×

সারাদেশ

হাতপাখার মেয়র প্রার্থীর প্রচারণায় মাত্র ৯ জন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৩, ০৯:১৮ এএম

হাতপাখার মেয়র প্রার্থীর প্রচারণায় মাত্র ৯ জন

রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাত্তা না পেলেও রাজশাহীতে একের পর এক বিতর্ক সৃষ্টি করে চলেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। আসন্ন রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচন ইস্যুতে ‘দুমুখো নীতি’ অবলম্বন করে আবারো আলোচনায় সংগঠনটি। কয়েকজন নেতা মাঠে নামলেও ভোটের প্রচারণায় ৯ জনের বেশি কর্মী দেখা যায়নি। অবশ্য সংগঠনটির ব্যাপারে রাজনীতিবিদরা ছাড়াও অন্য শ্রেণি-পেশার মানুষও বিরূপ মন্তব্য করছেন। এদিকে এ সিটিতে মেয়র পদে বিএনপিসমর্থিত একজনের অংশ নেয়ার কথা উঠলেও তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন না বলে গতকাল বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, সম্প্রতি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাজশাহী মহানগরীর সভাপতি ও রাসিক নির্বাচন সমন্বয়কারী তারিফ উদ্দিন নগরীর ৩০ ওয়ার্ড থেকে তাদের অন্তত দুহাজার জনবল ভোটের মাঠে কাজ করবে বলে ঘোষণা দেন। তবে নগরী থেকে তিনি নিজেই লাপাত্তা ছিলেন বেশ কয়েকদিন। বাধ্য হয়ে ৯ জন নিয়ে প্রচারণা শুরু করেন মেয়র প্রার্থী মুরশিদ আলম ফারুকী। প্রচারণার ছবি তিনি নিজেই পাঠান গণমাধ্যমে। এ সময় তাদের এক নেতা সাংবাদিকদের সঙ্গে বিবাদে জড়ান। পরে ক্ষমা চান মহানগর সভাপতি তারিফ। সপ্তাহখানেক আগেও বাম দলের সমর্থন প্রশ্নে নীরব ভূমিকায় ছিল সংগঠনটি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করে বিতর্ক সৃষ্টি করেন সংগঠনটির নেতারা। এবার পুরো বিষয়টি খোলাসা করেছেন মেয়রপ্রার্থী মুরশিদ আলম ফারুকী।

আগের সূর পাল্টে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, বামদল-টামদল বুঝি না, আমরা সবারই ভোট আশাবাদী। কোনো দলের সঙ্গে আমাদের বিরোধিতা নাই। সব দলের কাছ থেকেই আমরা ভোট আশাবাদী। এ ব্যাপারে সংগঠনটির মহানগর সভাপতি তারিফ উদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফলে জানা যায়নি তার অবস্থান।

তবে তাদের এসব কাণ্ডকে নেতিবাচকভাবেই দেখছেন অনেকে। এ ব্যাপারে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ ভোরের কাগজকে বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বর্তমান কর্তৃত্ববাদী অপশাসনকে বৈধতা দিতেই মাঠে নামে সরকারের সঙ্গে যোগসাজশ করে। বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলের প্রতিটি স্থানীয় ও জাতীয় তথাকথিত নির্বাচনে তারা অংশ নিয়ে এ কথার প্রমাণ দিয়েছে। আমার মনে হয়, এবার এ সমীকরণে আরো কিছু খেলা যুক্ত হবে। কোনো সিটিতে জয়লাভ করার ন্যূনতম যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও তাদের একটিতে জয় দেখানো হতে পারে। যাতে আগামীর একতরফা প্রহসনের নির্বাচন আয়োজনে সঙ্গী পাওয়া যায়। রাজশাহী এডভোকেট বার এসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তৌফিক পারভেজ জাহেদী ভোরের কাগজকে বলেন, এরা গণনার মধ্যেই পড়ে না। আওয়ামী লীগের পরামর্শে নির্বাচনে নেমেছে হাতপাখা। এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মাহফুজুর রহমান এহসান ভোরের কাগজকে বলেন, হাতপাখা প্রতীক ও সংগঠনের পরিচিতি ঘটাতে চরমোনাই পীরের এ দল ভোটে এসেছে। কৌশলে জনসমর্থন তৈরি ও আলোচনায় আসার জন্য তারা আবোলতাবোল বকছে। তাদের এসব কাণ্ড জনগণের মাঝে কোনো প্রভাব ফেলবে না।

এদিকে নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির সাবেক নেতা সাহিদ হাসানের প্রার্থী হওয়ার গুঞ্জন উঠলেও শেষ পর্যন্ত ভোট না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, বিএনপির অনেক কেন্দ্রীয় নেতা আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। আসন্ন সিটি নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হবে না। নির্বাচন প্রশ্নে বিএনপির নীতিগত সিদ্ধান্তের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। এদিন বিকালে সাহিদ হাসান ভোরের কাগজকে বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। সার্বিক পরিবেশ-পরিস্থিতি চিন্তা করে নির্বাচনে অংশ নেব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটাই সবশেষ সিদ্ধান্ত। সাহিদ সরে আসায় মেয়রপ্রার্থী হচ্ছেন তিনজন। আওয়ামী লীগ মনোনীত এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ছাড়া জাতীয় পার্টি থেকে অংশ নিচ্ছেন দলটির মহানগর কমিটির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম স্বপন। অন্যজন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুরশিদ আলম ফারুকী। এমতাবস্থায় বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সাহিদ হাসানও নির্বাচন থেকে সরে আসায় রাজশাহী সিটিতে ক্ষীণ প্রতিদ্বন্দ্বতার সম্ভাবনাও রইল না। আওয়ামী লীগের জয়ের পথ আরো সহজ হয়ে গেল বলে তাদের ধারণা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App