×

সারাদেশ

পরকীয়ায় রাজি না হওয়ায় দুই সন্তানের জননীকে হত্যা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৩, ০৫:৪৭ পিএম

পরকীয়ায় রাজি না হওয়ায় দুই সন্তানের জননীকে হত্যা

ছবি: ভোরের কাগজ

কিশোরগঞ্জে পরকীয়ার প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় শাবনূর আক্তার (২৬) নামে দুই সন্তানের মাকে হত্যার ঘটনা ঘটছে।

শনিবার (২৪ জুন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে সদর উপজেলার মাইজখাপন ইউনিয়নের কালাইহাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রাতেই কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল চত্বর থেকে নিহতের স্বামী শহীদুল ইসলাম ও সদর উপজেলার মাইজখাপন ইউনিয়নের কালাইহাটি গ্রাম থেকে আলামিনকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহতের পরিবারের দাবি শাবনূরের স্বামী এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছেন। তবে পুলিশ বলছে, শাবনূরকে একই এলাকার মাদকাসক্ত আলামিন ভালবাসতেন। শাবনূর তাকে কখনোই পাত্তা দেয়নি। পাত্তা না দেয়ার কারণে ক্ষোভ থেকে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

নিহত শাবনূর সদর উপজেলার মাইজখাপন ইউনিয়নের কালাইহাটি গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে ও তাঁর স্বামী শহীদুল ইসলাম (৪০) একই ইউনিয়নের চৌধুরীহাটি গ্রামের শামছুল হক মাস্টারের ছেলে। অন্যদিকে আলামিন (৩০) একই ইউনিয়নের কালাইহাটি গ্রামের মৃত আব্দুল কাদিরের ছেলে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে পারিবারিকভাবে চৌধুরীহাটি গ্রামের শহীদুল ইসলামের সাথে শাবনূরের বিবাহ হয়। তাদের সংসারে শায়ন (৭) ও সানভি (৫) নামে দুই সন্তানের জন্ম হয়। দুই সন্তানই বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলে পড়াশোনা করতো। শাবনূর স্বামীর বাড়িতে না থেকে বাবার বাড়িতে থাকতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন।

শনিবার (২৪ জুন) সন্ধ্যায় শাবনূর বাছুর আনতে ঘর থেকে বাইরে যান। এ সময় তার বুক, ডান হাত ও পাঁজরে ছুরিকাঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা শাবনূরকে উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, একই গ্রামের মাদকাসক্ত আলামিন হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে। ঘটনার পর আলামিন ঘটনাস্থল থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুড়ি ও আলামিনের ব্যবহৃত স্যান্ডেল ঘটনাস্থল থেকে জব্দ করেছে পুলিশ।

নিহতের মা দিলোয়ারা বলেন, আমার মেয়েকে বিয়ের পর থেকেই তার স্বামী শহীদ নির্যাতন করত। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সে বাড়িতে চলে আসে। গত দুই বছর যাবত আমার মেয়ের ও তার দুই সন্তানের কোনো খোঁজ খবর রাখে না। এমনকি ভোরণপোষণও দিত না। দুই নাতিকে নিয়ে যখন স্কুলে যেত আমার মেয়ে তখন তাকে হত্যার হুমকিও দিত শহীদ। আমার মেয়েকে শহীদ ও আলামিন দুজন মিলে হত্যা করেছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।

কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার চিকিৎসক তাজরীন তৈয়ব বলেন, বুকের ডানপাশে ও পেটে মারাত্মক জখম হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিস্তারিত বলা যাবে।

কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ আল আমিন হোসাইন বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আলামিনের প্রেমের প্রস্তাবকে পাত্তা না দেয়ার কারণে শাবনূরকে হত্যা করা হয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App