×

সারাদেশ

মধ্যনগরে প্রতি বর্ষায় এক-দেড় মাস ব্যাহত হয় পাঠদান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:২৭ পিএম

মধ্যনগরে প্রতি বর্ষায় এক-দেড় মাস ব্যাহত হয় পাঠদান

মধ্যনগরে প্রতি বর্ষায় এক-দেড় মাস ব্যাহত হয় পাঠদান। ছবি: মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার আলমপুর দোয়াদুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্বাভাবিক বর্ষার জলেই প্লাবিত হয়। এতে বর্ষায় ছয়মাসের মধ্যে কমপক্ষে এক থেকে দেড় মাস ব্যাহত হয় পাঠদান কার্যক্রম।

চলতি বছরের জুলাই মাসে কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতে বর্ষার পানি বৃদ্ধি পেয়ে স্বল্প মেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। এসময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি প্লাবিত হয়ে শ্রেণীকক্ষের ভিতরে একফুটের বেশি পানি ছিল। তখন বিদ্যালয়টিতে প্রায় ১০-১২ দিন পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ ছিল বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর অভিভাবক আজিজ আলম।

ওই বিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফারিয়া আক্তার জানায়, বর্ষাকালে বেশিরভাগ সময় বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে পানি প্লাবিত হওয়ায় আমরা ক্লাস করতে পারিনা।

তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর অভিভাবক ইকবাল হোসেন বলেন, আমাদের স্কুলটি এমনিতেই নিচু জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে । অতিবর্ষণে পানিতে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষও জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এমন অবস্থায় বর্ষা ছয়মাসের মধ্যে গড়ে এক-দেড় মাস বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হয়। তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয় নির্মাণ সংশ্লিষ্টদের উচিত ছিল বর্ষা কালীন পানির স্বাভাবিক লেভেল থেকে উঁচু করে ভবনটি নির্মাণ করা।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে , প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের "বিদ্যালয় বিহীন ১৫০০ গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন" শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ধর্মপাশা উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বিদ্যালয় ভবনটি নির্মাণ করে।

স্থানীয় শিক্ষানুরাগী সাবেক ইউপি সদস্য দোয়াদুর রহমানের দানকৃত ৩৩ (তেত্রিশ) শতক ভূমিতে বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। বিদ্যালয়টি নিচু জমিতে হওয়ায় প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম এলেই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হয়।

বর্তমানে বিদ্যালয়টি বর্ষার অবিরাম বর্ষণে জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এতে বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যাহত হয়। এমনকি বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার রাস্তাও নেই। এমন অবস্থায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বর্ষা মৌসুমে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া কষ্টকর হয়। নেই পানীয় জলের সুব্যবস্থা। বিদ্যালয়ের টয়লেট থাকলেও বর্ষার বেশিরভাগ সময় জলমগ্ন থাকে। বিদ্যালয় ভবনের সাথে টয়লেটের নেই সংযোগ রাস্তা। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের টয়লেট ব্যবহারে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আরব আলী শ্রেণিকক্ষ জলমগ্ন হয়ে পাঠদান ব্যাহত হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয় ভবনটি তুলনামূলক ভাবে নিচু হওয়ায় সাধারণ বর্ষায় জলমগ্ন হয়ে শ্রেণি কক্ষে ঢুকে পড়ায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান সম্ভব হয় না। বিকল্প পাঠদানেরও ব্যবস্থা নেই। প্রতিবছর বর্ষার মৌসুমে ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হয়।

বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, 'বিদ্যালয়ে দোতলা ভবন বিষয়ে এলজিইডির এক প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা হলে, তিনি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ১২০ জন পূর্ণ করে তাকে জানানো জন্য বলেন।'

উল্লেখ্য যে, বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত মোট ৯০ জন শিক্ষার্থী ও ৪ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন।

এ ব্যাপারে মধ্যনগর উপজেলায় অতিরিক্ত দ্বায়িত্বে থাকা ধর্মপাশা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মানবেন্দ্র দাস বলেন, বিষয়টি আমি অবগত আছি। বিদ্যালয় ভবনটি নিচু জমিতে হওয়ায় প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে অধিকাংশ সময় জলমগ্ন হয়ে দুর্ভোগের সৃষ্টি করছে। সেখানে বিদ্যালয়ে ভবনটি দোতলা করা ছাড়া স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার জন্য উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভায় উপস্থাপন করবো।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App