×

সারাদেশ

দলের আদর্শ সমুন্নত রেখে কাজ করে যাবো

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৩, ১২:১৯ এএম

দলের আদর্শ সমুন্নত রেখে কাজ করে যাবো

আলহাজ্ব মো. মোজাম্মেল হক।

টাঙ্গাইলের জনমানুষের নেতা হিসেবে পরিচিত আলহাজ্ব মো. মোজাম্মেল হক। জাতীয় পার্টির আদর্শ লালনকারী এই প্রবীণ নেতা রাজনৈতিক অঙ্গনে একজন সৎ নিষ্ঠাবান নির্ভীক মানুষ হিসেবে সর্বমহলে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন তাঁর কর্মে। দীর্ঘ তিন যুগেরও অধিক সময় রাজনৈতিক অঙ্গনে তার বিচরণ টাঙ্গাইলবাসী গুরুত্ব সহকারেই নিয়েছেন। তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে মসজিদ মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ, সামাজিক সংগঠন, ক্রীড়া সংগঠনসহ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে তার কর্মময় জীবনকে তুলে ধরেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তার রাজনৈতিক জীবন প্রশস্ত এবং দীর্ঘ। তিনি ১৯৫৭ সালে টাঙ্গাইল জেলা দিঘলিয়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মৃত আলহাজ্ব শামছুল হক মাতা মৃত নুরজাহান বেগম। একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে তার রাজনৈতিক জীবনে তাকে পিছনে তাকাতে হয়নি। ১৯৯০ সালের ১৮ ডিসেম্বর তিনি পল্লীবন্ধু হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদের হাতে গড়া জাতীয় পার্টিতে যোগদানের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন।

এ প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির স্থানীয় একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজনীতির শুরুর দিকে আলহাজ্ব মো. মোজাম্মেল হক টাঙ্গাইল শহর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক এর দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে জেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, পর্যায়ক্রমে জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। চলতি বছরে কিছুদিন পূর্বে দলীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়ে গেল, এতে তিনি পুনরায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

স্থানীয়রা মোজাম্মেল হক সম্পর্কে জানান, তিনি টাঙ্গাইল পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত কমিশনার ছিলেন। তার জনপ্রিয়তা এতোটাই যে জাতীয় পার্টির প্রতিটি অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের ভালোবাসার জোয়ারে বারবার সিক্ত হয়েছেন তিনি। টাঙ্গাইলের জনগণের আস্থা ও ভালোবাসার মানুষ হিসেবেই সুপরিচিত তিনি। আলহাজ্ব মো. মোজাম্মেল হক এমন একজন মানুষ নিজের ব্যক্তিজীবনের সুখ আনন্দের ছাড় দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে কাজ করে যাচ্ছেন।

দলীয় নেতাকর্মীদের অভিমত, আলহাজ্ব মো. মোজাম্মেল হক দলের পিছনে অনেক শ্রম ও মেধা দিয়ে টাঙ্গাইলে-৫ আসনের জাতীয় পার্টিকে জনগণের কাছাকাছি পৌঁছে দিয়েছেন। তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী হয়েও জনগণের সেবা করার জন্য রাজনীতির ময়দানকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরে আছেন।

পারিবারিক জীবনে অত্যন্ত সুখী জাতীয় পার্টির এই নেতা। তিনি তিন ছেলে ও দুই মেয়ের জনক। বড় মেয়ে ইউরোপ এবং ছোট মেয়ে আমেরিকায় প্রতিষ্ঠিত। ছেলে তিনজন পিতার ব্যবসা বাণিজ্য দেখাশোনার পাশাপাশি পিতার অনুকরণীয় আদর্শ ধারণ করে জাতীয় পার্টির সাথে সম্পৃক্ত। অত্যন্ত ভদ্র মার্জিত আলহাজ্ব মোজাম্মেল হক আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৫ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন।

বিষয়টি নিয়ে আলাপ করতেই এই প্রবীণ নেতা বলেন, দল আমাকে মনোনয়ন দিলে, আমি এই আসনটি জাতীয় পার্টিকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয় এনে দিব ইনশাল্লাহ। জাতীয় পার্টিকে এ আসনটিতে জয় উপহার দেয়ার জন্য আমি আমার সর্বাত্মক প্রচেষ্টাটুকু করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমার আসনে জাতীয় পার্টি এখন সাংগঠনিকভাবে নির্বাচন মোকাবিলা করার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে জয়ের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি জাতীয় পার্টির ইশতেহারের প্রসঙ্গে বলেন, হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাতারে নেয়ার ছক সাজিয়ে গেছেন। যে পরিকল্পনা বাস্তবসম্মত ও নির্ভরযোগ্য।

