×

সারাদেশ

মুরাদনগরে ভুয়া ওয়ারিশ সনদ প্রদানের অভিযোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:৩৯ পিএম

মুরাদনগরে ভুয়া ওয়ারিশ সনদ প্রদানের অভিযোগ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার পূর্বধইর (পশ্চিম) ইউনিয়ন পরিষদ। ছবি: সংগৃহীত

জীবিত থেকেও কাগজ-কলমে পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত দুই বোন

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার পূর্বধইর (পশ্চিম) ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভুয়া ওয়ারিশ সনদপত্র প্রদানের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার নবীয়াবাদ গ্রামের মৃত আবদুস ছোবহানের ১০ জন ওয়ারিশের মধ্যে ২ জনকে বাদ দিয়ে ৮ জনের নামে একটি ভুয়া ওয়ারিশ সনদ প্রদান করেছেন পূর্বধইর (পশ্চিম) ইউপির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল রহিম পারভেছ।

অভিযোগকারী মৃত আবদুস ছোবহানের মেয়ে বাসনা বেগম ও শিউলি আক্তার তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আমাদের দুইজনকে ওয়ারিশ সনদ না দেয়ায় তার পিতার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

দুই বোন আরও উল্লেখ করেন, আমার পিতা আবদুস ছোবহান মারা যাওয়ার সময় তিন ছেলে, ছয় মেয়ে ও স্ত্রী রেখে যান। ইউপি চেয়ারম্যান আমাদের দুইজন ওয়ারিশকে বাদ দিয়ে গত ৪ জুন ওয়ারিশ সনদপত্রটি প্রধান করেন। তার রেখে যাওয়া সমুদয় স্থায়ী, অস্থায়ী সম্পত্তি আমার বড় ভাই শাহআলম, শাহজাহান, মিজানুরসহ বোনেরা জোরপূর্বক ভোগ দখল করছে। বর্তমান পূর্বধইর পশ্চিম ইউপি চেয়ারম্যান ও ৯ নং ওয়ার্ড মেম্বারের যৌথ স্বাক্ষরে আমার বোন শিউলি আক্তার ও আমি বাসনা বেগমকে বাদ দিয়ে বড় অংকের উৎকোচ বাণিজ্যের বিনিময়ে একটি ভুয়া সনদ আমার মা, তিন ভাই ও চার বোনকে প্রদান করে। আমরা ওয়ারিশ সনদের জন্য চেয়ারম্যান ও মেম্বারের কাছে অনেক ঘুরাঘুরি করলেও আমাদেরকে কোন ওয়ারিশ সনদ দেই নাই। বিষয়টি নিয়ে আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছি।

জানা যায়, নির্বাচন কমিশন প্রদত্ত জাতীয় পরিচয়পত্রে তাদের পিতা মৃত আবদুস ছোবহান। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান যাচাই-বাছাই না করে দুইবোনকে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তির ওয়ারিশ থেকে বঞ্চিত রেখে সনদ দেয়ার বিষয়টি রহস্যজনক।

এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ বলেন, মৃত ব‍্যক্তির যতজন সন্তান আছে ওয়ারিশ সনদে সকলের নাম আসবে। অন‍্যথায় ওয়ারিশ সনদ থেকে বাদ দেয়া সম্পূর্ণ অনৈতিক কাজ। ভুক্তভোগী ওয়ারিশরা আদালতে মামলা করতে পারবে।

পূর্বধইর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সফিকুল ইসলাম বলেন, অনেকদিন আমি বিদেশ ছিলাম। গ্রামের অনেকের সাথে আমার পরিচয় কম থাকায় ওয়ারিশ সনদে সুপারিশ করাটা আমার ভুল ছিল। আমার ওয়ার্ডের লোক এসে আটজনের নাম দিয়ে ওয়ারিশ সনদ চাইছে তারা যে ওয়ারিশদার দশজন আছে তা আমার জানা নাই।

পূর্বধইর পশ্চিম ইউপি'র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল রহিম পারভেছ বলেন, সকল ওয়ার্ড মেম্বাররা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নিজ নিজ দায়িত্বে ওয়ারিশ সনদপত্রের আবেদন নিয়ে তদন্ত করেন। আমার ইউনিয়নের কোন ওয়ার্ডে গিয়ে যাচাই বাছাই করা আমার পক্ষে সম্ভব হয় না বলে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন পেলে আমি ওয়ারিশ সনদ প্রধান করি। আমি পরস্পর শুনেছি ৯নং ওয়ার্ডের সফিকুল ইসলাম মেম্বার উৎকোচ বাণিজ্যের মাধ্যমে তথ‍্য গোপন করে আমাকে হয়রানি করার জন‍্য এই ওয়ারিশ সনদটি প্রধান করেছেন। মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলাউদ্দিন ভূঁইয়া জনি বলেন, সঠিক প্রক্রিয়ায় ওয়ারিশ সনদ না দেয়ার কারণে পূর্বধইর পশ্চিম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল রহিমের বিরুদ্ধে আমার দপ্তরে একটি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা সঠিকভাবে ওয়ারিশ সনদ না পেলে উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী ওয়ারিশরা তাদের প্রাপ্যতা থেকে বঞ্চিত হয়। আমি এই অভিযোগটি সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে প্রেরণ করেছি সঠিক তদন্ত প্রেরণ করার জন‍্য। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App