×

সারাদেশ

নলছিটিতে অফ সিজন তরমুজ চাষে বাম্পার ফলন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২৩, ০৫:১০ পিএম

নলছিটিতে অফ সিজন তরমুজ চাষে বাম্পার ফলন

ছবি: ভোরের কাগজ

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার কুশঙ্গল ইউনিয়নের মানপাশা গ্রামের উচ্চ শিক্ষিত যুবক বদরুল আলমের মাঠের মাচায় থোকায় থোকায় ঝুলছে অফ সিজন (বারি তরমুজ-২ এবং হাইব্রিড গোল্ডেন ক্রাউন) জাতের তরমুজ। উপজেলা কৃষি অফিসের লীড ফার্মার বদরুল আলমের মাচা পদ্ধতিতে তরমুজ চাষে এবছর বাম্পার ফলন এসেছে। তিনি খরচ বাদে দেড় লক্ষাধিক টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখছেন।

স্থানীয়রা জানান, গত বছর শখের বসে সে (বদরুল) ৫ শতক জমিতে একই পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করে ভালো ফলন পাওয়ায় তিনি তরমুজ চাষে আগ্রহী হন। পুরানো অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবছর আগাম প্রস্তুতি নিয়ে ৬৫ শতক জমিতে দুইটি মাঠে তরমুজ চাষ করে আশানুরূপ ফলন পেয়ে খুশি চাষী বদরুল। সবুজ ও হলুদ জাতের শতশত তরমুজ মাচায় দেখতে তার গ্রামের মাঠে প্রতিদিন শতশত লোক এসে ভিড় জমায়। মাচায় ঝুলতে থাকা তরমুজ দূর থেকে দেখলে মনে হবে লাউ-কুমড়া ঝুলছে। কাছে গেলে ধারণা বদলে যাচ্ছে সবার।

জানা গেছে, চাষি বদরুল আলম পটুয়াখালীর লেবুখালী কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে বিনামূল্যে (বারি তরমুজ-২) জাতের বীজ সংগ্রহ করেন। এবং তার সাথে গোল্ডেন ক্রাউন জাতের তরমুজ বীজ ক্রয় করে চাষাবাদে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন। বারি তরমুজ-২ এর ভিতরে হলুদ আর বাহিরে সবুজ ও গোল্ডেন ক্রাউন জাতের তরমুজের ভিতরে লাল ও বাহিরে হলুদ। এদিকে নতুন পদ্ধতিতে মাচায় অফ সিজন তরমুজ চাষ দেখতে ও পরামর্শ নিতে আশপাশের এলাকার কৃষকরাও তার কাছে আসছেন। তারাও আগামীতে এ জাতের তরমুজ চাষ করতে চান। তাকে এ কাজে উৎসাহ ও সার্বিক পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শাহজালাল।

তরমুজ চাষি মোঃ বদরুল আলম জানান, বরিশাল বিএম কলেজ থেকে ইতিহাস বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে চাকুরির পিছনে না ঘুরে বেকারত্ব গোছানোর স্বপ্ন নিয়ে মাচা পদ্ধতিতে তরমুজ চাষের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

তিনি আরও জানান, এ তরমুজ চাষে প্রায় ৫০ হাজার টাকা মতো খরচ হতে পারে। সবকিছু ঠিক থাকলে এই জমির তরমুজ বিক্রি করে দুই লাখ টাকা আসতে পারে। জানা গেছে, মার্চ ও এপ্রিল মাসের শেষের দিকে কৃষক বদরুল আলম তরমুজ চাষের জমি প্রস্তুত করেন। এরপর জমিতে আইল কেটে মাটি খুঁড়ে বেড তৈরি করে জৈবসার প্রয়োগ করেন। সেই সঙ্গে পুরো বেডে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়ার পর তরমুজের বীজ রোপণ করেন। চারাগুলো বড় হলে বাঁশের মাচা করে দেওয়া হয়।

বর্তমানে বদরুল আলমের উৎপাদিত তরমুজের বয়স ৬০/৬৫ দিন। তরমুজ পরিপক্ক হয়েছে। ফসল বাজারজাত করা শুরু হয়েছে। প্রতিটি তরমুজের গড় ওজন হয়েছে তিন থেকে চার কেজি।

মানপাশা গ্রামের কৃষক সাইদুল ইসলাম বলেন, বদরুল আলমের মাচায় তরমুজ চাষ পদ্ধতি দেখে তার ভাল লেগেছে। আগামীতে তিনি এক একর জমিতে অফ সিজন তরমুজ চাষ করতে চান।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সানজিদ আরা শাওন বলেন, নতুন পদ্ধতিতে তরমুজ চাষসহ সকল চাষিদের উপজেলা কৃষি বিভাগ সব সময় পরামর্শ ও সহযোগিতা দিচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম বলেন, নলছিটি উপজেলায় মাচা পদ্ধতিতে দুইটি জাতের তরমুজ চাষ হয়েছে। আবহাওয়া ঠিক থাকলে তারা ভাল লাভবান হবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App