×

সারাদেশ

আব্দুল জব্বারের বর্ণাঢ্য জীবন তরুণদের দেশপ্রেমে উৎসাহিত করবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৩, ১১:৩৬ পিএম

আব্দুল জব্বারের বর্ণাঢ্য জীবন তরুণদের দেশপ্রেমে উৎসাহিত করবে

ফাইল ছবি

আব্দুল জব্বারের বর্ণাঢ্য জীবন তরুণদের দেশপ্রেমে উৎসাহিত করবে

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার মাটি ও মানুষের নেতা ভাষা সৈনিক প্রয়াত আব্দুল জব্বারের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অভিজ্ঞ পালার্মেন্টারিয়ান আব্দুল জব্বারের বণার্ঢ্য কর্মময় জীবন তরুণ প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উৎসাহিত করবে। তিনি বলেন, আব্দুল জব্বারকে জাতির পিতা বিশেষ স্নেহ করতেন ও ভালোবাসতেন তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণীত হয়ে রাজনীতি ও মানবসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। অন্যায়-অবিচার, নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে জীবন বাজি রেখে সংগ্রাম করেছেন। তার ব্যক্তিত্ব, প্রজ্ঞা, সততা ও দেশপ্রেম সবাইকে অনুপ্রাণিত করে।

আব্দুল জব্বারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনও। প্রয়াত আব্দুল জব্বারের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে ২৮ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, আব্দুল জব্বার গণতন্ত্র, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে এবং নেতাকমীর্দের ওপর নির্যাতন নিপীড়নের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী, মহামান্য রাষ্ট্রপতি মহোদয়ের বাণী থেকে ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর প্রাক্তন জাতীয় সংসদ সদস্য, কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষা সৈনিক মরহুম আব্দুল জব্বারের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন এই প্রজন্মের তরুণ রাজনীতিক নেতাদের জন্য এক জীবন্ত পাঠশালা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে যারা আজীবন বাংলার গণমানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করেছন প্রয়াত আব্দুল জব্বার তাদের অন্যতম। আব্দুল জব্বার ছিলেন একজন অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান ও অনন্য ব্যক্তিত্বের অধিকারী। তার জীবনাচরণ ছিল অনুকরণীয়। তিনি ১৯৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬-এর ছয় দফা, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০-এর নির্বাচন, ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনসহ গণতান্ত্রিক সব আন্দোলনে তিঁনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি ছিলেন। এছাড়া তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি, ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি (ঘাদানিক) ও রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তার গৌরবোজ্জ্বল অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২০ সালে তাকে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। আব্দুল জব্বার ১৯৬২ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি প্রভাত ফেরী, প্লেকার্ড প্রদর্শন করার জন্য তদানীন্তন পাকিস্তান সরকার তাকে গ্রেপ্তার করে। একই সঙ্গে তিনি ‘৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলনে জোরালো ভূমিকা পালন করেন। পাকিস্তান সরকারের নির্যাতন ও গ্রেপ্তারের ভয় উপেক্ষা করে ১৯৬৪ সালে তিনি কুলাউড়া শহরে দেশপ্রেমিকদের নিয়ে প্রথম শহীদ মিনার স্থাপন করেন।

১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ১৭ আগস্ট কুলাউড়া শহরে প্রতিবাদ সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল ও গায়েবানা জানাজার আয়োজন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জেলহাজতে তাকে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যারও পরিকল্পনা করা হয়। সেইবার তিনি রক্ষা পেলেও পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রকাশ্যে করায় আবারো তাকে জেলে যেতে হয়। রাজনৈতিক কারনে তিনি বারবার জেল খাটেন।

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী এই নেতাকে তার এলাকার মানুষ কোন দিন ভুলবে না। বর্তমানে পিতার আদর্শকে লালন করে তার সুযোগ্য সন্তানরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা রূপান্তরে কাজ করে চলছেন। তার ছোট ছেলে আ স ম কামরুল ইসলাম কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এর আগে তিনি কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। মরহুম আব্দুল জব্বারের বড় ছেলে মোহাম্মাদ আবু জাফর রাজু প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-২-এর দায়িত্বে রয়েছেন।

দুই ভাইও বাবার মতো এলাকার মানুষের সঙ্গে হৃদ্যতা রেখে কাজ করে চলছেন। দুই ভাই মিলে এলাকায় অসংখ্য উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন।

গত ২৭ আগস্ট কুলাউড়া জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে আব্দুল জব্বার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আব্দুল জব্বারের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকীর আয়োজন করা হয় । যেখানে হাজারো মানুষের ঢল নামে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো. মাহবুব আলী।

আব্দুল জব্বারের বড় ছেলে মোহাম্মাদ আবু জাফর রাজুর সভাপতিত্বে ও কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসম কামরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সিলেট, মৌলভীবাজার ও কুলাউড়া উপজেলার শতাধিক নেতারাসহ সহস্রাধিক গুণগ্রাহী উপস্থিত ছিলেন।

এসময় বক্তারা বলেন, আব্দুল জব্বার তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে নিজের জীবনের সব সাধ-আহ্লাদ ত্যাগ করে মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। তিনি কুলাউড়া, মৌলভীবাজার তথা দেশের ত্যাগী ও ভালো কাজের ইতিহাস।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App