×

সারাদেশ

হ্যান্ডকাপ পরিয়ে রাজমিস্ত্রীকে অপহরণ, পুলিশ কনস্টেবলসহ গ্রেপ্তার ৪

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:২৮ পিএম

হ্যান্ডকাপ পরিয়ে রাজমিস্ত্রীকে অপহরণ, পুলিশ কনস্টেবলসহ গ্রেপ্তার ৪

হ্যান্ডকাপ পরিয়ে রাজমিস্ত্রীকে অপহরণ, পুলিশ কনস্টেবলসহ গ্রেপ্তার ৪ জনের মধ্যে তিন জন। ছবি: শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে রাজমিস্ত্রিকে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে অপহরণের ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবলসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় অপহরণের কাজে ব্যবহৃত দুটি মোটরসাইকেল, হ্যান্ডকাপ ও স্প্রিংয়ের লাঠি উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে উপজেলার ফুলকুচি এলাকা থেকে মো. সুজনকে (২০) পুলিশ পরিচয়ে ৬ যুবক মিলে তুলে নেয়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজমিস্ত্রি সুজন ওই এলাকার হৃদয় মার্কেটের সামনে কোমলপানীয় পান করার সময় দুইটি মোটরসাইকেলে করে ৬ যুবক এসে তার কাছে মাদক আছে বলে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে নিয়ে যায়। পরে তাকে রাঢ়ীখাল এলাকার নির্জন স্থানে এবং বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ের ছনবাড়ি ফ্লাইওভারের নিচে এনে বাড়ি থেকে মুক্তিপণ এনে দিতে বলে।

এ সময় সুজন জানায়, ষোল দিন আগে তার বাবা মারা গেছেন এবং মা পিঠা বিক্রি করে সংসার চালান। এমন অবস্থায় সে টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এতে অপহরণকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে সুজনকে বেদম প্রহার করে। রাত ৯টার দিকে অপহরণকারীরা সুজনের মায়ের কাছে ফোন দিয়ে ত্রিশ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। সুজনের মা আনোয়ারা বেগম তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়দের পরামর্শে বিষয়টি শ্রীনগর থানা পুলিশকে অবহিত করেন।

পুলিশের পরামর্শে আনোয়ারা বেগম টাকা নেয়ার জন্য অপহরণকারীদেরকে সমষপুর এলাকায় তাদের বাড়ির সামনে আসতে বলেন। বেশ কয়েকবার তালবাহানা করে রাত সাড়ে ১১টার দিকে একটি এ্যাপাচি মোটরসাইকেল (ঢাকা মেট্রো ল ৪০-১৩৫৭) নিয়ে টাকা নিতে পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মণপাইকসা মসজিদের সামনে আসলে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা শ্রীনগর থানা পুলিশ শ্রীনগর উপজেলার উত্তর কামারগাঁও গ্রামের আক্তার খানের ছেলে ফয়সাল খান (২৩), দামলা গ্রামের শেখ খলিলের ছেলে আরিফ হোসেন (২০), মাহি শেখের ছেলে মুজিবুর রহমান শাফিনকে আটক করে।

পুলিশ তাদেরকে সাথে নিয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ছনবাড়ি এলাকায় আসলে লিয়াকত হোসেন লিমন ও আরিফ মির্জাসহ অজ্ঞাত আরও একজন পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সুজনের হাত থেকে হ্যান্ডকাপ খুলে নিয়ে পালিয়ে যায়। এর পরপরই শ্রীনগর থানা পুলিশ রাতভর অভিযান নামে। একপর্যায়ে দোহার ও শ্রীনগর থানা পুলিশ দোহার উপজেলার নিকরা গ্রামের নজরুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালায়।

এ সময় নজরুল ইসলামের বিল্ডিংয়ের একটি কক্ষ থেকে লিয়াকত হোসেন লিমনকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে একটি বিপি লেখা হ্যান্ড কাপ, স্প্রিংয়ের লাঠি ও অপহরণের কাজে ব্যবহৃত ইয়ামাহা এফজেড মোটরসাইকেল (ঢাকা মেট্রো ল ২৪-৯৯০৩) মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

লিমন ওই গ্রামের নজরুল ইসলামেরই ছেলে। সে মুন্সীগঞ্জের টংগীবাড়ী থানার কুন্ডেরবাজার ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল হিসাবে কর্মরত বলে জানা গেছে। তার কনস্টেবল নম্বর ১১৬৩। অপর আসামি আরিফ মির্জাসহ আরো একজন পলাতক রয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা জানায়, লিমনের নেতৃত্বে তারা শ্রীনগর উপজেলা ও আশপাশের এলাকায় পুলিশের বিভিন্ন সরঞ্জাম ব্যবহার করে জনসাধারণকে অটক ও অপহরণ করে মুক্তিপন আদায় করে আসছিল। পলাতক আরিফ মির্জা উপজেলার ভাগ্যকুল মান্দ্র গ্রামের দুলাল সর্দারের ছেলে।

শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল তায়েবীর জানান, ৬ জনের বিরুদ্ধে শ্রীনগর থানায় অপহরণ মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে মুন্সীগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App