×

সারাদেশ

বিয়ের দিন বরের পলায়ন, থানায় কনে!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৩, ১০:৪৩ পিএম

বিয়ের দিন বরের পলায়ন, থানায় কনে!

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের দেউলডাংরা গ্রামের বাসিন্দা মো. নজরুল ইসলামের ছেলে মো. জুবায়েল আহম্মেদের (২২) সঙ্গে পরিচয় হয় একই গ্রামের শফিকুল ইসলাম ভূইঁয়ার মেয়ের (২০) সঙ্গে। তাদের মধ্যে প্রেমের সূত্রে গত পাঁচ বছর ধরে গভীর সম্পর্ক চলে আসছে।

এ অবস্থায় ওই তরুণীর ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি হলে সেখানেই নিয়মিত যাতায়াত করত জুবায়ের। একপর্যায়ে একটি কোম্পানিতে জুবায়েরের চাকরিও হয়। পরে মেয়ে ও পরিবারের চাপের মুখে পড়ে বাধ্য হয় বিয়েতে। দুই পরিবারের সম্মতিতে শনিবার ছিল বিয়ের দিন-তারিখ। পূর্বনির্ধারিত তারিখেই বিয়ের সব আয়োজন সম্পন্ন করেন কনের বাবা। নিজেদের অতিথিরা খাবারের জন্য প্রস্তুত। বরের লোকজন এলেই খাওয়া-দাওয়া শুরু হবে। কনের পরিবারের অপেক্ষার প্রহরের মধ্যেই খবর আসল বরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

শেষ মুহূর্তে বরের মা এসে জানিয়ে দেন, ছেলে নিখোঁজ হওয়ায় এই বিয়ে হবে না। একথা বলে কনের পরিবারের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে চলে যান। ঠিক তখনই বিয়ের আসর থেকে কনে পরিবার ও স্থানীয় লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে থানায় এসে বরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ ঘটনায় বরের মা-বাবাসহ সাতজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এমন ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে।

থানায় গিয়ে দেখা যায়, লাল শাড়ি পরে বিয়ের আসর থেকেই চলে এসেছেন কনে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিয়ের প্রলোভনে জুবায়েল তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। পরে একপর্যায়ে বিয়ের কথা বললে আজ না, কাল বলে কালক্ষেপণ করে আসছিল জুবায়েল। পরে চাপের মুখে বিয়ে করতে রাজি হয়। এ ঘটনায় আর জীবন রাখা যায় না। তার পরও পরিবারের বাইরে আমি কিছুই করবো না। আমার সর্বনাশ করা ওই লোকটার বিচার চাই।

তরুণীর বাবা জানান, স্থানীয় সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বেশ কয়েকজন সদস্যের উপস্থিতিতে বিয়ের সিদ্ধান্ত হয়। তখন কত টাকার কাবিন, কতজন মেহমান যাবেন ইত্যাদি সব কিছু সম্পন্নও করা হয়। সব আয়োজন শেষে রাত আটটার দিকে বরের লোকজন আসার কথা থাকলেও প্রায় দুই ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও কেউ আসেনি।

স্থানীয় জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আবুল মনসুর ভুইয়া বলেন, আট লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে সব কিছু সম্পন্নের পরও বিয়ে বাড়িতে বর না যাওয়া খুবই দুঃখজনক। কনের পরিবার প্রায় ৪০০ লোকের খাওয়ার আয়োজন করেছিল। এটা কোনোভাবে মানা যায় না। এতে সমাজে কনে ও তার পরিবারকে হেয় করা হয়েছে। এর বিচার হওয়া প্রয়োজন।

নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি খুবই গুরুতর অপরাধ। একজন কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠোনো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App