×

সারাদেশ

জলবায়ু পরিবর্তনের গতি থেকে দ্রুতগতিতে সমাধান বের করতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২৩, ০৯:৫২ পিএম

জলবায়ু পরিবর্তনের গতি থেকে দ্রুতগতিতে সমাধান বের করতে হবে

ঘাসফুল আয়োজিত পরিবেশ সংক্রান্ত সেমিনারে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রীর পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী। ছবি: ভোরের কাগজ

চট্টগ্রামের সব সাংসদদেরকে নিয়ে চট্টগ্রামের বিরাজমান সংকট ও সমস্যাগুলো নিয়ে একটি সমন্বয় সভা প্রয়োজন। আমাদের সংবিধান সংশোধনী; ৮/ক-তে পরিবেশের নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সুতরাং এ বিষয়ে অবহেলা করে উন্নয়ন পরিকল্পনা করার সুযোগ নেই। তাপমাত্রা এমনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে আমাদের সচেতন না হয়ে উপায় নেই। আমরা বারবার প্রকৃতিকে আঘাত করছি, প্রকৃতি প্রতিশোধ নেবে না- তা তো ভাবা যায় না। সুতরাং আজকের উন্নত বিশ্ব প্রকৃতির বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে তার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা জরুরি। জলবায়ু পরিবর্তন স্থির নয়, ক্রমপরিবর্তনশীল। জলবায়ু পরিবর্তনের যে গতি, তার থেকে দ্রুতগতিতে আমাদের সমাধানের পথ বের করতে হবে।

শনিবার (১৯ আগস্ট) বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ঘাসফুল আয়োজিত বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন:আমাদের প্রস্তুতি শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধানমন্ত্রীর পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব অভিমত ব্যক্ত করেন। ঘাসফুল’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) উপ-উপাচার্য (প্রো-ভিসি) প্রফেসর ড. খোন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন।

ঘাসফুল চেয়ারম্যান ড. মনজুর-উল-আমিন চৌধুরী’র সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে আলোচনায় অংশ নেন সাবেক মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, এডিবির রিসোর্সপারসন ও সাবেক সচিব সুলতানা আফরোজ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর (অব.) ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী, বুয়েট, পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ড. এ কে এম সাইফুল ইসলাম, বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও পিকেএসএফের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি ছাদেক আহমাদ, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের চেয়ারম্যান স্থপতি আশিক ইমরান, ফোরাম ফর প্ল্যান্ড চট্টগ্রামের সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সুভাষ চন্দ্র বড়ুয়া, পরিবেশ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ফেরদৌস আনোয়ার, কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায়, চট্টগ্রাম বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এর উপপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ড. মো. ছাদেকুল আলম প্রমুখ।

আলোচকরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কারণে বাংলাদেশ সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বাজেটে জলবায়ু বরাদ্দ বাড়াতে হবে, সামাজিক নিরাপত্তা, জলবায়ু সহনশীল কৃষি, জীবাশ্ম জ্বালানি কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, খালখনন, পাহাড় কাটা রোধ, বর্জ্য ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রয়োজন।

রাইটস-টু-এনভায়রনমেন্ট বাদ দিয়ে রাইটস-টু-ডেভেলপমেন্ট সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। উন্নত বিশ্বের অপরিনামদর্শী উন্নয়ন ভাবনার কারণে আজকে ক্লাইমেট জাস্টিস বিঘ্নিত হচ্ছে। অকৃষি কাজে কৃষিজমি ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। উন্নয়নের মডেল হবে স্থায়ী। সব উন্নয়ন পরিকল্পনায় নিরপেক্ষ এনভারমেন্টাল অ্যাসেসমেন্ট জরুরী প্রয়োজন। পৃথিবীতে ২৫ শতাংশ মানুষ পানি সংকটে আছে। পানির কারণে রাজনৈতিক সহিংসতা দেখা যেতে পারে। শুধু নগর জলাবদ্ধতা নয় গ্রামাঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিয়েও আমাদের পরিকল্পনা করা জরুরি। ক্লাইমেট রেসিলিয়ান্ট টেকনোলজি ইউজ করে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) বাস্তবায়ন করতে হবে।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে প্রফেসর ড. খোন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন খুবই স্বাভাবিক বিষয়, এখানে ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় আমাদের কাজ করতে হবে। নগরায়ন বৃদ্ধি ও কার্বন নিঃসরণ বাড়ছে, পাহাড়, বন ধ্বংস করা হয়েছে, তাপমাত্রা বাড়ছে, ঋতু পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে, দুর্যোগ বাড়ছে, কৃষিতে সমস্যা হচ্ছে। আমাদের ক্লাইমেট নিউট্র্রাল ইকোনমি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন ওয়ার্ক এনভায়রনমেন্ট তৈরিতে মনোযোগ দিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন ও আমাদের নাজুকতা উল্লেখযোগ্য।

ঘাসফুল চেয়ারম্যান ড. মনজুর-উল-আমিন চৌধুরী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে হালদা নদীতে লবণাক্ততা বেড়ে ৮ পিপিটি হয়েছে। উত্তরবঙ্গে নারীদের প্রজননস্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত মোকাবেলায় বাজেটে বরাদ্দ বাড়াতে হবে ও এক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, সুশীল সমাজসহ অন্যান্য বৃহৎ স্টেকহোল্ডারদের সম্পৃক্ত করা উচিত।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App