×

সারাদেশ

ডুমুরিয়ায় সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে সব ধরনের পণ্যের দাম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৩, ০২:৫১ পিএম

ডুমুরিয়ায় সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে সব ধরনের পণ্যের দাম

ডুমুরিয়ায় সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে সব ধরনের পণ্যের দাম। ডুমুরিয়া (খুলনা) থেকে শেখ মাহতাব হোসেন

খুলনার ডুমুরিয়ার বাজারে নিত্যপণ্য চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, মাছ-মাংস, আটা-ময়দা, সবজিসহ সব ধরনের পণ্যের দাম দিন দিন নাগালের বাইরে যাচ্ছে। নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি ঠেকাতে ডুমুরিয়া উপজেলা প্রশাসনের নজরদারি একান্ত দরকার।

ভোক্তারা বলেছেন, যেসব পণ্যের চাহিদা বেশি থাকে সেসব পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়। আর এখন বাজারের সব পণ্যের দামই ঊর্ধ্বমুখী। সাধারণ মানুষ এমনিতেই কষ্টে আছে। খাদ্যপণ্যের ক্রমাগত দাম বৃদ্ধি তাদের কষ্ট আরো বাড়িয়ে তুলছে।

সরেজমিনে খুলনা শহরের বড়বাজার দৌলতপুর ও বৈকালী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বড় দানার মসুর ডাল ছিল প্রতি কেজি ৮০ টাকা। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়। খোলা সয়াবিনের দাম ছিলো ১২২-১২৪ টাকা। বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ১৫৫-১৬০ টাকা। বোতলজাত সয়াবিন ১৩০-১৩৫ টাকা থেকে বেড়ে এখন বায়ের বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ টাকায়। একইভাবে চিনি ৮০/৯০ থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়। গুঁড়া দুধের নাম ছিল প্রতি কেজি ৬০০ ৭০০ টাকা। এখন একই মানের দুধের দাম ৬০-৭ টাকা। ব্রয়লার মুরগি ১৬০-১৭০ টাকা থেকে এখন ২২০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া সরু চালের দাম ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে। এখন একই মানের প্রয়োজন। চাল বিক্রি হচ্ছে এখন ৮০থেকে ৯০ টাকায়। তবে যে কোনো ধরনের মোটা চাল ৬০ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে। আলু দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। একমাস আগেও আলু কেজি ছিল সর্বোচ্চ ৩০ টাকা। নেই আলু এখন ৬০-৭০ টাকা কেজি। এছাড়া পটল, বেগুন, বরবটি, কাকরোল, কচুর গাটি, করলা, টমেটো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। আগে যে লাভ মিলতো ৪০ টাকায়, সেই লাউ এখন ৮০-৯০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। আর দেশি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৭০/৮০ টাকা।

গরুর মাংসের দাম ৭২০ থেকে বেড়ে একলাকে ৮৫০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে সবচেয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। আয়ের তুলনায় পরিমাণ বাড়ায় পরিবারগুলোতে তৈরি হয়েছে বাজার ভীতি। টিসিবির লাইনও দেখা যাচ্ছে অনেক দীর্ঘ। অনেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য না পেয়ে খালি হাতে ফিরছেন।

এ ব্যাপারে মিজানুর নামে এক শিক্ষক আমাদের প্রতিনিধিকে বলেন, ২২ হাজার টাকা বেতনে আগে পরিবারে সব ধরনের খরচ মেটানোর পর মাস শেষে কিছু সন্চয় হতো। কিন্তু এখন পরিবারের চাহিদা পূরণ করতেই হিমশিম খাচ্ছি। যদি নিত্যপণ্যের দাম এভাবে বাড়তে থাকলে মানুষের জীবনে এর নেতিবাচক প্রভাব আরও গভীর হবে। জাকারিয়া নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, নিয়মিত ব্যয় বাড়লেও আর আগের মতোই আছে। সবকিছুর নাম প্রায় দ্বিগুন হয়েছে।

গৃহবধূ আমেনা বেগম বলেন, সবকিছুর দাম বেশি। গত মানের তুলনায় দাম বাড়ছে। আমরা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। মতিন নামের এক ক্রেতা জানান তেল, পেঁয়াজ, আলুর আদা দাম বাড়েছে। দাম যেন আর না বাড়ে সে ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি রাখা দরকার।

খুচরা পেঁয়াজ ব্যবসায়ী খালেক জানান, কাঁচামাল আমদানি কম হলে দাম বাড়ে।

আদা-রসুন ব্যবসায়ী হান্নান জানান, আদা-রসুনের বাজারে তেমন পরিবর্তন নেই। দাম যা ছিল তাই-ই আছে। কেজিতে অল্প বেড়েছে। তেল ব্যবসায়ীরা জানান, বাজার স্থিতি হলে তাদের জন্যও ভালো হয়। হঠাৎ করে দাম বাড়লে বিক্রিতেও সমস্যা হয়। যে নামই হোক মূল্য নির্ধারিত হলে সবার জন্যই ভালো। দৌলতপুর আড়তদার ও ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাজারে বর্তমানে তেল ও পেঁয়াজ নিয়ে ক্রেতাদের ক্ষোভ বেশি। তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে সরকার। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে যেন কোনো ব্যবসায়ী তেল বিক্রি না করে সেজন্য প্রতিদিন কমিটির পক্ষ থেকে নজরদারি করা দরকার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App