×

সারাদেশ

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে ভোট দিলেন সিলু

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৩, ০২:১১ পিএম

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে ভোট দিলেন সিলু

ছবি: ভোরের কাগজ

উৎসাহ ও উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। বুধবার (২১ জুন) সকাল ৮টা থেকে নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের এক হাজার ১৫৩টি কক্ষে একযোগে শুরু হয় এই ভোটগ্রহণ।

নারী-পুরুষ, যুবক-যুবতী কিংবা বয়স্করাই শুধু নয় অসুস্থ ও প্রতিবন্ধীরাও কেন্দ্রে আসছেন ভোট দিতে। তাদেরই একজন আব্দুস সালাম সিলু (৪০)। নগরীর নগরীর ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের মালদা কলোনির আটকশি হাইস্কুল কেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন তিনি।

সরেজমিনে দেখা যায়, বুধবার ভোট গ্রহণের শুরুর দিকেই বৃদ্ধ মা তার ৪০ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে কেন্দ্রে আসেন৷ সঙ্গে ছিলেন সিলুর বোন রোকেয়া বেগম (৪৫)। তবে কেন্দ্রে প্রবেশের পরেই বাঁধে বিপত্তি। ভবনের তৃতীয় তলায় ভোটের কক্ষ হওয়ায় বিপাকে পড়েন স্বজনরা।

একপর্যায়ে ভোট না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে কেন্দ্র ত্যাগ করছিলেন তারা। খবর পেয়ে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসেন দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা। ৭/৮ জন আনসারের সহযোগিতায় দীর্ঘ লাইনের ভীড় ঠেলে তিন তলায় উঠে ভোট প্রদান করেন সিলু।

এ বিষয়ে আব্দুস সালাম সিলুর বোন রোকেয়া বেগম বলেন, আমার ভাই জন্মগত প্রতিবন্ধী। হুইল চেয়ারই তার একমাত্র ভরসা। সকালেই মা ও ভাইকে নিয়ে ভোট দিতে আসছি। তিন তলায় উঠতে হবে দেখে আমি ও মা ভোট দিয়ে এসেছি।

তিনি আরো বলেন, হুইলচেয়ারে করে ভাইকে তিন তলায় উঠা অনেক কষ্টের, আমাদের জন্য তো অসম্ভব ছিল। তাই ভোট না দিয়েই তাকে নিয়ে বাসায় ফিরিয়ে যাচ্ছিলাম। তবে শেষ পর্যন্ত আনসার সদস্যরা সহযোগিতা করেছেন৷ প্রশাসনের আন্তরিকতা আমার খুবই ভালো লেগেছে। প্রশাসন না থাকলে আমার ভাই ভোটই দিতে পারতো না। ভোটের পরিবেশ খুবই ভালো লাগছে। আনসার সদস্যের এমন আন্তরিকতার চিত্র দেখে অন্য ভোটারাও মুগ্ধ হন।

রাজশাহী আনসার-ভিডিপির জেলা কমান্ডেন্ট রাকিবুল ইসলামসহ একটি টিম সিলুকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, আনসার-ভিডিপির সদস্যরা ভোটারদের বিষয়ে খুবই আন্তরিক৷ আন্তরিকতার সঙ্গে আমরা কাজ করছি। সকল আনসার সদস্যকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া আছে।

সিলু প্রতিবন্ধী হওয়ার তিন তলায় উঠে ভোট দিতে না পেরে চলে যাচ্ছিল। বিষয়টি আমরা বুঝতে পেরেই তাকে সহযোগিতা করি। সিলু স্বাচ্ছন্দ্যেই ভোট দিতে পেরেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, বুধবার সকাল ৮টা থেকে নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে একযোগে চলছে এই ভোটগ্রহণ। নগরীর ১৫৫টি ভোটকেন্দ্রের এক হাজার ১৫৩টি কক্ষে চলমান ভোটগ্রহণ বিরতিহীনভাবে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এবারই প্রথম রাসিকের সব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে চলছে ভোটগ্রহণ।

৯৬ দশমিক ৭২ বর্গকিলোমিটারের এই নগরীতে মোট ভোটার রয়েছে তিন লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৭১ হাজার ১৬৭ জন। আর নারী ভোটার এক লাখ ৮০ হাজার ৮০৯ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর ভোটার ৬ জন। এবার নতুন ভোটার রয়েছেন ৩০ হাজার ১৫৭ জন।

নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত ও ১৪ দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন (নৌকা), জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত সাইফুল ইসলাম স্বপন (লাঙ্গল), ও জাকের পার্টি মনোনীত লতিফ আনোয়ার (গোলাপফুল)।

এছাড়াও ২৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১১১ জন ও ১০টি সংরক্ষিত আসনে মহিলা কাউন্সিলর হিসেবে লড়ছেন ৪৬ জন প্রার্থী। এদিকে নগরীর ২০নং ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন রবিউল ইসলাম।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App