×

সারাদেশ

মাছের ঘেরের আইলে অফসিজনে তরমুজ চাষে সাফল্য

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২৩, ০৫:৫৫ পিএম

মাছের ঘেরের আইলে অফসিজনে তরমুজ চাষে সাফল্য

ছবি: ভোরের কাগজ

মাছের ঘেরের আইলে অফসিজনে তরমুজ চাষে সাফল্য

ছবি: ভোরের কাগজ

আশাশুনিতে মাছের ঘেরের আইলে পতিত জমিতে অফসিজনে তরমুজ চাষ করে সফল হয়েছেন চাষী মহররম সরদার। বুধহাটা গ্রামের মৃত ছোরমান সরদারের ছেলে মহররম তরমুজ চাষ করে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনে সক্ষম হওয়ায় খুবই আনন্দ বোধ করছেন। তার সফলতায় এলাকার চাষীরা তরমুজ চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

উপজেলার বুধহাটা গ্রামের মহররম সরদার তার ৬ বিঘা জমিতে সাদা মাছের চাষ করে আসছেন। মাছ চাষের পাশাপাশি ধানের মৌসুমে ধান আবাদ করে থাকেন। অফসিজনে পতিত জমি (মাছের ঘেরের আইলে) তরমুজ চাষ করলে বাড়তি আয় হবে, এমন পরামর্শ ও চাষে উদ্বুদ্ধ করেন, উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা। মহররম তরমুজ চাষে আগ্রহী হলে তাকে ক্লাইমেট স্মার্ট প্রকল্পের মাধ্যমে খুলনা কৃষি অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের আওতায় সহায়তা প্রদান করা হয়। তাকে অফসিজন বিগ ফ্যামিলি জাতের তরমুজ বীজ সরবরাহ করা হয়। কৃষি বিভাগের উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ এসএম এনামুল ইসলাম ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের পরামর্শে মহররম তরমুজ চাষ শুরু করেন। এরপর থেকে তাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে থাকেন কর্মকর্তারা। চাষী মহররম মাছ ও ধান চাষে যেমন মনোনিবেশ করে থাকেন, তেমনি তরমুজ চাষেও নিয়মিত পরিচর্চা করতে থাকেন। আস্তে আস্তে ক্ষেতে গাছের ব্যপ্তি ঘটতে থাকে। সবুজে ভরে ওঠে ঘেরের আইল জুড়ে। মাচা বা নেট জাল দিয়ে গাছের সুন্দর অবস্থানের ব্যবস্থা করা হয়।

চাষী মহররম সরদার জানান, দিনে দিনে তরমুজ গাছের চেহারা জ্বলজ্বল করতে থাকে। আস্তে আস্তে ফুল আসে। এরপর তরমুজ ধরতে লাগলো। মনের মধ্যে অনেক চিন্তা এবং আনন্দ দোল খাচ্ছিল। তরমুজ দিনে দিনে বাড়তে থাকে। একসময় অনেক বড় হয়ে ওঠে। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ মতে ৭১ দিনের মাথায় প্রথমবার তরমুজ উঠালাম। প্রত্যেকটা তরমুজের ওজন ৭ কেজি থেকে সাড়ে ৯ কেজি করে হয়েছে। ১ম দিনে ২৬০ কেজি তরমুজ বিক্রয় করি। প্রতি মন তরমুজের মূল্য পেয়েছি ১ হাজার ৮ শত টাকা করে। প্রথম দিনে ১১ হাজার ৭০০ টাকার তরমুজ বিক্রয় হয়েছে।

[caption id="attachment_459491" align="aligncenter" width="699"] ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

চাষী মহররম আরও জানান, তার তরমুজ চাষে সর্বসাকুল্যে খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকা। প্রথম দিনেই খরচের টাকা উঠে এসেছে। এখনো তরমুজ উঠানো হচ্ছে। আগামী ৩ মাসে কমপক্ষে ৩ বার অনেকগুলো করে তরমুজ উঠানো সম্ভব হবে। আল্লাহ চাইলে অসময়ে পতিত জমিতে তরমুজ চাষের মাধ্যমে অনেক টাকা লাভ করতে পারবো। উপজেলা কৃষি কৃষি অফিসার কৃষিবিদ এস এম এনামুল ইসলাম জানান, এ অঞ্চলের মাটি তরমুজ চাষের জন্য উপযোগী। চাষি মহররমসহ উপজেলার কুল্যা, বড়দল ও বুধহাটা ইউনিয়নে অফ সিজনে তরমুজ চাষ হয়েছে। তাদেরকে বীজ ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ, সহযোগিতা দেয়া হয়েছে। চাষিরা তরমুজ চাষের পাশাপাশি অন্যান্য সবজি চাষও করে থাকেন। এভাবে চাষীদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে পারলে এলাকার সকল পতিত জমিতে চাষাবাদের মাধ্যমে চাষীদেরকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা যাবে। সরকারী বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠান অর্থিক সহযোগিতা করলে আরো অনেক চাষী পতিত জমিতে চাষাবাদ ও অফসিজনে চাষাবাদের মাধ্যমে এলাকাকে সবুজে ভরে তুলতে সক্ষম হবে বলে তিনি আশাবাদী।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App