×

সারাদেশ

জমে উঠছে লৌহজংয়ে কুরবানি পশুর হাট

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৩, ১০:০৭ পিএম

জমে উঠছে লৌহজংয়ে কুরবানি পশুর হাট

ছবি: ভোরের কাগজ

আসন্ন কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে জমে উঠেছে কুরবানি পশুর হাট।

প্রতিদিন হাজার হাজার দেশীয় গরু-ছাগল নিয়ে বিক্রেতারা আসছেন এসব হাটে। পশুর হাট ঘিরে নিরাপত্তাব্যবস্থা, নির্বিঘ্নে যাতায়াত, জালনোট শনাক্তকরণ মেশিনসহ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট হাট কর্তৃপক্ষ। পশুর হাটে ক্রেতা সমাগম করতে প্রচার চালাচ্ছেন ইজারাদাররা। মাইকিংয়ের প্রতিযোগিতা চলছে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের আনাচে-কানাচে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার আশ্বাস দিয়ে যার যার মতো করে বাজার মাতানোর চেষ্টা করছে হাট কর্তৃপক্ষ।

ক্রেতারা অভিযোগ করছেন, বিক্রেতারা প্রায় দ্বিগুণ দাম হাঁকাচ্ছেন। আর বিক্রেতারা বলছেন, দাম ঠিক রেখেই বিক্রির চেষ্টা চলছে। তবে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই বলছেন, এবার কুরবানির পশুর সরবরাহ বেশি থাকায় দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয়রা গরুকে বিভিন্নভাবে সাজিয়ে হাটে তুললেও দূরের ব্যবসায়ীরা ট্রাকযোগে প্রচুরসংখ্যক গরু হাটে তুলেছেন। হাটে বিভিন্ন আকারের গরু ও খাসি উঠেছে।

বিক্রেতারা বলছেন, এ বছর পশু মোটাতাজা করায় অধিক খরচ হলেও গত বছরের চেয়ে কম দাম চাওয়া হচ্ছে পশুর। এরপরও ক্রেতারা দাম শুনে চলে যাচ্ছেন। এতে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, বেপারিরা চড়া দাম হাঁকিয়ে বসে রয়েছেন। তাই সামর্থ অনুযায়ী কোরবানি পশু কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।

উপজেলায় গত শনিবার থেকে ৪টি স্থানে শুরু হয়েছে কোরবানি পশুর অস্থায়ী হাট। এ বছর উপজেলায় ৪টি হাটের ইজারা দেয়া হয়েছে। হাটগুলো হচ্ছে মুন্সীগঞ্জ জেলার বৃহত্তম ১০ একর জমি নিয়ে খেতেরপাড়া গাংচিল বাসস্ট্যান্ড পশুর হাট, লৌহজং সরকারি কলেজ মাঠ, মাওয়া ও নওপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ।

উপজেলার হাট কমিটিরা জানান, এই হাট গুলোতে ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত বেচাকেনা চলবে। বিক্রেতারা দেশের বিভিন্ন জেলার থেকে কোরবানির পশু এনেছে হাটে তাই জমতে শুরু করেছে উপজেলার হাট গুলো।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ৪ টি অস্থায়ী পশুর হাট ইজারা দেয়া হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খেতেরপাড়া গাংচিল স্ট্যান্ড, নওপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ ও মাওয়া পশুর হাটে প্রচুর গরু ও ছাগল বেচাকেনা চলছে।

মাইজগাঁও গ্রামের ক্রেতা মো. কাদির শেখ জানান, হাটে বর্তমান পশুর দাম একটু চওরা মনে হচ্ছে। গত বছরের তুলোনায় বেশি দাম চাচ্ছেন বিক্রেতারা।

কুষ্টিয়া থেকে গরু বিক্রেতা রফিকুল ৮৫টি গরু নিয়ে খেতেরপাড়া হাটে এসেছেন বিক্রয়ের জন্য। তিনি বলেন, প্রতিবছর এই হাটে আসি। গতবছর থেকে এবার গরুর খাদ্য দাম বৃদ্ধি হয়ায় গরু মোটা তাজা করতে খরচ বেশি পরেছে।

মাদারীপুর থেকে গরু বিক্রেতা বললাম দাস জানান, গত বছরের চেয়ে এ বছর দেশীয় পদ্ধতিতে আমরা গরু, মোটাতাজা করতে অনেক টাকা খরচ করেছি। তাই কোরবানির হাটে পশুগুলোর দাম একটু বেশি রয়েছে। কিন্তু আমরা যদি গরুর দাম ৪ লাখ চাই তাহলে ক্রেতারা তার দাম বলেন দুই আড়াই লাখ, আর মাঝাড়ি সাইজের গরু যদি দেড়/ দুই লাখ টাকা চাই তাহলে ক্রেতারা বলেন ১ লাখ। কোনো কোনো ক্রেতা দামা দামি করে কিনে নেন। আবার কিছু ক্রেতা দাম শুনে চলে যান।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল আউয়াল জানান, এবার উপজেলায় ৪টি অস্থায়ী পশুর হাট ইজারা দেয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পশুর হাট ঘিরে নিরাপত্তাব্যবস্থা,নির্বিঘ্নে যাতায়াত, জালনোট শনাক্তকরণ মেশিন বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট হাট কর্তৃপক্ষ সেচ্ছাসেবীরা দায়িত্ব পালন করবে।

খেতেরপাড়া গাংচিল বাস স্ট্যান্ড হাট ইজারাদার হাজী মো. ফয়সাল শিকদার জানান, এই হাটে গরু আসতে শুরু করেছে। আগামী দুদিনে প্রচুর পরিমাণে গরু আসবে। এ হাটে শতাধিক সেচ্ছাসেবী নিরাপত্তা দায়িত্ব পালন করবে এবং বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করা হবে। এছাড়া বিক্রেতাদের টাকা ব্যাংকে জমার নিরাপত্তা দিতে হাট কমিটির সেচ্ছাসেবীরা তাদের সাথে ব্যাংক পর্যন্ত পৌঁছাতে সাথে থাকবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App