×

সারাদেশ

বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:৫৪ পিএম

বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু

চট্টগ্রামে সম্প্রীতির উৎসবে প্রধান অতিথি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। ছবি: ভোরের কাগজ

বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু

চট্টগ্রামে সম্প্রীতির উৎসবে প্রধান অতিথি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও অন্য অতিথিরা। ছবি: ভোরের কাগজ

স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট ও দায়িত্বশীল নাগরিক গঠনের মাধ্যমে একটি শান্তিপূর্ণ, সহনশীল ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ বির্নিমাণে প্রত্যয়ে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হলো সম্প্রীতির উৎসব।

রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমিতে দিনব্যাপী আয়োজনের মধ্যে দিয়ে এই সম্প্রীতির উৎসব উদযাপিত হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, কুপমুন্ডকতায় ভরা পূর্ব পাকিস্তানে বৈষম্যহীন অসাম্প্রদায়িক সমাজের বীজ রোপন করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি এক বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই সমাজ প্রতিষ্ঠা হতে দেয়নি প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি। শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, দেশে সাধারণ মূল্যবোধের মানুষ সংখ্যায় অনেক বেশি। তবে প্রতিক্রিয়াশীলরা সংগঠিত। কর্মজগতে নারীদের প্রবেশ ঠেকাতে অতিরক্ষণশীল মতবাদ তারা প্রচার করছে। এদের প্রচারণায় আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা প্রভাবিত হয়ে যায়। ৭৫’র পরে প্রতিক্রিয়াশীল সাম্প্রদায়িক অপশক্তি পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে।

শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, পার্বত্যবাসীর প্রতি দীর্ঘদিন যে অবিচার হয়েছিল, সে অন্যায়কারী গোষ্ঠী এখনো বেশ সক্রিয়। সামরিক শাসকরা সমতল থেকে বাঙালিদের জোর করে ধরে নিয়ে সেখানকার জনমিতি বদলে দিতে চেয়েছিল। তারা শান্তি চুক্তির দিনও এর বিরুদ্ধে কর্মসূচি দিয়েছিল। এ রকম জটিল মাত্রা ও সামাজিক রাজনৈতিক পরিস্থিততে আমাদের কাজ করতে হয়।

নওফেল বলেন, রাষ্ট্রের বিরোধীতকারীদের এখানে বছরের পর বছর পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়েছে। যারা বাংলাদেশের অস্তিত্বই স্বীকার করে না, তাদের নিয়ে দেশ চালানো অনেক কঠিন। বিভিন্ন অপশক্তিকে প্রশ্রয় দেয়ার প্রবণতা যা দেখছি, তা যেন ক্রমশ কমে আসে। আমাদের সংগ্রাম আমাদের মতই হবে। বাইরে থেকে যত কম হস্তক্ষেপ হবে ততই ভালো হবে।

বিশেষ অতিথি নরওয়ের রাষ্ট্রদূত স্পেন রিকটার এসভেনডসেন বলেন, অসাধারণ এক ধারণা সম্প্রীতির উৎসব। সম্প্রীতি ও সহনশীলতা এত সহজ নয়। ভিন্নতাকে মেনে নেয়া হলো সহনশীলতা, এটা কঠিন। অনুশীলনের মাধ্যমে তা অর্জন করতে হয়। ভিন্ন মত প্রকাশের জন্য সম্প্রীতি প্রয়োজন। শান্তি ও গণতন্ত্রের জন্য সম্প্রীতি প্রয়োজন। অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ থাকলে নানা বৈষম্য ও প্রতিহিংসা ছড়ানো বন্ধ করা সম্ভব। তারুণ্যের শক্তিই সবসময় এগিয়ে যেতে পারে এ কাজে।

[caption id="attachment_466355" align="aligncenter" width="1600"]বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু চট্টগ্রামে সম্প্রীতির উৎসবে প্রধান অতিথি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও অন্য অতিথিরা। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

বিশেষ অতিথি সংসদ সদস্য দীপঙ্কর তালুকদার লিখিত বক্তব্য অনুষ্ঠানে পাঠ করা হয়। এছাড়া বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, ইউনেস্কো’র অফিসার ইন-চার্জ সুসান ভাইজ, আইসিটি ডিভিশনের পিটিআইবি প্রকল্পের পরিচালক আবু সাঈদ। এর আগে জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে উৎসবের কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর উদ্বোধীন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের উপ-আবাসিক প্রতিনিধি সোনালি দয়ারাত্বে।

বক্তব্য রাখেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের গর্ভনিং বডির সদস্য নিরুপা দেওয়ান, ইন্সটিটিউট ফর ইনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইইডি)র নির্বাহী পরিচালক নুমান আহম্মদ খান, ইউনাইডটেড থিয়েটার ফর সোশাল অ্যাকশন (উৎস)’র নির্বাহী পরিচালক মোস্তফা কামাল যাত্রা। উৎসবের উদ্বোধনী পর্বের সমাপনী বক্তব্য রাখেন পিটিআইবি প্রকল্পের ব্যবস্থাপক রবার্ট স্টোলম্যান। উদ্বোধনী পর্বে চাকমাদের উবগীত, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের সঙ্গীত, মেয়েদের মার্শাল আর্ট, পাপেট শো এবং ট্রান্সজেন্ডার কমিউনিটির সদস্যদের গীতিনাট্য পরিবেশ করা হয়।

উৎসবের দ্বিতীয় পর্বে সহনশীলতার প্রতি ভাবনা শীর্ষক একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে স্মার্ট বাংলাদেশ, শান্তি, সম্প্রীতি ও সহনশীলতা কিভাবে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে সে সম্পর্কে তরুণদের মতামত নেয়া হয়। সমাপনী পর্বে নাটক- ‘সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ মঞ্চস্থ হয়। সঙ্গীত পরিবেশন করে ‘টঙের গান’ ও সাওতাল ব্যান্ড ‘আংরা’। দিনব্যাপী আয়োজনে আরও ছিল চিত্র প্রদর্শনী, পাপেট শো ও এম্পেথি গেম। বাংলাদেশে নরওয়ে দূতাবাস এবং আইসিটি বিভাগের সহায়তায় জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)’র ‘পার্টনারশিপ ফর এ মোর টলারেন্ট, ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ (পিটিআইবি)’ প্রকল্পের ‘ডাইভার্সিটি ফর পিস’ এটুআই- এসপায়ার টু ইনোভেট, ইউনেস্কো, একশনএইড বাংলাদেশ, ইন্সটিটিউট ফর ইনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইইডি), মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ), দি এশিয়া ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের (বিএনপিএস) যৌথ আয়োজনে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App