×

সারাদেশ

চোখের সামনেই দখল হচ্ছে সড়ক ও জনপথের জায়গা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৩, ০৩:২৫ পিএম

চোখের সামনেই দখল হচ্ছে সড়ক ও জনপথের জায়গা

ছবি: মাসুম বাদশাহ, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ)

দেখার যেন কেউ নেই!
হেমায়েতপুর-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক ঘেষে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা চোখের সামনে অবৈধভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিরবতায় জনমনে প্রশ্ন ওঠেছে। অবৈধ দখলের বিষয়ে ইতিপূর্বে গণমাধ্যমে ফলাও করে স্বচিত্র সংবাদ প্রচার হলেও কর্তৃপক্ষ কার্যকরী কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় এ সড়কের ভাষা শহিদ রফিক সেতুর পশ্চিম প্রান্তে ধল্লা পুলিশ বক্স সংলগ্ন দক্ষিণ ধল্লা এলাকায় অবৈধভাবে দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছে কতিপয় ক্ষমতাধর দখলদার। আইন অনুযায়ী কোনো সড়ক বা মহাসড়কের ৩০ ফুটের মধ্যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। কিন্তু সে আইনের প্রতি কোনো তোয়াক্কা না করে উল্টো অবৈধভাবে দখল করে চলছে স্থাপনা নির্মাণ। সরেজমিনে (৮ মে) দেখা গেছে, দক্ষিণ ধল্লা অ্যাস্পেয়ার গার্মেন্টস গেইট সংলগ্ন স্থানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা দখল করে কর্তৃপক্ষের কোন অনুমতি না নিয়েই আব্দুল আলী ও ফারুক হোসেন স্থায়ী দোকান ঘর নির্মাণ করছেন যা কিনা কর্তৃপক্ষের একেবারেই চোখের সামনে। এছাড়াও গত ৩ বছর পূর্বে স্থানীয় ফজলুর রহমান, লাবু মিয়া, সোবান শাহ, দিলরুবা, ইসমাইল হোসেন, মো. নান্টু, সাইফুল ইসলাম, সোহেল ও আলিমুদ্দিনও আঁধাপাকা ঘর নির্মাণ করে অন্যদের কাছে ভাড়া দিয়েছে। জানা গেছে, ১৯৯৫-৯৬ সালে হেমায়েতপুর-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক বর্ধিতকরণের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের পক্ষ থেকে সুদক্ষিরা মৌজা থেকে ৩.৬২ একর এবং ধল্লা মৌজা থেকে ৩.১৫ একরসহ মোট ৬.৭৭ একর বা ২০.৪৮ বিঘা (৬৭৭ শতাংশ) জমি অধিগ্রহণ করা হয়। যার এল.এস কেইস নং ৬/৯৫-৯৬। এরপর কয়েক দফায় সড়কটি বর্ধিত করা হলেও শহীদ রফিক সেতুর পশ্চিম প্রান্তের মিঃ খান ফুড থেকে অ্যাস্পেয়ার গার্মেন্টস গেইট পর্যন্ত স্থানটিতে অধিগ্রহণকৃত জায়গার বড় একটি অংশ এতদিন ফাঁকা ছিল। কিন্তু সুযোগ সন্ধানী দখলদারদের থাবায় সে জায়গাগুলোয় এখন তৈরি হচ্ছে ব্যক্তিগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এমনিতেই মরণ ফাঁদখ্যাত এ সড়কটিতে প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন অগণিত মানুষ। তারপরও এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও খাবার হোটেলের সামনে পার্ক করে রাখা বিভিন্ন যানবাহনের লম্বা লাইনের কারণে চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে এ সড়কে। বিন্নাডাঙ্গী এলাকার আব্দুল জলিল ও ধল্লা গ্রামের জাকির খান বলেন, দখলদারদের মধ্যে কেউ কেউ সরকারি দলের ক্ষমতাধর লোক হওয়ায় সাধারণ মানুষ মুখ খুলতে সাহস পায় না। আবার অন্যান্য স্থানে অনেকেই এদের দেখাদেখি দখলে উৎসাহি হচ্ছে। তাই অতি সত্তর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানান স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা। দখলদার মো. আব্দুল আলী ও মো. ফারুক হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, সরকারি জমি খালি পড়ে আছে। এ কারণে আমরা দোকান ঘর তৈরি করেছি। স্থাপনা নির্মাণে সড়ক ও জনপথ এর কাছ থেকে কোন অনুমতি নেয়া হয়নি। সরকার যদি কখনো আমাদের এ স্থাপনা ভেঙে দিতে বলে, তখন আমরা নিজেরাই ভেঙে দিব। তবে এখন পর্যন্ত স্থাপনা নির্মাণে আমরা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোন ধরনের বাধা কিংবা আপত্তি পাইনি। অন্যান্য দখলদারদের সঙ্গে কথা হলে তারাও এমনটি জানান। সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিপন দেবনাথ বলেন, ওই সমস্ত জায়গার দখল রোধে আমি জেলা মাসিক সমন্বয় সভায় কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করবো। মানিকগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী মো. আলমগীর হোসেন বলেন, সড়কের ওই অংশটুকু মানিকগঞ্জ জেলার সীমানায় হলেও অধিগ্রহণকৃত ওই জায়গা ঢাকা সড়ক ও জনপথ বিভাগের। তাই এ বিষয়ে তারাই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। ঢাকা সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ বলেন, বিষয়টি আপনার কাছে থেকে জানতে পারলাম। সার্ভেয়ার পাