×

সারাদেশ

বিল পরিশোধের দাবিতে খনি শ্রমিকদের অভিনব প্রতিবাদ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৩, ০৩:৫৮ পিএম

বিল পরিশোধের দাবিতে খনি শ্রমিকদের অভিনব প্রতিবাদ

ছবি: ভোরের কাগজ

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে মধ্যপাড়া খনিতে রেকর্ড পরিমাণ পাথর উৎপাদন করেও সময় মত বিল পাচ্ছে না উৎপাদন ঠিকাদার জিটিসি। গত মে মাসে রেকর্ড পরিমাণ ১ লাখ ৩৮ হাজার টন পাথর উত্তোলন করা হয়েছে। এর আগে কখনই একমাসে এতো বিপুল পরিমাণ পাথর উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি। বিগত দুই মাস ধরে উৎপাদন বিল না পাওয়ায় ৭০জন বিদেশী খনি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীসহ সাত শতাধিক দেশি খনি শ্রমিক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে জিটিসিকে।

এ অবস্থায় সময়মত উৎপাদিত পাথরের বিল পরিশোধের দাবিতে জিটিসি'র অধীনে কর্মরত খনি শ্রমিকরা দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে এক অভিনব প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে। শনিবার বেলা ৩টার দিকে এমজিএমসিএল প্রধান কার্যালয়ের সামনের চত্বরে ব্যানার টাঙ্গিয়ে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

এতে জিটিসি'র উপ-মহাব্যবস্থাপক মো: জাহিদ হোসেন, ব্যবস্থাপক মোকসেদুল সরকার মুকুলসহ সাত শতাধিক খনি শ্রমিক-কর্মচারী অংশ নেয়। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক উপ কমিটির সভাপতি ইসলামি চিন্তাবিদ খন্দকার গোলাম মওলা নকশেবন্দী ও আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সম্পাদক মাওলানা মো: খলিলুর রহমান সরকার।

এসময় শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন, খনি কর্তৃপক্ষ নগদ টাকায় পাথর বিক্রি করছে অথচ পাথর উত্তোলন বিল পরিশোধ করছে না। এতে করে খনি ভূগর্ভে স্টোপ উন্নয়ন ও কয়লা উত্তোলন বাধা গ্রস্থ হচ্ছে। এমজিএমসিএল এ একটি চক্র পাথর উত্তোলন বন্ধ করতে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। খনির উন্নয়ন এবং উৎপাদন বিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন শ্রমিকরা।

মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানী লিমিটেডের (এমজিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবু দাউদ মোঃ ফরিদুজ্জামান শনিবার মোবাইলফোনে ভোরের কাগজকে জানান-পাথর বিক্রি না হওয়ায় ঠিকাদারের বিল সময়মত দেওয়া যাচ্ছে না।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে মধ্যপাড়া খনি বাণিজ্যিক উৎপাদনে যায়। উৎপাদন শুরুর পর থেকে নানা প্রতিকুলতার কারণে পেট্রোবাংলা প্রতিদিন তিন শিফটে ৫ হাজার টন ল্যমাত্রার বিপরীতে এক শিফটে ৭-৮‘শ টনের বেশি পাথর উত্তোলন করতে পারেনি। এরফলে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত ৬ বছরে খনিটি লোকসান দিয়েছে প্রায় শত কোটি টাকা। এ অবস্থায় ২০১৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ৬ বছরের জন্য খনির উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয় জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়ামকে (জিটিসি)। বর্তমানে খনি ভূগর্ভে বিশ্বমানের অত্যাধুনিক মাইনিং ইক্যুইবমেন্ট বসানো হয়েছে। ইউরোপিয়ান সুদক্ষ প্রকৌশলীদল ও দক্ষ খনি শ্রমিক দিয়ে পাথর উত্তোলন কাজ চালানো হচ্ছে।

জিটিসির হাত ধরে খনিটি ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে প্রথমবারের মত লাভের মুখ দেখে। জিটিসি পূর্ণমাত্রায় পাথর উৎপাদন করায় টানা চার অর্থবছর থেকে মুনাফা করে আসছে খনিটি।

জিটিসির প্রথমদফা চুক্তির মেয়াদ শেষ হয় ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর। দ্বিতীয়দফা চুক্তির আওতায় ৬ বছরের জন্য ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর থেকে পাথর উৎপাদন করছে জিটিসি। ৬ বছরে প্রায় ১ হাজার ২৮০ কোটি টাকার বিনিময়ে ৮৮ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করে দিবে। জিটিসি সুষ্টুভাবে খনি পরিচালনা করতে পারলে একদিকে দেশের পাথরের চাহিদার অনেকটাই পুরন হবে, অপরদিকে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়সহ বেকার সমস্যারও অনেকটা সমাধান হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App