×

সারাদেশ

হাত খরচের টাকা জোগাড় করতে অটো চালককে খুন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৩, ০৯:৩৬ পিএম

হাত খরচের টাকা জোগাড় করতে অটো চালককে খুন
হাত খরচের টাকা জোগাড় করতে তিন বন্ধু মিলে অটোরিকশা চালক মনির হোসেন ওরফে ফয়সালকে (১৭) হত্যা করেছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে পিবিআই এর হাতে গ্রেপ্তার আলী আকবর (২২) ও রাকাত (১৮)। বৃহস্পতিবার (২২ জুন) বিকেলে কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদুল আমিনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তারা। এর আগে বুধবার (২১ জুন) দিবাগত রাত ১টার দিকে কটিয়াদী উপজেলার মন্ডলভোগ এলাকা থেকে আলী আকবরকে ও বৃহস্পতিবার (২২ জুন) ভোরে বাজিতপুর উপজেলার কুতুবপুর এলাকা থেকে রাকাতকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। গ্রেপ্তার আসামি আলি আকবর কটিয়াদী উপজেলার পশ্চিম মন্ডলভোগ এলাকার ইমতিয়াজের ছেলে ও রাকাত বাজিতপুর উপজেলার কুতুবপুর এলাকার মৃত আঃ কুদ্দুসের ছেলে। কিশোরগঞ্জ পিবিআই এর পরিদর্শক মোঃ সাজ্জাদ রোমন এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আলী আকবর, কাউসার ও রাকাত সমবয়সী ও বন্ধু। আলী আকবরের কটিয়াদী উপজেলার মাগুরা বাজারে একটি সেলুন রয়েছে। ওই সেলুনে বসে তারা পরিকল্পনা করে একটি অটো রিকশা ছিনতাইয়ের কারণ তাদের হাতে খরচ করার টাকা নাই। তাদের টাকার দরকার। পরিকল্পনা অনুযায়, গত বছরের ২৯ নভেম্বর ওরা বাজিতপুর উপজেলার সরারচর বাজারে ওয়াজ শুনতে যায়। ওয়াজ শুনে সন্ধ্যা ৬টার দিকে সরারচর বাজার অটোস্ট্যান্ড থেকে কাউসার একটি অটো রিকশা ২শ টাকায় ভাড়া করে। পরে অটো চালকের ডান পাশে রাকাত ও বাম পাশে আলী আকবর এবং পিছনের ছিটে কাউসার বসে উজানচরের দিকে যাওয়ার জন্য বলেন।উজানচর যাওয়ার মাঝ পথে বাজিতপুর উপজেলার বাংলাবাজার পৌছালে তারা অটো চালককে গাড়ি ঘুরাইয়া পুনরায় সরারচরের দিকে যাওয়ার জন্য বলেন। পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী-বাজিতপুর উপজেলার সরারচর বিদ্যুৎ সাবস্টেশনের কাছে তালতলা আসা মাত্রই পিছন থেকে কাউছারের সাথে থাকা রশি দিয়া অটো চালক মনির হোসেনের গলায় রশি দিয়ে টাইট করে পেচিয়ে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে তিন বন্ধু মিলে তাল তলার নীচে রাস্তার ঢালে অটো চালক মনিরের লাশ ফেলে দেয়। তারপর রাকাত অটো চালিয়ে ব্রাহ্মন গাঁও নয়াবাজারের একটি গ্যারেজে চার্জে দিয়ে যার যার মত বাড়িতে চলে যায়। হত্যাকাণ্ডের পর দিন আলী আকবর, কাউসার ও রাকাত গ্যারেজ থেকে অটো রিকশা নিয়ে বাজিতপুর উপজেলার দুম্মাপুর এলাকায় সাদ্দামের ভাঙ্গারীর দোকানে ১৫০০ টাকায় বিক্রি করে প্রাপ্ত টাকা সমবন্টন করে নেয়। অটো চালকের কাছ থেকে ছিনতাই করা মোবাইল নিয়ে আলী আকবর জুয়া খেলার মাঠে বিক্রি করে। পিবিআই এর পরিদর্শক মোঃ সাজ্জাদ রোমন আরও জানান, ভাড়া মারার জন্য অটো রিকশা নিয়ে বের হবার পর মনির হোসেন বাড়ি না ফিরলে খোজাখুজি করতে থাকে তার পরিবারের সদস্যরা। পরে গত বছরের ৩০ নভেম্বর লোকমুখে শুনতে পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মনিরের লাশ সনাক্ত করে বাবা সাইফুল ইসলাম। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত বছরের ১ ডিসেম্বর নিহত মনির হোসেনের বাবার অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাজিতপুর থানায় একটি হত্যা মামলা রজু হয়। পরে বাজিতপুর থানার পরিদর্শক মোঃ শফিউল ইসলাম চলতি বছরের ২৩ মে পর্যন্ত তদন্ত করেন। পরিদর্শক মোঃ সাজ্জাদ রোমন জানান, মামলাটি রুজু হবার পর থেকেই আমরা ছায়া তদন্ত করতে থাকি। পরে চলতি বছরের ২৪ মে পিবিআই সদর দপ্তরের নির্দেশে মামলাটি আমরা গ্রহণ করি। আমাদের তদন্তে বেরিয়ে আসে তিন বন্ধু আলী আকবর, কাউসার ও রাকাত অটো ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে অটো চালক মনিরকে হত্যা করে। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার (২২ জুন) বিকেলে গ্রেপ্তার আসামি আলী আকবর ও রাকাত আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App