সিলেটে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ নেতা কাউন্সিলর নির্বাচিত
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৩, ০২:১৪ এএম
বিএনেপি। ফাইল ছবি
জামানত হারালেন ৫ মেয়র প্রার্থী
সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে বিএনপি থেকে আজীবন বহিষ্কৃত ৭ নেতা কাউন্সিলর পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৬ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে একজন নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যদিকে নির্বাচনে ৫ মেয়র প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। আবার আলোচনায় না থেকেও ভোটের মাঠে চমক দেখিয়েছেন মেয়র প্রার্থী শাহজাহান মাস্টার। আর নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন নগরভবনের কর্মকর্তারা।
গত বুধবারের সিসিক নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত যে সাত নেতা কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন তারা হলেন- সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ১নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর সৈয়দ তৌফিকুল হাদী, মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম, ১৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য ও বর্তমান কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মুমিন, ১৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য ও বর্তমান কাউন্সিলর এ বি এম জিল্লুর রহমান, ২১নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কাউন্সিলর আব্দুল রকিব তুহিন, ৩৯নং ওয়ার্ডে নির্বাচিত হয়েছেন জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন এবং ৪নং ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হয়েছেন মহানগর মহিলা দলের সহসভাপতি মোছা. রুহেনা খানম মুক্তা।
এদিকে সিলেটে জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে ৫ মেয়র প্রার্থীর। জামানত হারানো মেয়র প্রার্থীরা হলেন- ইসলামী আন্দোলনের মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা), আব্দুল হানিফ কুটু (ঘোড়া), মোহাম্মদ ছালাউদ্দিন রিমন (ক্রিকেট ব্যাট), জহিরুল আলম (গোলাপ ফুল) ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা (হরিণ)। তবে আগেই ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মাহমুদুল হাসান ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার তথ্যমতে, জামানত রক্ষায় প্রার্থীদের মোট ভোটের ৮ ভাগের এক ভাগ পেতে হয়। সে হিসেবে পাঁচজন প্রার্থী জামানত রক্ষার মতো ভোট পাননি।
এদিকে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চমক দেখিয়েছেন শাহজাহান মাস্টার। ছিল না তার নেতাকর্মীর বহর। একা একা নগরীর অলিগলি ঘুরে বেড়িয়েছিলেন। ভোট চেয়েছিলেন সাইকেল চালিয়ে। কর্মী ও অর্থ না থাকায় তিনি নিজেই লাগিয়েছেন নিজের পোস্টার। মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আলোচনায় ছিলেন না তিনি। কিন্তু ভোটের দিন চমক দেখালেন তিনি। ৮ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে তিনি হয়েছেন তৃতীয়। নির্বাচনে বাস প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মো. শাহজাহান মিয়া ওরফে শাহজাহান মাস্টার এখন টক অব দ্য সিলেট। সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজিত হলেও সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। বুধবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোটসংখ্যার দিক থেকে তিনি হয়েছেন তৃতীয়।
শাহজাহান মিয়ার প্রাপ্ত ভোট ২৯ হাজার ৬৮৮। শাহজাহান মিয়া প্রথমে ছিলেন হোটেল কর্মচারী। এরপর সেখান থেকে মোমবাতি ও স্যালাইন বিক্রির কাজ করেন। তারপর সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আচমকা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে সিসিক কর্মকর্তারা সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। মেয়রের চালিবন্দরস্থ বাসভবনে তারা সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। বিশাল ব্যবধানে জয় পেয়ে সিলেটের মেয়র নির্বাচিত হওয়ায় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান তারা। তার নেতৃত্বে উন্নয়নের নতুন যুগে প্রবেশ করবে সিলেট সিটি করপোরেশন- এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন নগরভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। জবাবে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী তাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ বদরুল হক, সচিব ফাহিমা ইয়াসমিন, প্রকৌ. নূর আজিজুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আলী আকবর, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান প্রমুখ।