×

সারাদেশ

পার্বতীপুরে ছয় মাসে সোয়া কোটি টাকার রেলের মালামাল চুরি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:০২ পিএম

পার্বতীপুরে ছয় মাসে সোয়া কোটি টাকার রেলের মালামাল চুরি

পার্বতীপুরে ছয় মাসে সোয়া কোটি টাকার রেলের মালামাল চুরি। প্রতীকী ছবি

পার্বতীপুরে ছয় মাসে সোয়া কোটি টাকার রেলের মালামাল চুরি

পার্বতীপুরে ছয় মাসে সোয়া কোটি টাকার রেলের মালামাল চুরি। ছবি: মোস্তাফিজুর রহমান বকুল, পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ছয়মাসে সোয়া কোটি টাকার রেললাইনসহ অন্যান্য মালামাল চুরি হয়ে যাওয়ায় অবশেষে রেলওয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী নড়েচড়ে বসেছে। বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার (৭ সেপ্টেম্বর) দিকে পার্বতীপুর রেল স্টেশন সংলগ্ন বাফার গোডাউন (আপদকালীন ইউরিয়া সার মজুদের গোডাউন) কম্পাউন্ডে এ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন সাইজের ১৭ পিস (প্রায় ১৫০ ফুট) রেললাইন, রেললাইন কাটার কাজে ব্যবহৃত একটি এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার, দুটি অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ চার ব্যক্তিকে আটক করেছে জিআরপি পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।

আটককৃতরা হলো- পার্বতীপুর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের সিংগীমারী দরিখামার গ্রামের মোকছেদ আলীর ছেলে রাকিবুল ইসলাম রাব্বি (২১) একই গ্রামের মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে তরিকুল ইসলাম (২৩), চন্ডিপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের গোলাম রব্বানীর ছেলে জান্নাতুল ফেরদৌস(২৮) এবং নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার পুরাতন বাবুপাড়া মিল্লার মনতাজ হোসেনের ছেলে মো. ইমতিয়াজ (৪০)।

জানা গেছে, এক সময় পার্বতীপুর রেল স্টেশন থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে শহরের রোস্তমনগরে এলএসডি গোডাউনে খাদ্যশষ্য সরবরাহের জন্য মিটারগেজ লাইন স্থাপন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সড়ক পথে খাদ্যশষ্য সরবরাহ পরিবহন শুরু হলে ওই রেলপথটি পরিত্যক্ত হয়। এরপর ওই এলাকায় আপদকালীন ইউরিয়া সার মজুদের জন্য গুদাম (বাফার গোডাউন) নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ওই রেলপথের পরিত্যক্ত রেললাইন বাফার গোডাউন কম্পাউন্ডের ভিতরে থেকে যায়। মাটির নিচে দেবে যাওয়া এসব রেললাইন প্রথমে এস্কেভেটরে মাটি সরিয়ে উপরে উঠানো হয়। এরপর গ্যাস দিয়ে কেটে টুকরো টুকরো করা হয়।

অভিযানে উপস্থিত রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) পার্বতীপুর কার্যালয়ের পরিদর্শক মো. আহসান হাবিব জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পার্বতীপুর রেলওয়ে থানার (জিআরপি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুল ইসলামসহ একদল জিআরপি পুলিশ ও আরএনবি সদস্যরা এ অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় রেলওয়ের এসএসএই (পথ-পিডাব্লিউআই) আল আমিন ও এসএসএই (কার্য্য-আই ডাব্লিউ) মো. রাজা আলী উপস্থিত ছিলেন। পার্বতীপুর জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম জানান, আটককৃত চারজনের নামে থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।

উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে পার্বতীপুর-মধ্যপাড়া ৩৯.৫ কিলোমিটার রেলপথের ৮০০ মিটার দূরত্বের ১৯৮টি রেললাইন চুরি হয়। ৪২ ফুট দৈর্ঘ্যের প্রতিটি রেললাইনের ওজন গড়ে ৫০০ কেজি। এ ছাড়াও ৩ হাজার ৩৩৪টি ফিসপ্লেট , ২০৯টি কাঠের স্লিপার, ২ হাজার ৭০০ পিস ডক স্পাইক ও নাটবোল্ট চুরি হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে ওজন আনুমানিক ১২৫ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক মূল্য সোয়া কোটি টাকা। জনবল সংকোট ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনার অভাবে হরহামেশাই চুরির ঘটনা ঘটছে। বিভিন্ন সময় চুরির ঘটনায় পার্বতীপুর রেলওয়ে থানায় এ পর্যন্ত ১০টির মতো মামলা হয়েছে। কিন্তু চিহ্নিত চোর চক্রের সদস্যরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও রহস্যজনক কারণে পুলিশ (জিআরপি) নিরব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App