×

সারাদেশ

প্রধানমন্ত্রীর রংপুর আগমন ঘিরে যত আশা তিস্তাপাড়ের মানুষের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৩, ০২:৪৭ পিএম

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২ আগস্ট বুধবার রংপুরে আসছেন। সেদিন রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগীয় জনসভায় বক্তব্য রাখবেন সরকার প্রধান। আওয়ামী লীগ আয়োজিত জিলা স্কুল মাঠের বিভাগীয় মহাসমাবেশ থেকে বিভাগের ৩০টি উন্নয়নমূলক কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এমনটাই জানিয়েছেন দলের রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী।

এ জনসভাকে ঘিরে রংপুরে এখন সাজ সাজ রব। দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সর্বত্র যেন ব্যস্ততা। জনসভায় ১০ লাখের বেশি মানুষের সমাগমের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় রংপুর বিভাগের ৫৮টি উপজেলার প্রতিটি উপজেলা থেকে ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষ আনার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

বিভাগীয় জনসভাকে সফল করে তুলতে প্রতিদিনই ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চলছে রংপুরের প্রতিটি অলিগলিতে। তারা বর্তমান সরকারের আমলে রংপুরের যে সব উন্নয়ন হয়েছে এসবও জনগণের কাছে তুলে ধরছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে রংপুর বিভাগ, সিটি করপোরেশন, মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এ বছরের ১৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুর বিভাগীয় সদর দপ্তরের উদ্বোধন করেন। এছাড়া রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, পীরগঞ্জে মেরিন একাডেমি, উপজেলাগুলোতে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন, তিস্তা সড়ক সেতু নির্মাণসহ নানা উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন হয়েছে। এলেঙ্গা-রংপুর ছয় লেন মহাসড়কের কাজ চলমান। পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এসব উন্নয়নের ফিরিস্তি জনগণের কাছে তুলে ধরছেন দলের একাধিক নেতা। দলীয় নেতারা বলছেন, ২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি রংপুর জিলা স্কুল মাঠে মহাজোটের এক জনসভায় উন্নয়নের দায়িত্ব কাঁধে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই থেকে প্রধানমন্ত্রী তার প্রতিশ্রæতির বাস্তবায়ন আর উন্নয়নের মোড়কে একসময়ের ‘মঙ্গাপীড়িত’ রংপুরকে বদলে দিয়েছেন। বর্তমানে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা ও সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য রংপুর এখন উত্তরাঞ্চলের রাজধানী।

উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে ১৭ তলাবিশিষ্ট ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণ, র‌্যাব-১৩ ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারি অবকাঠামো। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিস্তাপাড়ের মানুষের ভাগ্যবদলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর রংপুর সফরকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন স্থানীয়রা। বিশেষ করে আশায় বুক বাঁধছেন তিস্তাপাড়ের মানুষ।

তিস্তাপাড়ের সাধারণ মানুষ এবং তিস্তা নিয়ে যারা আন্দোলন করে আসছেন, তাদের আশা প্রধানমন্ত্রী রংপুরের জনসভায় বহু আকাক্সিক্ষত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিয়ে কোনো সুখবর নিশ্চয়ই দেবেন। কারণ, পানির ন্যায্য হিস্যা না পাওয়ায় তিস্তা এখন উত্তরের মানুষের দুঃখ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি বছর বন্যা এবং খরায় নদীপাড়ের মানুষের দীর্ঘশ্বাস দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। তিস্তার দুই পাড়ের লাখ লাখ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করতে পারে একমাত্র মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হলে তিস্তাপাড়ের মানুষের পানির জন্য অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না।

তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সফিয়ার রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী রংপুরের পুত্রবধূ। ২০১১ থেকে ২০১২ সালের দিকে যখন ভারতের সঙ্গে পানিচুক্তি হলো না, তখন তিনি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথা জানিয়েছিলেন। আমরা সেই সময় তিস্তাপাড়ের লক্ষাধিক মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে বিশাল মিছিল ও সমাবেশ করেছিলাম। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য সেটি এক যুগেও বাস্তবায়ন হয়নি। তিনি বলেন, রংপুর বিভাগে দরিদ্রতার হার সর্বোচ্চ আর বরাদ্দ সর্বনিম্ন। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে অববাহিকার এক

কোটি মানুষ উপকৃত হবে। এতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিস্তা পাড়ের ১৩ থেকে ১৪টি উপজেলা ও ১১টি সংসদীয় আসনের ২৫ থেকে ৩০ লাখ ভোটার প্রধানমন্ত্রীর ওপর আস্থা আনবে।

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের ঘোষণা এখন প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে রংপুর বদলে যাবে। দরিদ্রতা কমে আসবে। উন্নয়ন আরো বেশি ত্বরান্বিত হবে।

দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে প্রধানমন্ত্রীর এই মহাসমাবেশ রংপুরবাসীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং চ্যালেঞ্জের। এই মহাসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত করতে তারা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন।

রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জাসেম বিন জুম্মন বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা তিনবার রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকে রংপুরকে যেভাবে উন্নয়নের মোড়কে সাজিয়েছেন, তা বিগত সময়ে আর কোনো সরকার করতে পারেনি। তার প্রতিশ্রুতি পূরণের মধ্যদিয়ে এ এলাকা থেকে মঙ্গা দূর হয়েছে। মানুষের ভাগ্যবদলের সঙ্গে সঙ্গে রংপুর অঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন ও পরিবর্তন হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App