×

সারাদেশ

তৃণমূলে দ্বন্দ্ব-কোন্দলই আ.লীগের বড় চ্যালেঞ্জ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৩, ০৯:০৮ এএম

তৃণমূলে দ্বন্দ্ব-কোন্দলই আ.লীগের বড় চ্যালেঞ্জ

ছবি: সংগৃহীত

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পূর্বশত্রুতার জেরে গত ২ মে রাতে বরগুনায় শফিকুল ইসলাম পনু নামে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পনু বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা পতাকাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য। অভিযোগের তীর বিরোধী পক্ষ ইউপি সদস্য মোতাহার মৃধার দিকে। মৃধার নেতৃত্বে এর আগেও পনুর ওপর হামলা চালিয়েছিল তার সন্ত্রাসী বাহিনী। ৩০ এপ্রিল রাতে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর পশ্চিম বাজারে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসেনকে বোরকা পরিহিত তিনজন গুলি করে হত্যা করে।

নিহত জামাল হোসেনের পরিবারের দাবি- এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী মামলার ৪ নম্বর আসামি তিতাস উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিনুল ইসলাম ওরফে সোহেল শিকদার। গত বছরের শেষ দিকে ৩৯টি জেলা ও বিপুলসংখ্যক উপজেলায় সম্মেলন করেছে আওয়ামী লীগ। চলতি বছরের শুরুতেই কেন্দ্র থেকে নির্বাচনের জন্য ঐক্যবদ্ধ প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেয়া হলেও তৃণমূলের কোন্দল মেটানোই চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠেছে ক্ষমতাসীনদের। অভ্যন্তরীণ দ্ব›দ্ব-সংঘাতে জর্জরিত দলটি। নিজ দলের কোন্দলে খুনের ঘটনাও ঘটছে।

এক্ষেত্রে তৃণমূলের কোন্দল মেটানোই বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন ক্ষমতাসীনরা। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলে শৃঙ্খলা ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে আওয়ামী লীগ। দলটির শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে দলের তৃণমূলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে সংগঠনকে আরো সুসংহত করাকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। অভিযুক্তদের তালিকা করে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। দলীয়প্রধানের নির্দেশে অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন ও নেতাকর্মীদের মধ্যে দূরত্ব কমানোর লক্ষ্যেই তৃণমূল নেতাদের ঢাকায় ডেকে ডেকে এনে ধারাবাহিক বৈঠক করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। এছাড়া সংগঠনকে চাঙা করতে এবং নির্বাচনে মাঠ গোছানোর প্রক্রিয়া হিসেবে মেগাপ্রকল্পসহ সরকারের উন্নয়ন-সাফল্য তুলে ধরার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তবুও থামছে না কোন্দল। আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ঘিরেও কোন্দল স্পষ্ট হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার গাজীপুর সিটি নির্বাচনে নৌকার মাঝি আজমত উল্লার হারের পেছনে অভ্যন্তরীণ কোন্দলকেই প্রধান কারণ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। খুলনা ও সিলেট সিটিতে কোন্দল তেমন না থাকলেও বরিশাল ও রাজশাহীতে কোন্দলের কারণে দলীয়প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামছে না নেতাকর্মীরা।

অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত গাজীপুরে সাবেক মেয়র ও বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে অভাবনীয় জয় পেয়েছেন। হেরে গেছেন আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী আজমত। এছাড়া বরিশাল, রাজশাহীতেও অভ্যন্তরীণ কোন্দল রয়েছে। প্রকাশ্যেই অনেকে নৌকার বিরোধিতা করছেন। আবার বিদ্রোহীরাও শক্ত অবস্থানে রয়েছে। বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করায় বরিশালে সাদিক আবদুল্লাহকে ঘিরে একটি বলয় তৈরি হয়েছে। ওই বলয়কে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করানো দুরূহ ব্যাপার। কোন্দলমুক্ত নয় রাজশাহীও।

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার ও তার অনুসারীদের বাদ রেখেই রাসিক নির্বাচনে মহানগর আওয়ামী লীগকে দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। এসব কারণে দলীয় কোন্দল নিরসনে কাজ করছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি। অভিযুক্তদের তালিকা করে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ একটি ঐতিহ্যবাহী দল। কোন্দল কিছুটা থাকবে স্বাভাবিক। তা নিরসনে আমরা কাজ করছি।

সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, তৃণমূলে শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য কাজ করা হচ্ছে। ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা, স্বচ্ছ প্রতিযোগিতা করা, দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App