×

সারাদেশ

স্কুলছাত্রী রাজনার জন্য পিতার আহাজারি, খুনিকে দেখতে চাই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৩, ০৭:০৯ পিএম

স্কুলছাত্রী রাজনার জন্য পিতার আহাজারি, খুনিকে দেখতে চাই

ছবি: ভোরের কাগজ

আমি নাম দস্তখত জানিনা। রিক্সা চালাইয়া ফুড়িটারে (মেয়েটারে) পড়াইতাছি। পুলিশ অইতো আছিল (হতে চেয়েছিল)। খুব কষ্ট দিয়া মারছে (মেরেছে) ফুড়িটারে। আমি খুনিরে দেখতাম চাই।’

কথাগুলো খুন হওয়া সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাজনা আক্তারের বাবা ইসরাইল আলীর।

মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দুপুরে রাজনা হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবীতে মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলেন তিনি।

এর আগে শুক্রবার ভোরে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় রাজনা। পরদিন শনিবার দুই কিলোমিটার দূরে রাস্তার পাশে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বস্তাবন্দি লাশ পাওয়া যায় তার। এ ঘটনায় পুরো এলাকার মানুষ স্তম্ভিত, ক্ষুব্ধ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অন্যান্য দিনের মতো শুক্রবার ঘুমিয়েছিল দু’বোন রেশমা ও রাজনা। ভোরে ঘুম থেকে ওঠে বাবা ইসরাইল মিয়া পেছনের দরজা খোলা দেখতে পান। তিনি প্রথমে ভাবেন মেয়ে হয়তো অন্যদিনের মতোই বাথরুমে গেছে। অনেক দেরি দেখে স্ত্রী জাহানারা বেগমকে ডেকে মেয়েটি কেন আসছে না দেখার জন্য বলেন।

মা বাথরুমের সামনে গিয়ে রাজনাকে ডাকাডাকি করে কোন সাড়া পাননি। শেষে দরজা টান দিয়ে দেখেন ভেতরে মেয়েটি নেই। বিষয়টি ঘরে এসে জানানোর পর সকলে ঘুম থেকে উঠে খোঁজাখুঁজি করে হতাশ হয়ে পড়েন। গ্রামবাসীর পরামর্শে বাবা ইসরাইল থানায় গিয়ে জিডি করেন এবং জাহানারা যান গনকের কাছে।

এভাবে ছোটাছুটি করে দিন যায় পরিবারের সদস্যদের।

পরেরদিন শনিবার সারাদিনও এভাবেই কাটিয়েছে তারা। ওইদিন (শনিবার) সন্ধ্যায় এলাকায় খবর রটে পাশের গ্রাম শরীফপুরের তালুকদার বাড়ির বাউন্ডারি দেয়ালের কাছে একটি বড় বস্তা দেখা যাচ্ছে। পরে ওই বস্তায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় রাজনার লাশ পাওয়া যায়।

রাজনার বড় বোন সিতা বেগম আহাজারি করতে করতে বললেন, আমার বইনে (বোন) কইতো (বলতো) পুলিশ অফিসার অইবো (হবে)। আমরা অতো (এতো) অভাবের মাঝে আছি, তারপরেও বাবা পড়া ছাড়াইছইননা (ছাড়ান নি)। ইভাবে (এভাবে) কষ্ট দিয়া তারে মারা অইছে, আমরার মনে অইছে হাত পা ভাঙা, গলায় দাগ, নাক দিয়া রক্ত বারার (বের হচ্ছে) ও সাংবাদিকসাব আমার বইনের খুনি হকলের (সকলের) সামনে দেখা যাইবো (যাবে তো)।

রাজনার সহপাঠী ফেরদৌস আক্তার ও পূজা চক্রবর্তী বললো, হাত-পা বাঁকা করে লাশ বস্তায় ঢুকানো, কত নির্মম হত্যাকাণ্ড।

রাজনার চেহারা চোখে ভাসে জানিয়ে এই দুই শিক্ষার্থী বললো, আমরা খুনির বিচার চাই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App