×

সারাদেশ

সৌদি গিয়ে ৪ মাস ধরে নিখোঁজ বাবুগঞ্জের ছালাম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৩৮ পিএম

সৌদি গিয়ে ৪ মাস ধরে নিখোঁজ বাবুগঞ্জের ছালাম

সৌদি গিয়ে ৪ মাস ধরে নিখোঁজ বাবুগঞ্জের ছালাম

পাঁচ লাখ টাকা চুক্তিতে সৌদি আরব গিয়ে গত ৪ মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছেন বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের পূর্ব কেদারপুর গ্রামের মৃত মোসলেম হাওলাদারের ছেলে মো. ছালাম হাওলাদার (৩৫)।

তিনি জীবিত আছেন না মারা গেছেন তার কোন সন্ধান পাচ্ছেন না ছালামের পরিবার। তাকে সৌদি পাঠাতে তার পরিবারের প্রায় ৭ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আর তার পরিবারকে পুরো টাকটাই দিতে হয়েছে ঋণ এবং ধার করে।

পুরো ঘটনাটা জানতে চাইলে নিখোঁজ ছালামের স্ত্রী বৃষ্টি আক্তার বলেন, ছালাম ঢাকাতে সেনেটারীর কাজ করতেন। এতে তাদের সংসার মোটামুটি ভালোই চলছিলো। হঠাৎ সবুজ নামে তার এক বন্ধুর কাছে জানতে পারেন জুয়েল নামে এক লোক সৌদি আরব লোক পাঠাচ্ছেন। সে মোতাবেক জুয়েলের সাথে ছালামের  যোগাযোগ শেষে কথা হয়। ৫ লাখ টাকায় সৌদি আরব নিয়ে বাংলাদেশী টাকার ৪৫ হাজর টাকা বেতনে কোম্পানির কাজ দিবেন বলে মৌখিক চুক্তি হয় ২০২২সালে। চুক্তি অনুযায়ী ৫ লাখ টাকার মধ্যে ভিসা, আকামা এবং  থাকা কোম্পানি বহন করবে। জুয়েল কালকিনি থানার রমজানপুর ইউনিয়নের চর পালোরদী গ্রামের আ. হাকিম পেয়াদার ছেলে। পেশায় জুয়েল আদম ব্যবসায়ী এবং দালাল। কথা শেষে তিন মাসের মধ্যে জুয়েল ছালামকে সৌদি আরব পাঠায়।

সেখানে পৌঁছার কিছু দিন পরে জুয়েল আকামা তৈরির জন্য ছালামকে চাপে রেখে আরো ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা আদায় করেন আর ওই টাকার পুরোটাই বাড়ি থেকে দেয়া হয়েছে। ছালামের সাথে কোম্পানির কাজের কথা উল্লেখ থাকলেও তাকে ভবন নির্মাণ (কনস্ট্রাকশন) কাজের শ্রমিক হিসেবে কাজ দেয়া হয়, তাও নিয়মিত নয়।

কোন মাসে ১৫ দিন কোন মাসে ১০ দিন কিংবা ১ সপ্তাহ এমনি করে ৩/৪ মাস কাজ করে ছালাম। বাড়িতে নিয়মিত যোগাযোগ হতো এবং উপার্জনের উপর ভিত্তি করে মাঝে মাঝে কিছু টাকাও পাঠাতো। ছালাম জুয়েলকে কোম্পানির কাজের কথা বললে আশা দিয়ে শুধু টালবাহানা করতো। এমনি করে চলতে থাকে সৌদি প্রবাসী ছালামের প্রবাস জীবন।

ছালামের স্ত্রী জানান, চলতি বছরের মে মাসের ২৬ তারিখ তার সাথে শেষ কথা হয়েছিলো। তার পর থেকে ছালামের সাথে তার পরিবারের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। হঠাৎ একদিন জুয়েল ছালামের স্ত্রী বৃষ্টি আক্তারকে ফোন করে বলেন, ছালাম গুরুতর অসুস্থ এবং তিনি হাসপাতালে আই সি ইউতে ভর্তি আছেন। সে মর্মে জুন মাসের ১২ তারিখ এবং আগস্ট মাসের ৮ তারিখ দুটি ভিডিও চিত্র পাঠান ছালামের চাচাতো ভাই রিয়াজের ইমু নাম্বারে। তার পর থেকে জুয়েলকেও আর মোবাইলে পাওয়া যাচ্ছে না এবং তিনি কোন তথ্যও জানাচ্ছেন না।

আসলে ছালামের জীবনে কি ঘটেছে, তিনি বেঁচে আছেন কি না - তাও বলতে পারছেন না তার পরিবারের কেউ। নিরুপায় হয়ে অনেক কষ্টে ছালামের পরিবার জুয়েল এর গ্রামের বাড়ির ঠিকানা সংগ্রহ করে তার বাড়িতে যান। সেখানে গেলে জুয়েলের পরিবারের কেউ কিছু জানেন না মর্মে জুয়েলের অবস্থানের ঠিকানা দিতেও অপারগতা প্রকাশ করেন।

এদিকে ছালাম ৪ সন্তানের জনক  ছালামের কোন সংবাদ কিংবা সন্ধান না পেয়ে অর্ধাহারে, অনাহারে, চিন্তায় এবং আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তার পরিবার। তারা ছালামের সন্ধান চান অথবা দেশে ফেরত পেতে চান।

এব্যপারে দালাল জুয়েলের সাথে তার মুঠো ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App