×

সারাদেশ

চলছে সিলেট ও রাজশাহী সিটিতে ভোটগ্রহণ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৩, ০৮:০১ এএম

চলছে সিলেট ও রাজশাহী সিটিতে ভোটগ্রহণ

ছবি: সংগৃহীত

সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ভোট শুরু হয়েছে। আজ বুধবার (২১ জুন) সকাল ৮টায় এ ভোটগ্রহণ শুরু হয়। তিন সিটিতে সুষ্ঠু নির্বাচনের পর এবার সিলেট ও রাজশাহী সিটির ভোট কেমন হয়, সবার দৃষ্টি এখন সেদিকে। আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এই দুই সিটি করপোরেশনের ভোটই হবে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য শেষ পরীক্ষা। তাই এ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে ইসি সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হবে বলে নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়েছে। এদিকে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় মেয়র পদে দুই সিটিতেই আওয়ামী লীগের বিজয় প্রায় নিশ্চিত বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন। তবে শেষ মুহূর্তে জাতীয় পার্টি সরকারবিরোধী ভোট টানার চেষ্টা করছে।

সূত্র জানায়, সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদে তেমন উত্তেজনা না থাকলেও কাউন্সিলর পদের প্রার্থীদের মধ্যে বিরাজ করছে তুমুল উত্তেজনা। কারণ, মেয়র পদে বিএনপি ও জামায়াত অংশ না নিলেও কাউন্সিলর পদে এই দুই দলসহ বিভিন্ন দলের প্রার্থী রয়েছে। এ ছাড়া প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই সরকারি দল আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থীও। তাই মূলত কাউন্সিলর প্রার্থীদের কারণেই দুই সিটির ভোট হবে উৎসবমুখর। তারা বাড়ি গিয়ে ভোটারদের কেন্দ্রে আনার চেষ্টা করবেন।

সোমবার নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিনে সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীরা বিশাল শোডাউন করেছেন। তার আগে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণায়ও তারা নগরবাসীকে বিভিন্ন সেবা বৃদ্ধি ও ব্যাপক উন্নয়নের আশ্বাস দিয়েছেন।

অন্যান্য প্রার্থীদের তুলনায় বেশি যোগ্য প্রার্থী দেওয়া, দল ক্ষমতায় থাকায় এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন ও দলের অনেক নেতাকর্মী নৌকার পক্ষে মাঠে সক্রিয় থাকায় দুই সিটিতেই আওয়ামী লীগের বিজয় প্রায় নিশ্চিত বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থীসহ অন্যান্য মেয়র প্রার্থীরা নিজ নিজ সাধ্য মতো ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছেন। তাদের চেষ্টা আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মতো এা জোরালো নয় বলে দুই সিটিবাসীদের মধ্যে অনেকেই মনে করছেন। তবে দুই সিটিতে শেষ মুহূর্তে এসে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থীরা বিএনপি-জামায়াতসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন দলের ভোট টানার চেষ্টা করছেন। এ চেষ্টায় সফল হতে পারলে ভোটের সমীকরণ পাল্টে যেতে পারে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছে। বিএনপি প্রকাশ্যে দলের নেতাকর্মীদের ভোট দিতে কেন্দ্রে যেতে মানা করলেও বাস্তবে ভেতরে ভেতরে কি করেন সেদিকে অনেকেরই দৃষ্টি রয়েছে।

এবার সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনে মেয়র প্রার্থীদের চেয়ে কাউন্সিলর প্রার্থীরা বেশি ভোটারদের কাছে গিয়েছেন এবং ভোট পাওয়ার জন্য নানা কৌশলে প্রচার চালিয়েছেন। এই কাউন্সিলর প্রার্থীদের কারণেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি আশানুরূপ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তারা ভোটারদের কেন্দ্রে নিতে বিভিন্ন কৌশল গ্রহণ করেছেন বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।

দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোট উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন করতে আগেই প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। শেষ মুহূর্তে প্রস্তুতি আরও জোরদার করেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এ নির্বাচন এখন গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিএনপি গাজীপুর, বরিশাল ও খুলনার মতো এ দুই সিটির নির্বাচনে অংশ না নিলেও এতে কেমন ভোট হয় সেদিকে তীক্ষ্ন নজর রাখছে। কারণ, এ নির্বাচনের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে তাদের পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও এ নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণ করতে পারবে। এ ছাড়া অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোও এ নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। দেশী-বিদেশী নির্বাচন পর্যবেক্ষকরাও এ নির্বাচনকে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে।

সূত্র জানায়, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট করতে ইসির নির্দেশে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপরতা ইতোমধ্যেই জোরদার করেছে। নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা হয়েছে সমগ্র সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকা। কেন্দ্রে কেন্দ্রে স্থাপন করা হচ্ছে সিসি ক্যামেরা। আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে বিশাল স্ক্রিনে ভোটের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

ইসি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দুই সিটি নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে বিজিপি, র‌্যাব, পুলিশ ও আনসার বাহিনী এলাকায় সক্রিয় থাকবে। বিজিবি ও র‌্যাব সার্বক্ষণিকভাবে টহল দেবে। পুলিশ ও আনসার বাহিনী কেন্দ্রে কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবে। আর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে ভ্রাম্যমাণ দায়িত্ব পালন করবেন পুলিশ বাহিনীও। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ ও সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন করে ফোর্স থাকবে। এভাবে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে থাকছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ত্রিস্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা বলয়।

এবার সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনে ভোট হবে ইভিএমে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনে এবার মেয়র পদে লড়ছেন ৪ জন। এ ছাড়া ৩০টি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১২ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৪৬ জন নির্বাচন করছেন। এই সিটিতে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন। রাজশাহী সিটি নির্বাচনে ১৫৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১৪৮ টিই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

বিএনপি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ না নিলেও দলটির নির্বাচনে অংশ না নিলেও রাজশাহীতে কাউন্সিলর পদে ১৬ জন স্থানীয় নেতা কাউন্সিলর পদে ভোট করছেন। এ ছাড়া জামায়াতেরও কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছে ৯ জন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App