×

সারাদেশ

কাকনহাট পুলিশ ফাঁড়ির বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৩, ০৯:৫০ পিএম

কাকনহাট পুলিশ ফাঁড়ির বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ

কাকনহাট পুলিশ ফাঁড়ির বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জালাল মেম্বারের মেয়ে হালিমা খাতুন। ছবি: কাগজ প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানার কাকনহাট পুলিশ ফাঁড়ির কিছু পুলিশ সদস্য ও বিপদগামী কয়েকজন ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শন, বাসাবাড়ির আসবাবপত্র ভাংচুর, কারণ ব্যতিরেকেই দুটো মোটরসাইকেল জব্দ করাসহ উঠেছে নানা অভিযোগ।

উপজেলার পাকড়ি ইউনিয়নের মোসড়াপাড়া গ্রামের ভুক্তভোগী ওই পরিবার বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে নিজ বাড়িতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অভিযোগগুলো তুলে ধরেন।

চলতি বছরের ১০ জুন পাকড়ি ইউনিয়নে ইয়াজপুর গ্রামে জমির বিরোধে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে চলমান এই সমস্যা বিদ্যমান থাকায় বৃদ্ধ নাজিমুদ্দিনের (৮৭) পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান।

ওই দিন সংঘর্ষে যারা নিহত হয়েছিলেন তারা হলেন- রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানার ভাটাপাড়া এলাকার জিল্লুর রহমানের ছেলে সোহেল রানা ছোটন (৪৫), গোদাগাড়ীর বড়গাছী কানুপাড়া গ্রামের মৃত আলিমুদ্দিনের ছেলে মেহের আলী (৬৫) এবং তার বড় ভাই নাইমুল (৭০)। এতে হত্যা মামলায় ২১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৫০ জনকে আসামি করে নিহত সোহেল রানার ছোট ভাই হৃদয় বাদী হয়ে গোদাগাড়ি থানায় একটি মামলা করেন।

ওই মামলার মোট ২১ জন আসামির মধ্যে দুইজন এই পরিবারের সদস্য এরমধ্যে জালাল পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেও জালালের ছেলে সাইফুল ইসলাম এখনও পলাতক রয়েছেন। পলাতক আসামির খোঁজে প্রায়শই পুলিশ সদস্যরা বৃদ্ধ নাজিমুদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।

এর মধ্যে ওই সংঘর্ষ ও নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১৫ আগস্ট কাকনহাট পুলিশ ফাঁড়ির কয়েকজন পুলিশ সদস্য একই গ্রামের বেশ কয়েকজন ভূমিদস্যুদের নিয়ে নাজিমুদ্দিনের ছেলে জালাল মেম্বারের বাসায় গিয়ে হুমকি ধামকি দিয়ে আসেন। এছাড়াও ওই বাড়ির মহিলাসহ সকলকে বাড়ি থেকে অন্যত্র চলে যাবার হুমকি-ধামকি দেন। ফেরার সময় পুলিশ ও বহিরাগতরা বৃদ্ধ নাজিমুদ্দিনের বাড়ির বেশকিছু আসবাবপত্র, মাটির চুলা ও অন্যান্য জিনিসপত্র ভাংচুর করে ভয়ভীতি সঞ্চার করে বলেও অভিযোগ করে ভুক্তভোগী পরিবার।

আসামির বাড়ি থেকে দুটো মোটরসাইকলে জোড়পূর্বক থানায় নিয়ে যাবারও অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও, প্রায়শই ভুক্তভোগী ও আসামি পরিবারের লোকজনকে মিথ্যে অস্ত্র মামলা দিয়ে হয়রানি করা হবে বলেও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে কাকনহাট পুলিশ ফাঁড়ির বেশ কয়েকজন পুলিশের বিরুদ্ধে।

লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জালাল মেম্বারের মেয়ে হালিমা খাতুন। তিনি বলেন, সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে এই হত্যা মামলার ন্যায় বিচার আমাদের কাম্য। কিন্তু তাই বলে তদন্ত আর গ্রেপ্তারের নামে নিয়মিতভাবে এমন ধরনের বেআইনি কার্যকলাপ আর প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার কাম্য নয়।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পুলিশকে ব্যবহার করে গ্রামের কিছু অসাধু ব্যক্তি ও ভূমিদস্যু আমাদের পরিবারের কাউকে জমিতে চাষবাদ করতে দিচ্ছে না।

লিখিত বক্তব্যে হালিমা খাতুন আরও বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ পাকড়ী হাজী মানিক উল্লাহ ওয়াকফ এষ্টেটের সম্পত্তি বাৎসরিক লিজে চাষাবাদ করে আসছিল। ঘটনার দিন (১০ জুন) আমার বাবা-চাচারা জমিতে চাষ করতে গেলে রাজশাহী ডিসি অফিসে কর্মরত সেলিম রেজা বহিরাগত ও স্থানীয় ভূমিদস্যুদের নিয়ে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের হামলার কারণেই অনাকাঙ্খিত সেই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। কিন্তু সেই দায় পরিকল্পিতভাবে আমাদের পরিবারের ওপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে।

অন্যদিকে আসামি ধরতে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, বৃদ্ধ নাজিমুদ্দিনের বাড়ির  আসবাবপত্র, মাটির চুলা ও অন্যান্য জিনিসপত্র ভাঙচুর করে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ সঠিক নয়। ভাঙচুর ও ভয়ভীতি দেখানো পুলিশের কাজ নয় বলেও দাবি করেনে তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App