প্রবীণ নেতা মোজাম্মেল হক বলেন, জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় গেলে দেশে প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করবে। আট বিভাগকে ৮টি প্রদেশে উন্নীত করা হবে। নাম হবে– উত্তরবঙ্গ প্রদেশ, বরেণ্য প্রদেশ, জাহাঙ্গীরনগর প্রদেশ, জাহানাবাদ প্রদেশ, জালালাবাদ প্রদেশ, চন্দ্রদ্বীপ প্রদেশ, ময়নামতি প্রদেশ, চট্টলা প্রদেশ। সরকার কাঠামো হবে দুই স্তরবিশিষ্ট। কেন্দ্রীয় সরকারকে বলা হবে ফেডারেল সরকার। থাকবে ৩০০ আসনের জাতীয় সংসদ। আর প্রদেশ চালাবে প্রাদেশিক সরকার। থাকবে প্রাদেশিক সাংসদ। প্রতিটি উপজেলা কিংবা থানাকে প্রাদেশিক সরকারের আসন হিসেবে বিবেচনা করা হবে। প্রাদেশিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হলে ঢাকা থেকে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ সদর দপ্তর প্রাদেশিক রাজধানীতে স্থানান্তর করবে জাতীয় পার্টি। ইশতেহারে বলা হয়েছে, ক্ষমতায় গেলে নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার করবে জাতীয় পার্টি। বর্তমান ব্যবস্থার বদলে ভোটের সংখ্যানুপাতিক হারে জয় পরাজয় নির্ধারণের ব্যবস্থা করা হবে। নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হবে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’। উপজেলা আদালত ও পারিবারিক আদালতসত পূর্ণাঙ্গ উপজেলা ব্যবস্থা চালু করে স্থানীয় সরকার কাঠামো শক্তিশালী করতে চায় জাতীয় পার্টি। উপজেলার ক্ষমতা উপজেলা চেয়ারম্যানদের কাছে হস্তান্তর করবে তারা।

জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, ‘এক বছরের মধ্যে’ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে আমাদের ইশতেহারে। পাঁচ বছরের মধ্যে মামলা জট শূন্যের কোটায় নিয়ে আসা হবে। রাজনৈতিক মামলা দায়ের করার প্রবণতা বন্ধ করা হবে। প্রতিশ্রুত প্রতিটি প্রাদেশিক রাজধানীতে খোলা হবে হাইকোর্ট বেঞ্চ।

তিনি জানান, শিক্ষা পদ্ধতিরও সংস্কার করতে চায় এরশাদের দল। ক্ষমতায় গেলে পঞ্চম ও অষ্টমের দুই সমাপনী পরীক্ষা বাদ দেয়া হবে। টিউশন নির্ভরতা কমিয়ে বন্ধ করা হবে কোচিং ব্যবসা। স্নাতক শ্রেণি পর্যন্ত নারী শিক্ষা অবৈতনিক করা হবে।

আলহাজ্ব মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ১৮ দফা ইশতেহারে বলা হয়েছে, জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় গেলে ধর্মীয় মূল্যবোধকে ‘সবার উর্ধ্বে’ স্থান দেবে। আবার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য জাতীয় সংসদে ৩০টি আসন সংরক্ষণ করা হবে। সহজ শর্তে কৃষি ঋণ, চরাঞ্চলের কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা, গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য স্থিতিশীল রাখা, ইউনিয়নভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা খাতের বিস্তৃতি ঘটানো এবং পল্লী রেশনিং ব্যবস্থা চালুর অঙ্গীকারও রয়েছে এর মধ্যে।

তিনি জানান, প্রতিটি উপজেলায় কৃষিভিত্তিক শিল্পনগরী গড়ে তোলার পাশাপাশি অনগ্রসর অঞ্চলে শিল্প স্থাপনে জাতীয় পার্টি ‘অগ্রাধিকার’ দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে ১৮ দফায়। বলা হয়েছে গুচ্ছগ্রাম ও পথকলি ট্রাস্ট পুনঃপ্রতিষ্ঠার কথা।

জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে ‘তিন মাসের মধ্যে’ সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি সমূলে নির্মূল করা হবে বলেও জানান আলহাজ্ব মো. মোজাম্মেল হক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App