×

সারাদেশ

চট্টগ্রামে সাড়া ফেলেছে পর্যটন বাস

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৩, ০৯:৪২ এএম

চট্টগ্রামে সাড়া ফেলেছে পর্যটন বাস

ফাইল ছবি

রোদ-বৃষ্টির খেলা, ভ্যাপসা গরম এসবের কোনো কিছুই যেন চট্টগ্রামের ভ্রমণপিপাসু মানুষকে ঘরে আটকে রাখতে পারেনি। এই কুরবানির ঈদের ছুটিতে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত, আনোয়ারায় পারকি সমুদ্রসৈকত, সীতাকুণ্ডের গুয়াখালী সবুজসৈকত, ফয়’স লেক পর্যটনকেন্দ্র, চিড়িয়াখানাসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখছেন ভ্রমণ পিপাসুরা। তাদের পদচারণায় জমজমাট পর্যটন স্পটগুলো।

আর এই ভ্রমণ সহজ করেছে পর্যটন বাস সার্ভিস। মূলত চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গত ১০ জুন থেকে নিউমার্কেট থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত পর্যটকদের জন্য বিআরটিসির ডাবল ডেকার (একটি ছাদখোলা) বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। এ বাস সার্ভিসটি ইতোমধ্যে পর্যটক এবং ভ্রমণপিপাসুদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। পর্যটকদের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে নিউমার্কেট হতে পতেঙ্গা রুটে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে ২টি অতিরিক্ত বাস সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়া গতকাল ১ জুলাই থেকে প্রতি শুক্রবার ও শনিবার ফুল ডে ট্যুর সার্ভিস চালু করা হয়েছে। এর আওতায় ঈদকে কেন্দ্র করে নিউমার্কেট রুটের পাশাপাশি চকবাজার ও বহদ্দারহাট থেকে ২টি করে ৪টি অতিরিক্ত বাস সংযোজন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জানান, পর্যটকদের সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলো আনন্দময় করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ফুল ডে ট্যুর সার্ভিস চালু হয়েছে। এই ট্যুর সার্ভিসের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে পর্যটকরা সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক (সুপ্তধারা ও সহস্রধারা ঝরনা), গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত, মহামায়া লেক এবং ডিসি পার্কে ভ্রমণ করতে পারবেন। জনপ্রতি মাত্র ৮৫০ টাকার ফুল ডে ট্যুর প্যাকেজের মাধ্যমে ওই ৪টি দর্শনীয় স্থান ঘুরে আসতে পারবেন।

ওই ফুল ডে ট্যুর সার্ভিসটি প্রতি সপ্তাহের শুক্রবার ও শনিবার চালু থাকবে। ফুল ডে ট্যুর সার্ভিসের মাইক্রোবাসগুলো চট্টগ্রাম শহরের প্রাণকেন্দ্র স্টেশন রোডের মোটেল সৈকতের সামনে থেকে সকাল সাড়ে ৯টায় যাত্রা শুরু করবে এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার মধ্যে মোটেল সৈকতের সামনে ফিরে আসবে। এই প্যাকেজে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মাইক্রোবাস সার্ভিসের পাশাপাশি সকালের স্ন্যাকস, দুপুরের খাবার, সার্বক্ষণিক ট্যুর গাইডের সুবিধা থাকবে। ধীরে ধীরে ফুল ডে ট্যুর সার্ভিসের পরিসর আরো বাড়ানো হবে।

এদিকে ঈদের ছুটিতে বরাবরের মতো এবারও বিনোদন প্রেমীদের আগ্রহের শীর্ষে রয়েছে চট্টগ্রামের ফয়’স লেক কনকর্ড অ্যামিউজমেন্ট পার্ক। লেকের শেষ প্রান্তে আছে পানির রাজ্যে বিচরণের রোমাঞ্চকর স্থান ‘সি ওয়ার্ল্ড’। এছাড়া সার্কাস সুইং, বাম্পার কার, বাম্পার বোট, ফ্যামিলি রোলার কোস্টার, জায়ান্ট ফেরিস হুইল, ড্রাই স্লাইড, ফ্যামিলি ট্রেইন, প্যাডেল বোট, ফ্লোটিং ওয়াটার প্লে, পাইরেট শিপের মতো মজাদার সব রাইড উপভোগ করছে শিশুরা। গত শুক্রবার পার্কটিতে গিয়ে দেখা যায়, হাজারো মানুষের পদচারণায় মুখর ছিল পার্কটি।

ফয়েস লেক এলাকায় অবস্থিত আরেকটি বিনোদনকেন্দ্র চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় গত শুক্রবার বিকালে মানুষের ঢল নামে। এদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ জানিয়েছেন, মন্ত্রী পুরো চিড়িয়াখানা ঘুরে দেখেছেন। সার্বিক পরিবেশ ও দর্শনার্থীর বিপুল সমাগম দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি।

তিনি আরো জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১০ হাজারের মতো দর্শনার্থী চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করেছে। ওই চিড়িয়াখানায় বর্তমানে প্রায় ৭৩ প্রজাতির ৬ শতাধিক পশুপাখি আছে। অপরদিকে নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত, নেভাল, আউটার রিং রোডসহ আশপাশের স্পটগুলোতেও শুক্রবার দুপুরের পর থেকে লোকজন জড়ো হতে শুরু করে। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসে করে সৈকতে আসে পর্যটকরা। সৈকতের পানিতে গোসল, পা ভেজানো, গলা ছেড়ে গান গাওয়া, গরম পেঁয়াজু-কাঁকড়া ভাজি-ডাব খাওয়াসহ আনন্দে মেতে ওঠে তারা।

এছাড়া মেরিন ড্রাইভ সড়কে জেলা প্রশাসনের ফ্লাওয়ার পার্ক, নগরীর পতেঙ্গায় বাটারফ্লাই পার্ক, কর্ণফুলী নদীর অভয়মিত্র ঘাট, কাজির দেউড়ি শিশু পার্ক, বহদ্দারহাট স্বাধীনতা পার্ক, আগ্রাবাদে কর্ণফুলী শিশু পার্ক, হালিশহর ও সীতাকুণ্ডে গুলিয়াখালী সাগরতীর, মিরসরাইয়ে মহামায়া লেক, আনোয়ারায় পারকি সমুদ্রসৈকতেও বেড়াতে যাচ্ছেন পর্যটকরা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App