×
Icon ব্রেকিং
সৈয়দপুর বিমানবন্দরে লাইটিং সিস্টেমে ত্রুটির কারনে শন্ধ্যার পর বিমান ওঠানামা বন্ধ

সারাদেশ

দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিং

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৩, ০৬:৩১ পিএম

দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিং

ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালীর বাউফলসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে চলছে বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিং। এরমধ্যে বাউফলে লোডশেডিং সীমার বাইরে চলে গেছে। বাউফলের কোন কোন এলাকায় দিন রাত মিলিয়ে ৭-৮ ঘন্টাও বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে ক্ষুদ্র শিল্পে উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে কেনাবেচা কমে গেছে, অসহনীয় গড়মে শিশু বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ ও গবাদিপশুর মধ্যে নানা ধরণের রোগবালাই দেখা দিয়েছে। একই সাথে সাধারন মানুষ দুর্বিসহ যন্ত্রণার মধ্যে পড়েছেন। পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় জুন মাসে লোডশেডিং মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, বাউফলে পল্লী বিদ্যুতের ৩ হাজার ৬ কিলোমিটার বিদ্যুৎ সঞ্চালণ লাইন রয়েছে এবং ৫৭ কিলোমিটার গ্রীড লাইন রয়েছে। বাউফলে বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছে প্রায় ১ লাখ ১২ হাজার। বাউফলে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ২৫.৫ মেগাওয়াট কিন্তু বর্তমানে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে ৯ থেকে ১৩ মেগাওয়াট। যা ১৩টি ফিডের মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে সরবরাহ করা হচ্ছে। কোন কোন সময় চাহিদার অর্ধেকেরও কম বিদ্যুৎ পাওয়ায় লোডশেডিং চরম পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে। যতটুকু বিদ্যুৎ পাওয়া যায় তারমধ্যে হাসপাতাল, উপজেলা পরিষদ, থানা ইত্যাদি জরুরী সেবা সংস্থাগুলোতে আগে বিদ্যুৎ দিতে হচ্ছে। ফলে গ্রাহক পর্যায়ে লোডসেডিং কমানো যাচ্ছেনা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাউফল পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, পায়রা তাপ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডের মাধমে বাউফলসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে সরবরাহ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই জ্বালানির অভাবে পায়রার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের একটি ইউনিট বন্ধ করা হয়েছে। জুনের প্রথম সপ্তাহে বর্তমানে চলমান ৬৫০ মেগাওয়াট ইউনিটটিও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তখন গোটা দক্ষিণাঞ্চলেই ভয়াবহ লোডসেডিং হওয়ার আশংকা রয়েছে।

একটি সূত্র জানায়, পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল কাঁচামাল হচ্ছে কয়লা। কিন্তু ডলার সংকট এবং সিএমসি নামক একটি কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বকেয়া পরিশোধের আগে কয়লা আমদানী করতে চাচ্ছেন না। এরফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সংকট দেখা দিয়েছে। উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানটি জুনের শেষ দিকে কয়লা সরবরাহ করতে পারে বলে জানা গেছে। সেই হিসেবে গোটা দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের ভয়াবহতা জুন থেকে জুলাই পর্যন্ত লম্বা সময় হতে পারে।

অপর একটি সূত্র জানায়, পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপণের পূর্বে ভোলায় উৎপাদিত বিদ্যুৎ থেকে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে বাউফলের ধুলিয়া হয়ে গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। এরফলে ভোলা থেকে পাওয়া বিদ্যুৎ দিয়ে পটুয়াখালী জেলার অনেকাংশ কভারেজ করা যেত। কিন্তু পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালুর অনেক আগেই ভোলা থেকে সরবরাহ করা বিদ্যুতের সেই সাবমেরিন লাইন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পায়রায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যহত হওয়ায় আপদকালীন সময়ে জরুরি ভিত্তিতে ভোলায় উৎপাদিত বিদ্যুৎ থেকে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে বাউফল হয়ে গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারলে হয়তো পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেয়া যেত বলে বাউফলের ওয়াকিবহাল মহল মনে করছেন। তবে সে সুযোগও খুব ক্ষীণ বলে জানান পল্লী বিদ্যুতের ওই কর্মকর্তা।

এদিকে, প্রচন্ড গড়মে বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিংয়ের কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন বৈদ্যুতিক সরঞ্জমাদি। একটি মহল আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত দিনের সফলতা নিয়েও কটাক্ষ করে যাচ্ছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App