চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এ বছরও কোরবানির পশু কম খরচে ঢাকায় নেয়ার ব্যবস্থা করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে এবার পৃথকভাবে ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন চালু না করে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনের আলাদা ওয়াগনে পরিবহন করা হচ্ছে কোরবানির পশু।

শনিবার (২৪ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে দুটি ওয়াগনে ৪০টি গরু ও ছয়টি ছাগল নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় ট্রেনটি। এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য আবদুল ওদুদ। টানা তিনদিন অর্থাৎ ২৬ জুন পর্যন্ত এ সুবিধা চালু রাখবে বিশেষায়িত এই ট্রেন। বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের জোনের বিভাগীয় (পাকশী) ব্যবস্থাপক শাহ সূফী নুর মোহাম্মদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে তৃতীয়বারের মতো খামারি-ব্যবসায়ীদের চাহিদার ভিত্তিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলস্টেশন থেকে ঢাকা রুটে এক জোড়া ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন চালু করা হয়েছে। ট্রেনটি বিকেল চারটায় রহনপুর রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে যায় ঢাকার উদ্দেশ্যে। পথে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশনসহ আরো ছয়টি স্টেশনে কোরবানির পশু নিয়ে ঢাকার তেজগাঁও পৌঁছাবে মধ্যরাতে। তিনি আরও বলেন, ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনেই আলাদা তিনটি ওয়াগনজুড়ে দিয়ে ঢাকায় কোরবানির পশু পরিবহন করা হচ্ছে। প্রতিটি ওয়াগনে ২০টি করে গরু পরিবহন করা যাবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কাঁকনহাট ও রাজশাহী থেকে একটি ওয়াগনের ভাড়া হবে ১১ হাজার ৮৩০ টাকা। এসব স্টেশন থেকে ক্যাটল স্পেশাল ট্রেনে আলাদাভাবে একটি গরু পরিবহনের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৯২ টাকা।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, প্রথমে কোরবানি পশু নিয়ে জেলার রহনপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে বিকেল চারটায় ক্যাটল ছাড়ে ট্রেনটি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে সন্ধ্যা ৬টা, কাঁকনহাট রেলস্টেশন থেকে সন্ধ্যা ছয়টা ৪০ মিনিটে, বড়াল ব্রিজ রাত নয়টা ২৫ মিনিটে, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া রেলস্টেশন থেকে রাত ১০টা ও বঙ্গবন্ধু সেতু (পূর্ব) থেকে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে গরু নিয়ে ছেড়ে যাবে তেজগাঁওয়ের উদ্দেশ্যে। ঢাকায় কোরবানির পশু যাবে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনের আলাদা ওয়াগনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কাঁকনহাট ও রাজশাহী থেকে একটি ওয়াগনের ভাড়া ১১ হাজার ৮৩০ টাকা ও বড়াল ব্রিজ ৯ হাজার ২৩০ টাকা, উল্লাপাড়া রেলস্টেশন থেকে ৮ হাজার ৫৯০ টাকা ও বঙ্গবন্ধু সেতু (পূর্ব) থেকে প্রতি ওয়াগনের ভাড়া হবে ৬ হাজার ৫৫০ টাকা।

সংশ্লিষ্টরা আরো জানায়, প্রথমবারের মতো চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ২০২১ সালের ১৭ জুলাই ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন চালু হয়। ট্রেনটি ১৯ জুলাই পর্যন্ত গরু পরিবহন করে। তিন দিন ধরে চলা এই ট্রেনটিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে কোরবানিযোগ্য পশু পরিবহন করা হয় মাত্র ৭৭টি, আয় হয় ৪৫ হাজার ৫৮৪ টাকা। ২০২২ সালের ৬ জুলাই দ্বিতীয়বারের মতো চালু হয় ক্যাটল ট্রেন। ২৩টি কোরবানি পশু পরিবহন করে রেলওয়ের আয় হয় ১১ হাজার ২৩৯ টাকা।

পশ্চিমাঞ্চল (রাজশাহী) রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, প্রাথমিকভাবে তিনটি ওয়াগনে কোরবানির পশু পরিবহনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে খামারি ও ব্যবসায়ীদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনে ওয়াগন বাড়ানো হবে।