×

সারাদেশ

ভেড়া খামারিদের অর্থ লোপাট করে পালালেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৩, ১১:৪৪ এএম

ভেড়া খামারিদের অর্থ লোপাট করে পালালেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা

ছবি: সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের ছাতকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ইউএলও) মো. ইব্রাহিম মিয়া ও ভ্যাটেনারী সার্জন ইমান আল হোসাইনের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি, ঘুষ দাবি ও বিভিন্ন প্রকল্প থেকে প্রান্তিক খামারিদের জন্য বরাদ্দকৃত প্রশিক্ষণের সম্মানি লোপাট করে ইউএলও গোপনে ঢাকায় বদলি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকতা (ইউএলও) মো. ইব্রাহিম মিয়া ও ভ্যাটেনারী সার্জন ইমান আল হোসাইন সম্প্রতি "হাওর অঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প" এর মাধ্যমে নির্বাচিত ভেড়া পালনকারী সুফলভোগী খামারিদের জন্য তিন দিনের প্রশিক্ষণের টাকা সুকৌশলে হাতিয়ে নিয়েছেন। অনুসন্ধানে জানা যায় ইউএলও ইব্রাহিম মিয়া ভিএস ইমান আল হেসাইনের সহযোগীতায় ভুয়া মাষ্টাররোল তৈরী করে তিন দিনের ট্রেনিং একদিনে এক ঘন্টা করিয়ে প্রশিক্ষণার্থী সুফলভোগী খামরিদের নাস্তা, খাবার, প্রশিক্ষণ উপকরণসহ আনুষঙ্গিক খরচের কয়েক লক্ষাধিক টাকা লোপাট করেন। এমনকি স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনকে না জানিয়ে অর্থ লোপাট করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ‘লিব রিজার্ভ ডেপুটেশনে’ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন মো. ইব্রাহিম মিয়া।

জানা যায়, ২০২২ সালে আগস্টে একই প্রকল্প থেকে বরাদ্ধকৃত মুরগী পালনকারী সুফলভোগী খামারিদের ট্রেনিংয়ের পুরো অর্থ লোপাট করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও এলডিপিসহ অন্যান্য প্রকল্পের চলমান বিভিন্ন কর্মসূচীর টাকা আত্মসাতের অভিযোগও তার বিরুদ্ধে রয়েছে। সরকারি ভ্যাটেনারি ঔষধ অন্যত্র বিক্রয়, সরকারি মালামাল বিতরণের নামে অর্থ আদায় ও হতদরিদ্রের মাঝে প্রকল্পের মালামাল বিতরণে জালিয়াতি ও এলএফএফ প্রকল্পের কর্মচারীদের টাইমসিটে সাইন করে ঘুষ দাবি করেছেন এই কর্মকর্তা, এমন অভিযোগও পাওয়া যায়।

এমনকি ঘুষ না দেয়ায় প্রকল্প থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন গোবিন্দগঞ্জ ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা এলএসপি কর্মকর্তা সজীবকে। যার বেতন ভাতা ও সরকারি মূল্যবান প্যাড আত্মসাৎ করেন তিনি। ইব্রাহিম মিয়ার দুর্নীতিতে সহযোগী হিসেবে কাজ করেন ভ্যাটেনারী সার্জন ইমান আল হোসাইন।

এদিকে, তিনদিনের ট্রেনিং একদিন একঘন্টা করিয়ে অর্থ লোপাটের বিষয়টি জানাজানি হলে খামারিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে উঠান বৈঠক করে তিনদিন ট্রেনিং করিয়েছেন, এমনটি বলতে খামারিদের বলে আসেন।

জাউয়া ইউনিয়নের এলএফএফ কর্মকর্তা ইমান আলী জানান, আমাদের ইউনিয়নের লোকজন একদিন ট্রেনিং করে ৪৫০টাকা করে পেয়েছেন। মুরগী খামারিদের ট্রেনিংয়ের বিষয়টা আমরা জানিনা।

মাসুদ নামের আরেক খামারী জানান, সরকারি গোখাদ্য নিতেও ঘুষ দিতে হয়। গাড়ি ভাড়ার নামে আমার কাছ থেকে তিনি সেই গোখাদ্যের টাকা উদ্ধার করেন। এমনকি সরকারি পশু চিকিৎসার সকল ঔষধপত্র পয়সা ছাড়া বিনামূল্যে দেন না। অথচ প্রধানমন্ত্রী সাধারণ মানুষের জন্য বিনামূল্যে দেবার ব্যবস্থা রেখেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অফিসের এক ব্যক্তি জানান, সরকারি লক্ষ লক্ষ টাকার ঔষধ গোপনে ভ্যাটেনারী দোকানে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

আব্দুল কাদির নামের আরেক দরিদ্র কৃষক জানান, কিছুদিন আগে আমার গাভীটার ফুলা বেমার ছিল। প্রাণিসম্পদ অফিসে গেলে তারা ৩হাজার৫শ টাকা দাবি করেন। এমনকি অফিসের কোন কর্মচারী টাকা ছাড়া কোন ধরনের সহায়তা করতে অস্বীকৃতি জানান।

ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরের জামান চৌধুরী জানান, তিনি চলে গেছেন আমি জানিনা। তাছাড়া উনার কর্মকাণ্ড নীতি বহির্ভূত হলে উনার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবেন।

এব্যাপারে ছাতক উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. ইব্রাহিম মিয়াকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App