খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার সীমান্ত সংলগ্ন লোগাং বিজিবি ক্যাম্পের চেকপোস্টে মোটরসাইকেলে দুই আরোহীকে সন্দেহজনকভাবে থামানো হলে বস্তার ভিতর টাকার বান্ডিল সদৃশ্য দ্রব্যের অবস্থান আঁচ করতে পেরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে সদরে আনার পথে বিজিবির ওপর হামলা করে আটককৃতদের ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে।

আটককৃত দুইজন হলেন- পানছড়ি উপজেলার সীমানা পাড়ার বাসিন্দা প্রদীপ চাকমার ছেলে আরোহী রিংটু চাকমা (২৭), সুমন্ত চাকমার ছেলে ধন রঞ্জন চাকমা (২৩)

বিজিবি সূত্রে জানা যায়, রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় দুই মোটরসাইকেল দুই আরোহীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেন ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার মো. মোফাজ্জল হোসেন। স্থানীয় তিনজন ইউপি সদস্য ও আটককৃতদের উপস্থিতিতে বস্তা থেকে মোট বার লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা দেখতে পান। আটককৃতরা টাকার উৎস ও মালিকানা সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদানে ব্যর্থ হলে স্থানীয় তিনজন ইউপি সদস্য উপস্থিতিতে সমূদয় অর্থের প্রতিটি নোটের নম্বর উল্লেখ পূর্বক একটি জব্দ তালিকা প্রস্তুত করেন। এবং উর্ধতন কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করেন।

পরে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতিতে আটককৃতদের পানছড়ি থানায় হস্তান্তর করার জন্য বিকালে আসার সময় পুজগাং বাজারে আসলে আগে থেকে লাঠিসোঠা নিয়ে প্রস্তুত থাকা ৫০০- ৬০০ জন উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা রাস্তায় গতিরোধ করে। বিজিবি সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়ে ধৃত আসামি এবং সমূদয় অর্থ ছিনিয়ে সন্ত্রাসী ব্যক্তিবর্গ পেট্রোল দিয়ে গাড়ি পুড়িয়ে দিতে উদ্যত হয় এবং মোট নয়জন বিজিবি সদস্যকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে আহত করে।

লোগাং জোন (৩ বিজিবি) পানছড়ি ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল এ কে এম আরিফুল ইসলাম পিএসসি জানান, উপস্থিত ব্যক্তিদের মারমুখী আচরণ সত্ত্বেও উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তিরা অতি নিকটে চলে আসায় অধিক সংখ্যক লোকজনের হতাহতের কথা বিবেচনা করে বিজিবি সদস্যরা অসামান্য ধৈর্য্য ও প্রজ্ঞার সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে থাকে। পবরর্তী সময়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি করে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়।

সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ি বিজিবি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, বিজিবিএম পিবিজিএম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাংবাদিক ও স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করেন।

ঘটনাস্থল থেকে একজন উপজাতীয় সন্ত্রাসীকে বিজিবি কর্তৃক আটক করা হয়। এ বিষয়ে নায়েব সুবেদার মো. মোফাজ্জল হোসেন বাদী হয়ে সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে পানছড়ি থানায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৫০০-৬০০ অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলতে চেষ্টা করলেও কেউ ভয়ে কিছু বলতে রাজি হয়নি।

তবে সন্ধ্যা ৬টায় পানছড়ি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো হারুন রশিদ বলেন, মামলা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামি আটকের প্রক্রিয়া চলমান আছে।