজুদ গড়ে উঠেছে। এ অবস্থায় বিক্রি বাড়াতে পাথরের বিক্রয় মূল্য কমিয়ে দিয়েছে খনি কর্তৃপক্ষ।

মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (এমজিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবু দাউদ মো. ফরিদুজ্জামান মূল্য কমানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে ভোরের কাগজকে জানান- ৫-২০ (৩-৪) মি.মি. সাইজের প্রতিটন পাথরের মূল্য ৩ হাজার ৬৫০ টাকা থেকে কমিয়ে ৩ হাজার ১৫০ টাকা ও ৬০-৮০ মি.মি. ৩ হাজার ৪০০ টাকা থেকে কমিয়ে ২ হাজার ৮০০ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া, ২০-৪০ মি.মি. সাইজ ৩ হাজার ৫৫০ টাকা, ৪০-৬০ মি.মি. সাইজ ৩ হাজার ৮০০ টাকা, বোল্ডার ৩ হাজার ২০০ টাকা, ০-৫ মি.মি/স্টোন ডাস্ট ১ হাজার ২৫০ টাকা ও ফাইন ডাস্ট ৭৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ২৬ অক্টোবর থেকে এ মূল্য কার্যকর করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ২৫ মে মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনি বাণিজ্যিক উৎপাদনে যায়। উৎপাদন শুরুর পর থেকে নানা প্রতিকূলতার কারণে পেট্রোবাংলা প্রতিদিন তিন শিফটে ৫ হাজার মে.টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এক শিফটে ৭-৮’শ মে.টনের বেশী পাথর উত্তোলন করতে পারেনি। এরফলে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত ৬ বছরে খনিটি লোকসান দিয়েছে প্রায় শত কোটি টাকা।

এ অবস্থায় ২০১৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ৬ বছরের জন্য খনির উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয় বেলারুশের জেএসসি টেস্ট সকটোস্ট্রয় ও দেশীয় একমাত্র মাইনিং কাজে অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া কর্পোরেশন লিমিটেড নিয়ে গঠিত জার্মানিয়া টেস্ট কনসোর্টিয়ামকে (জিটিসি)। বর্তমানে খনি ভূগর্ভে বিশ্বমানের অত্যাধুনিক মাইনিং ইকুইপমেন্ট বসানো হয়েছে। ইউরোপিয়ান সুদক্ষ প্রকৌশলী দল ও দক্ষ খনি শ্রমিক দিয়ে পাথর উত্তোলন কাজ চালানো হচ্ছে। জিটিসির হাত ধরে খনিটি ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে প্রথমবারের মত লাভের মুখ দেখে। জিটিসি পূর্ণমাত্রায় পাথর উৎপাদন করায় টানা চার অর্থবছর থেকে মুনাফা করে আসছে খনিটি। জিটিসির প্রথম দফা চুক্তির মেয়াদ শেষ হয় ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর।

অন্যদিকে নিয়ম অনুযায়ী চুক্তি শেষ হওয়ার কমপক্ষে ৬ মাস আগে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেয়ার কথা। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে ৭ দফা আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেও বিদেশিদের তেমন সাড়া মেলেনি। এ অবস্থায় খনির পাথর উৎপাদন অব্যাহত রাখার স্বার্থে দ্বিতীয় দফা চুক্তির আওতায় ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর থেকে পাথর উৎপাদন করছে জিটিসি। দ্বিতীয় দফা চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৬ বছরে প্রায় ১ হাজার ২৮০ কোটি টাকার বিনিময়ে ৮৮ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করে দিবে। জিটিসি সুষ্ঠুভাবে খনি পরিচালনা করতে পারলে একদিকে দেশের পাথরের চাহিদার অনেকটাই পূরণ হবে, অপরদিকে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়সহ বেকার সমস্যারও কিছুটা সমাধান হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App