×

সারাদেশ

মাগুরায় নদী ভাঙন আতঙ্কে বিশ গ্রামের মানুষ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২৩, ০৪:৫৯ পিএম

মাগুরায় নদী ভাঙন আতঙ্কে বিশ গ্রামের মানুষ

ছবি : ভোরের কাগজ

মাগুরার মহম্মদপুরে মধুমতি নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে ভাঙন আতঙ্কে নিঘুর্ম রাত কাটাচ্ছে মধুমতি পাড়ের ২০ গ্রামের মানুষ। আবার অনেকেই ভয়ে আগে থেকেই গাছপালা বিক্রি করে সরিয়ে নিচ্ছে ঘরবাড়ি।

প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে মধুমতি নদীর পানি বৃদ্ধি পায়, এর ফলে ভাঙনের তীব্রতা ভয়াবহ আকার ধারণ করে থাকে। এতে নদী গর্ভে বিলীন হয় বসতবাড়ি, গাছপালা ও শতশত একর আবাদি জমি। জমিজমা ও বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয় অনেকে। অসহায় অবস্থায় অনেকেরই আশ্রয় হয় খোলা স্থানে।

বছরের অন্য সময় নদী পাড়ের মানুষ শান্তিতে থাকলেও বর্ষা মৌসুমে কষ্ট আর ভয়ে সময় যেন যেতে চায়না তাদের। ভয়ে ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটে মধুমতি পাড়ের মানুষগুলোর।

তবে স্থানীয়দের ধারণা নদী ভাঙনের এই তীব্রতার জন্য দায়ী অবৈধ বালি উত্তোলন। শুষ্ক মৌসুমে মধুমতি নদী থেকে বালি উত্তোলন করে কিছু অসাধু বালি ব্যবসায়িরা। এর ফলে বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ আকার ধারণ করে মধুমতি নদী। রাক্ষুসী রুপে প্রতিবছরই গিলে খায় হাজার হাজার একর ফসলি জমি, গাছপালা ও ঘরবাড়িসহ লোকালয়। সরেজমিনে গেলে এমনিভাবে কষ্টের সাথে মনের কথাগুলো ব্যক্ত করেন নদীপাড়ের অসহায় মানুষ।

উপজেলার উত্তরে চরসেলামতপুর থেকে শুরু করে দক্ষিনে কালিশংকরপুর পর্যন্ত মধুমতির ভাঙনের মুখে রয়েছে। তাই নদীর তীরবর্তী বসবাসকারী মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে চরম আতঙ্ক। গোপালনগর, মহেষপুর, হরেকৃষ্ণপুর, ঝামা, আড়মাঝি, যশোবন্তপুর, চরপাচুড়িয়া, রায়পুর, মুরাইল, ধুপুড়িয়া, জাঙ্গালিয়া, রুইজানি, কাশিপুর, ধুলজুড়ি, দ্বিগমাঝি, দেউলি ও ভোলানাথপুর গ্রামগুলোও ভাঙনের শিকার।

আর এই গ্রামগুলোর মধ্যে রয়েছে- মসজিদ, মাদ্রাসা, ঈদগাহ, স্কুল, বাজার ও মন্দিরসহ অসংখ্য দোকান-পাট। এসব গ্রামের মানুষের কাছে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ রুপে দেখা দেয় মধুমতি। এতে বাড়ছে ভূমিহীনের সংখ্যাও। তাই তাদের দাবী স্থায়ী বাঁধের।

সরেজমিনে নদী ভাঙন এলাকায় গেলে দেখা যায়, নদী পাড়ে বসে আছে লোকজন, তাদের কপালে দূশ্চিন্তার ভাঁজ। এবছর ভাঙন শুরু হলে কি করবে ভেবেই পাচ্ছে না। প্রায় ১৪ একর চাষি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে, তিনবার ঘরবাড়ি সরিয়েছি, এবার শেষ সম্বল বসতভিটা ভাঙলে ঠাঁই হবে খোলা আকাশের নিচে। এটা ভেবে ভেবেই আমাদের নির্ঘুম রাত কাঁটতে শুরু করেছে বলে জানান উপজেলার ধুলজুড়ী গ্রামের রঞ্জিত কুমার বিশ্বাস।

চরপাচুড়িয়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম ও আক্কাচ মোল্যা বলেন, বর্ষা মৌসুম আসলেই আমাদের চিন্তার শেষ থাকেনা, বাপ দাদার আমল থেকে চারবার ঘরবাড়ি সরিয়েছি।

বসুর ধুলজুড়ী গ্রামের মোঃ বাখের উল্লাহ জানান, আমাদের প্রায় ১৫ একর জমি নদী গর্ভে। এছাড়াও এলাকার অনেক বসতবাড়ি ও ফসলি জমি মধুমতি নদী ভাঙনের চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই কতৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা নদী শাসনে স্থায়ী বাঁধ দেয়ার জন্য।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App