×

সারাদেশ

সড়ক যেন ধানের চাতাল বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৩, ০৯:৩৩ এএম

সড়ক যেন ধানের চাতাল বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি

মহাসড়কের যেখানে সেখানে চলছে মাঠ থেকে কেটে আনা পাকা ধান ও খড় শুকানোর কাজ। ধান-খড় শুকানোর কারণে সড়কটি এখন যেন চাতালে পরিণত হয়েছে। রাজশাহী হয়ে ঢাকা যাতায়াতের মহাসড়কসহ উপজেলার গ্রামীণ সড়কেও ধান শুকানোর মহোৎসব চলছে। এতে বিড়ম্বনায় পড়ছে যানবাহন চালক ও পথচারী। ঝুঁকি বাড়ছে যানবাহন চলাচলেও।

এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি- পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বছর বোরো মৌসুমে ( মে-জুন মাস) সড়কটি আশপাশের গ্রামের কৃষক-শ্রমিকদের দখলে থাকে। কেউ জমির ধান কেটে আবার কেউ এলাকার বাইরে থেকে কাটা ধান এনে শুকানোর জন্য সড়ক ব্যবহার করেন। আবার কেউ মাড়াই ও খড় শুকানোর কাজেও ব্যবহার করেন। এতে যানবাহনের চাকা এবং বিভিন্ন যন্ত্রাংশে ফসল জড়িয়ে গাড়ির যেমন ধীরগতি হচ্ছে, তেমনি দুর্ঘটনাও ঘটছে। পাশাপাশি সময়ের অপচয় হচ্ছে। মাইক্রোবাসের চালক মিন্টু আলী বলেন, ধান কাটা মাড়াই মৌসুমে ঝুঁকি নিয়েই সড়কে চলাচল করতে হয়। কখনো কখনো দুর্ঘটনায় পড়তে হয়। ট্রাকচালক মাহাতাব আলী বলেন, ধানের ভেজা খড়ের ওপর দিয়ে ট্রাক চালানো খুব ঝুঁকিপূর্ণ। নির্দিষ্ট গতিতে গাড়ি চালানোও যাচ্ছে না।

বাস চালক ইন্তাজ আলী বলেন, সড়কের অর্ধেক অংশজুড়ে ধান-খড় শুকাতে দেয়া হচ্ছে। ধান নেড়ে দেয়ার সময় হর্ন দিলেও শোনে না। নিষেধ করলে উল্টাপাল্টা কথা বলে। মোটরবাইক চালক আব্দুল হালিম বলেন, সড়কে চলার সময় বাস-ট্রাক গা ঘেঁষে চলে যাচ্ছে। এতে জীবনের ঝুঁকি বাড়ছে। কৃষকরা জানান, পাকা সড়কে তাড়াতাড়ি ধান-খড় শুকানো যায়। প্রতি বছর তারা সেখানে ধান শুকিয়ে থাকেন। ধান-খড় শুকানোর জায়গা সংকট থাকার কারণে সড়কগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে।

দুই বছরের হিসাবে উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু ও শিক্ষার্থীসহ ১৮ জন মারা গেছে । চলতি মাসের ১৫ মে পর্যন্ত মারা গেছে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ ৫ জন। গুরুতর আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন। বেশি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে টেম্পো, অটোরিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেল আরোহীরা। বাঘা থানার ওসি খায়রুল ইসলাম জানান, সড়কে ওইসব কাজ করলে যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি বাড়ে। দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বেশি থাকে। এসব বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আখতার বলেন, সড়কে ধান-খড় শুকানো ও মাড়াই বন্ধে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লায়েব উদ্দীন লাভলু বলেন, সচেতনতার জন্য কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। না শুনলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। রাজশাহী সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শাহ মো. আশিফ বলেন, সড়কে ধান-খড় শুকানো ও মাড়াই ছাড়াও জনস্বার্থ বিঘিœত কোনো কাজই করা যাবে না। সড়কে চলতে গিয়ে বিষয়টি আমার নজরে এলে কৃষকদের নিষেধ করে সচেতন করার চেষ্টা করেছি। তবে সড়ক বিভাগ থেকে নিষেধ করে মাইকিংসহ স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ করে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান এই প্রকৌশলী।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App