×

সারাদেশ

‘মুই অমপুরের কোনো জনসভাত এতো মানুষ নাই দ্যাকো বাহে’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৩, ০৮:১০ পিএম

‘মুই অমপুরের কোনো জনসভাত এতো মানুষ নাই দ্যাকো বাহে’
‘মুই অমপুরের কোনো জনসভাত এতো মানুষ নাই দ্যাকো বাহে’
‘মুই অমপুরের কোনো জনসভাত এতো মানুষ নাই দ্যাকো বাহে’
‘মুই অমপুরের কোনো জনসভাত এতো মানুষ নাই দ্যাকো বাহে’
‘মুই অমপুরের কোনো জনসভাত এতো মানুষ নাই দ্যাকো বাহে’
‘মুই অমপুরের কোনো জনসভাত এতো মানুষ নাই দ্যাকো বাহে’
‘মুই অমপুরের কোনো জনসভাত এতো মানুষ নাই দ্যাকো বাহে’
‘মুই অমপুরের কোনো জনসভাত এতো মানুষ নাই দ্যাকো বাহে’

স্মরণকালের জনসভা হলো রংপুরে। লোক আর লোক, যেদিকেই তাকানো যায়, শুধুই লোক। শুধু জনসভাস্থল জিলা স্কুল মাঠ না, বরং নগরীর প্রতিটি এলাকার সড়ক, অলিগলি ছিল লোকে লোকারণ্য। ঠিকভাবে পা ফেলানোর জায়গাও ছিল না কোথাও কোথাও। নগরীর মানুষ সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখেন সড়কে সড়কে মানুষের মিছিল। তারা অনেকটা পথ হেঁটেই যাচ্ছেন জিলা স্কুল মাঠের দিকে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে ঘিরে পুরো রংপুর জুড়ে ছিল সাজ সাজ রব। সকাল থেকে বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে দলের নেতাকর্মীরা দলে দলে আসতে শুরু করেন। তাদের খণ্ড খণ্ড মিছিলে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো নগরী।

রংপুর বিভাগের আট জেলা অর্থাৎ রংপুরসহ পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলা শহর ও সেগুলোর উপজেলাগুলো থেকে বাস, মাইক্রোবাস, জিপ, কার ও চার্জার অটোতে করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সাধারন মানুষ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শুনতে চলে আসেন। অনেকেই মোটর সাইকেল যোগেও জনসভাস্থলে এসে হাজির হন। বাহির থেকে আসা গাড়িগুলো রাখতে আগে থেকেই ২১টি পয়েন্টের ব্যবস্থা করেছিল ট্রাফিক বিভাগ। গাড়ি থেকে নেমে তারা পায়ে হেটে সভাস্থলে যান। এ সময় অনেকের হাতে জাতীয় ও দলীয় পতাকা শোভা পায়।

মহাসমাবেশ শুরুর আগে দুপুর ১২টার মধ্যে নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে ভর্তি হয়ে যায় ঐতিহাসিক রংপুর জিলা স্কুল মাঠ। মাঠের ভেতরের পাশাপাশি হাজার হাজার নেতাকর্মী রংপুর নগরের বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেন। যা ছড়িয়ে পড়ে জিলা স্কুল মাঠ থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে পায়রা চত্ত্বর, বাংলাদেশ ব্যাংক মোড় হয়ে ধাপ আটতলা মসজিদ মোড় পর্যন্ত। এছাড়া, জিলা স্কুল সংলগ্ন রাধাবল্লভ, কাচারি বাজার, ডিসি মোড়, ইঞ্জিনিয়ারপাড়া, নিউ ইঞ্জিনিয়ারপাড়া, কেরানীপাড়ার প্রতিটি অলিগলি ছিল ঠাসাঠাসি মানুষের ভিড়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্ত্বর, পুলিশ কমিশনারের কার্যালয় চত্ত্বর, ভূমি অফিস, ডায়াবেটিস অফিস, গনপূর্ত, সড়ক ও জনপথ, সেটেলমেন্ট অফিসসহ আশপাশের সবগুলো অফিস চত্ত্বরেই ছিল মানুষের ভিড়। পুরো নগরী যেন হয়ে উঠে জনসভাস্থল। নগরীর রাধাবল্লভ এলাকার আশির্ধো বয়সী বাসিন্দা আতোয়ার রহমান বললেন, মুই অমপুরের কোন জনসভাত এতো মানুষ নাই দ্যাকো বাহে। সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহমুদুর রহমান টিটু বললেন, এত বড় জনসভা রংপুরে এর আগে কখনো হয়নি।

মহাসমাবেশ ঘিরে তৈরি হওয়া জনস্রোত শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে। নানা রঙের পোশাক আর বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে গান গেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন তারা। বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে আগত নেতাকর্মীদের গায়ে ছিল লাল, নীল, হলুদ, সবুজ কালারের গেঞ্জি ও টুপি। জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ নৌকার আদলে তৈরী অটোতে করে সমাবেশে যোগদেন। নারী নেত্রী সাদিয়া হাসান মাছুমা বলেন, আমরা শাড়ি দিয়ে একটি চার্জার অটোকে নৌকার আদলে তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনতে এসেছি।

তাদের শ্লোগান ছিল শেখ হাসিনার আগমন- শুভেচ্ছা স্বাগতম, আওয়ামী লীগ সরকার বার বার দরকার, শেখ হাসিনার দুই নয়ন রংপুরের উন্নয়ন, উন্নয়নের সরকার বার বার দরকার, পদ্মা সেতু সরকার বার বার দরকার, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

সমাবেশ শুরুর আগের রাতেই রংপুরে আসতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগ দিতে গঙ্গাচড়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবলুর নেতৃত্বে ট্রাকে চেপে রাতেই ২০ হাজার নেতাকর্মী রংপুরে আসেন। রাতে জনসভাস্থলের কাছাকাছি নগরীর চিকলি বিল পার্ক এলাকায় অবস্থান করেন তারা। সেখানেই তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। শুধু গঙ্গাচড়াই নয়, রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকেও অনেক নেতাকর্মী মঙ্গওবার রাতেই রংপুরে আসেন। জনসভার সামনের দিকে থাকতে রাতেই এসেছেন তারা। কুড়িগ্রামের রাজারহাট থেকে এসেছেন সাবেরা সুলতানা হ্যাপী। রাতটা কোনোমত আত্মীয়ের বাসায় কাটিয়ে সকালে জনসভাস্থলে আসেন তিনি। পীরগাছার রকি ইসলাম নামে এক শিক্ষক জানালেন, তিনি স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে মোটর সাইকেলে করে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শুনতে এসেছেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত কয়েকশ’ অস্থায়ী গেইট, ফেস্টুন, ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও পোস্টারে পুরো রংপুর অঞ্চল মুখরিত হয়ে উঠে। বিভাগীয় শহরের প্রতিটি গলি ও বাই-লেনও সাজানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়েরও ছবি সম্বলিত পোস্টার, রঙিন ব্যানার ও ফেস্টুন লাগানো হয়।

২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর পীরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ সফরের প্রায় পাঁচ বছর পর জেলায় প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসবের মেজাজ বিরাজ করছিল। সাজসজ্জা ও আলোকসজ্জায় পুরো রংপুর সাজে নতুন রূপে।

রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় মহাসমাবেশের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বুধবার দুপুর ১২টায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় প্রধানমন্ত্রীর মহাসমাবেশের কার্যক্রম। জাতীয় সঙ্গীত শেষে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত ও শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা পাঠ করা হয়।

এরপর রংপুর বিভাগের আট জেলা থেকে আগত নেতারা পর্যায়ক্রমে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন। রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত এই বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভাপতিত্ব করেন মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ডা. দেলোয়ার হোসেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App