×

সারাদেশ

ঝুঁকিতে ডালচর, ঘাসিয়ার চর ও নিঝুম দ্বীপের মানুষ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৩, ০৯:০৬ পিএম

ঝুঁকিতে ডালচর, ঘাসিয়ার চর ও নিঝুম দ্বীপের মানুষ

ছবি: ভোরের কাগজ

ঘূর্ণিঝড় মোকার কারণে সবচেয়ে ঝুঁকি ও আতঙ্কে রয়েছে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ডালচর, ঘাসিয়ার চর ও নিঝুম দ্বীপের মানুষ। এর মধ্যে ঘাসিয়ার চরে ১৭ হাজার, ঢালচরে ৩৫ হাজার মানুষ বসবাস করে। কিন্তু এ দুটি চরে নেই বেড়িবাঁধ ও সাইক্লোন শেল্টার (আশ্রয়কেন্দ্র)। বেড়িবাঁধ না থাকায় নিঝুম দ্বীপে ৪০ হাজার মানুষ চরম ঝুঁকিতে রয়েছেন।

ঘাসিয়ার চরের ভূমিহীন নেতা ফখরুল ইসলাম জানান, এখানে কোন বেড়িবাঁধ নেই, নেই কোনো আশ্রয়কেন্দ্র। ঘূর্ণিঝড় মোকায় আল্লাহ ছাড়া আমাদের অন্য কোনো ভরসা নেই। এখন পর্যন্ত সরকারি কিংবা বেসরকারি কোনো লোকজনও এখানে সহযোগিতার বার্তা নিয়ে আসেনি। বহু আগ থেকেই আমরা বেড়িবাঁধ ও আশ্রয়কেন্দ্রের দাবি জানিয়ে আসছি। এখন চরের মানুষ খুবই আতঙ্কে রয়েছে।

চাল চরের বাসিন্দা আবদুল মজিদ জানান, ঘূর্ণিঝড়ে আমাদের কোনো সাপোর্ট নাই। আমাদের কোথাও গিয়ে মাথা গোজাঁর জায়গা নাই। বেড়িবাঁধ ও আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় প্রথমেই আমাদের চরে ঝড়ের আঘাত আনতে পারে।

নিঝুম দ্বীপের বাসিন্দা আবু সাঈদ জানান, এটি একটি জাতীয় উদ্যান, কিন্তু এখানে কোনো বেড়িবাঁধ নাই। জোয়ারের পানি বেড়ে গেলে নিঝুম দ্বীপ তলিয়ে যায়। এতে আমাদের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কাউসার খসরু জানান, হাতিয়ার ১১ ইউনিয়নের মধ্যে ৯টি মেঘনা নদীর দক্ষিণ পাশে। আর দুটি নোয়াখালীর মূল ভূখন্ডের সঙ্গে লাগানো উত্তর পাশে। প্রস্তুতি হিসেবে উপজেলায় ২৪২ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এতে ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ ও ৩০ হাজার গবাদি পশুকে আশ্রয় দেয়া যাবে। এ ছাড়া রেড় ক্রিসেন্ট সোসাইটির ৫০০ শত ও সিপিপির ১৭৭ ইউনিটের ৩৬০০ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন।

অন্যদিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেজবাহ উল আলম ভূঁইয়া জানান, ৮টি ইউনিয়নে ২৩০০ স্বেচ্ছাসেবী, ৬৯ জন গ্রামপুলিশ, ৯৬ জন ইউপি সদস্যসহ ২৪৬৫ জন স্বেচ্ছাসেবী, ৪৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১ লাখ ৫০ হাজার মানুষ ও ৩০ হাজার গবাদি পশুর আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি কেন্দ্রীয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও নোয়াখালী জেলা ইউনিট সেক্রেটারী শিহাব উদ্দিন শাহিন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকা মোকাবিলায় আমাদের পাঁচ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রয়েছে। আজ দুপুর থেকে উপকূলের বাসিন্দাদের আশ্রয়ণকেন্দ্রে গিয়ে আশ্রয় নিতে মাইকিং করে সতর্ক বার্তা দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। এবারের ঘূর্ণিঝড়ে নোয়াখালী অঞ্চলের বড় চ্যালেঞ্জ ভাসানচরে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দেয়া। গত বৃহস্পতিবার (১১ মে) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, জেলায় ৪৬৩ আশ্রয়কেন্দ্র, ৭ হাজার স্বেচ্ছাসেবক, ১১১ মেডিকেল টিম ও ৩টি মুজিব কেল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ৩৮২ মেট্রিক টন চাল ও ২৪৩ বান্ডিল ঢেউটিন মজুত করা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App