×

সারাদেশ

চট্টগ্রামে ৩ খালের মাটি সরাতে চসিককে চিঠি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৩, ০৮:৩৬ পিএম

চট্টগ্রামে ৩ খালের মাটি সরাতে চসিককে চিঠি

ফাইল ছবি

বন্দরনগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজের জন্য খালের বাঁধ না সরানোয় জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করে এতদিন পর্যন্ত চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (চউক) দায়ী করে আসছিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) সংশ্লিষ্টরা। এবার উল্টো অভিযোগ আসছে চসিকের বিরুদ্ধে। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ শেষে নগরীর ৩ খাল থেকে মাটি না সরানোর অভিযোগ উঠেছে চসিকের বিরুদ্ধে। ফলে খাল সংলগ্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে জলাবদ্ধতা নিরসণ প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

এই ৩ খাল থেকে বাঁধ ও মাটি অপসারণের জন্য গত ফেব্রুয়ারি ও মার্চে চসিক মেয়র বরাবর চিঠি দিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মো. শাহ্ আলী। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় নগরীর হাজিপাড়া ব্রিজ থেকে আশেকানে আউলিয়া ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন শীতলঝর্ণা খাল, অনন্যা আবাসিক থেকে হাজিরপুল সংলগ্ন বামুনশাহী খাল এবং পাহাড়তলী শহীদ লেইন পুলিশ বিট ব্রিজ সংলগ্ন গয়নাছড়া খালে রিটেইনিং ওয়াল ও ব্রিজ নির্মাণের কাজ করে চসিক। প্রায় চার থেকে পাঁচ মাস আগে খালের রিটেইনিং ওয়াল ও ব্রিজ নির্মাণের কাজ করে চসিক। তবে রিটেইনিং ওয়াল ও ব্রিজ নির্মাণের কাজ শেষ হলেও এসব খাল থেকে মাটি উত্তোলন করছে না চসিক। ফলে এই তিনটি খাল সংলগ্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। টানা বর্ষা শুরুর আগে এসব বাঁধ অপসারণ করা না হলে এই ৩ এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক।

চসিক মেয়র বরাবর পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের তত্ত্বাবধানে চলমান রয়েছে। উক্ত প্রকল্পের শীতলঝর্ণা খালে হাজিপাড়া ব্রিজ হতে আশেকানে আউলিয়া ডিগ্রি কলেজ পর্যন্ত ৩২০ মিটার, বামুনশাহী খালের অনন্যা আবাসিক এলাকা হতে হাজিরপুল পর্যন্ত ৩০০ মিটার ও গয়নাছড়া খালের পাহাড়তলী শহীদ লেইন পুলিশ বিট ব্রিজ সংলগ্ন ২৯০ মিটার রিটেইনিং ওয়াল আপনাদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নির্মিত হয়েছে। উল্লিখিত খালসমূহে কাজ করার সময় খালের ভিতরে মাটি দিয়ে বাঁধ দেওয়া ও বেইস করার সময় উত্তোলনকৃত মাটি খালে রাখা হয়েছে। অত্র বিগ্রেডের প্রতিনিধি কতৃক মৌখিকভাবে বারংবার অপসারণ করার কথা বললে আপনাদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ হওয়ার পরও অপসারণ করবে মর্মে জানান। কাজ সমাপ্ত হওয়ার পরও অদ্যাবধি মাটি দিয়ে বাঁধ দেওয়া ও বেইস করার সময় উত্তোলনকৃত মাটি অপসারণ করেনি। এমতবস্থায় আসন্ন বর্ষা মৌসুমের পূর্বে মাটি দিয়ে বাঁধ দেওয়া ও বেইস করার সময় উত্তোলনকৃত মাটি অপসারণ না করা হলে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে ও জনভোগান্তি বৃদ্ধি পাবে।

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মো. শাহ আলী বলেন, যেসব খালে আমাদের কাজ শেষ সেসব খাল পরিষ্কার করে পানি চলাচলের জন্য উপযোগী করা হয়েছে, যাতে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে সেসব এলাকায় জলাবদ্ধতা না হয়। কিন্তু নগরীর গুরুত্বপূর্ণ তিনটি খালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ব্রিজ ও রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করেছে। ব্রিজ ও রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের সময় কাজের সুবিধার্থে মাটি দিয়ে বাঁধ দেয়া হয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার পর গত মার্চে আমরা তাদের চিঠি দিয়েছি মাটি অপসারণের জন্য। তিন মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত সেসব এলাকার খালের মাটি সিটি কর্পোরেশন এখনো পর্যন্ত অপসারণ করেনি। তিনি আরো বলেন, এমতবস্থায় আসন্ন বর্ষা মৌসুমের আগে মাটি দিয়ে বাঁধ দেয়া ও বেইজ করার সময় উত্তোলনকৃত মাটি অপসারণ না করা হলে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে। ফলে শীতল ঝর্ণা, বামুনশাহী ও গয়নাছড়া খাল সংলগ্ন এলাকায় পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম ভোরের কাগজকে বলেন, বিষয়টি আমাদের জানানোর পর আমরা ইঞ্জিনিয়ার নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে দেখে এসেছি। অতিরিক্ত শ্রমিক নিয়োগ করে মাটি সরিয়ে ফেলা হয়। এখন ব্রিজের নিচে কোনো মাটি নেই। অন্য জায়গায় মাটি থাকলে সেটি ব্রিজের কাজের কারণে হয়েছে বলাটা ভুল হবে। তারপরও খালে যদি পানি যাওয়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয় সিটি করপোরেশন সেটি পরিষ্কার করে দেবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App