×

সারাদেশ

গণপরিবহনসহ গ্যাস সিলিন্ডারের গলাকাটা দাম!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৩, ০১:৫০ এএম

গণপরিবহনসহ গ্যাস সিলিন্ডারের গলাকাটা দাম!
গণপরিবহনসহ গ্যাস সিলিন্ডারের গলাকাটা দাম!
গণপরিবহনসহ গ্যাস সিলিন্ডারের গলাকাটা দাম!
গণপরিবহনসহ গ্যাস সিলিন্ডারের গলাকাটা দাম!

কক্সবাজারের মহেশখালী এলএনজির (তরল প্রাকৃতিক গ্যাস) টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় চট্টগ্রামে একশ্রেনীর অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে সাধারন নাগরিকদের পকেট কাটা শুরু করেছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রামে সিএনজিনির্ভর গণপরিবহনে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় শুরু করে দিয়েছে। পাশাপাশি, চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকার দোকানে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার, গ্যাসের চুলা, বৈদ্যুতিক চুলা, কেরোসিনের স্টোভসহ কেরোসিনের দামও রাখছে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি।

চট্টগ্রাম নগরীর জুবিলী রোড, এনায়েত বাজার, ষোলশহর, রেয়াজ উদ্দিন বাজার, গোলাম এঞ মার্কটসহ বিভিন্ন বাজারের দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব পণ্যের কোন ঘাটতি নেই। কিন্তু সুযোগ পেয়েই পরিবহন ব্যবসায়ীদের মত অন্য ব্যবসায়ীরাও এই দূর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যেও বিবেকহীনভাবে সাধারণ নাগরিকদের কাছ থেকে অনেক বেশি পরিমান টাকা হাতিয়ে নেয়ার কৌশলে নেমেছে। সাধারন নাগরিকরাও বাধ্য হচ্ছেন অতিরিক্ত দামে এসব পণ্য কিনতে। হোটেল- রেস্তোরা মালিকরাও এই সুযোগে খাবারের দাম বেশি নিচ্ছে ক্রেতাদের কাছ থেকে।

বিদ্যুৎ চালিত রাইস কুকার, ওভেন, কেরোসিনের ষ্টোভ, এলপিজি (তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস) ভর্তি সিলিন্ডারের অতিরিক্ত দাম নিয়ে ব্যবসায়ীরা যেনো রীতিমতো প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। তবে অভিযোগ পেয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সক্রিয় হয়ে উঠছেন এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে।

প্রসঙ্গত, ঘূর্ণিঝড় মোকার কারণে মহেশখালী এলএনজি টার্মিনালের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হওয়ায় চট্টগ্রাম শহরে দেখা দিয়েছে গ্যাসের তীব্র সংকট। কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আরো কয়েকদিন এই সংকট বিদ্যমান থাকবে। এই সুযোগে কারসাজি করে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে ফেলেছে একটি সিন্ডিকেট। অথচ সরকার নির্ধারিত ১২ কেজি এলপিজি গ্যাসের মূল্য ১১৭৬ টাকা। সিলিন্ডারসহ সাধারণ সময়ে এই দাম থাকে ১৬০০-২০০০ টাকার মধ্যে। কিন্তু রবিবার চট্টগ্রামের ষোলশহর রেলস্টেশন সংলগ্ন তাহের স্টোরে গিয়ে দেখা যায় সিলিন্ডার সহ গ্যাস বিক্রি হচ্ছে ৩০০০ হাজার টাকায়। পাশের দোকান সোহেল স্টোরে দেখা যায় গ্যাসের সাথে চুলা কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। পুরো সেট বিক্রি হচ্ছে ৪৫০০ টাকায়।

এমন সব অভিযোগ পেয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্তের নেতৃত্বে একটি টিম রবিবার রাতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে তার প্রমান পেয়েছেন। ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত জানান, ষোলশহরে তাহের স্টোরকে ২০ হাজার ও সোহেল স্টোরকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এরপর নগরের এনায়েত বাজারে এসে দেখা যায় অধিকাংশ দোকানে গ্যাস বিক্রি হচ্ছে ২৫০০-৩০০০ টাকায়। সেখানে কিচেন ট্রেডার্স কে ১০ হাজার ও আরো তিনটি দোকানকে ১৩ হাজার টাকা জরিমানা ও সতর্ক করা হয়। সর্বমোট ছয়টি দোকানে ৪৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এসময় বেশির ভাগ দোকানদার অভিযোগ করেন ডিলাররা দাম বেশী নিচ্ছেন। তারা সিলিন্ডার প্রতি ২২০০-২৩০০ টাকা নিচ্ছেন। এসময় এসকল অসাধু ডিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে কর্তব্যরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত। তিনি বলেন, এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান আরো জোরদার করা হবে। এ অভিযানের সময় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সদস্যরাও সহযোগিতা করেছেন।

এদিকে, গ্যাস সংকটের অজুহাত দেখিয়ে নগরীর বিভিন্ন রুটে চলাচলকারি টেম্পো, টমটম, সিএনজি চালিত অটোরিক্সাও সাধারণ সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া, অনেক ক্ষেত্রে দ্বিগুণেরও বেশি ভাড়া আদায় করছে। যেমন, কোতোয়ালী মোড় থেকে চকবাজার পর্যন্ত চলাচলকারি টমটম চালক দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছেন বলে অভিযোগ এসেছে। শুধু ওই এলাকায় নয়টি নগরীর বিভিন্ন রুটে জ্বালানি তেল ব্যাবহার করে এমন টেম্পুগুলোও সাধারণ সময়ে যে ভাড়া নিতো শনিবার ও রবিবার তার চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছে বলে বিভিন্ন যাত্রী অভিযোগ করেছেন। এই নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে ড্রাইভার-হেলপারের ঝগড়া বেধে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এই নৈরাজ্য দূর করতে জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন অনেক যাত্রী।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App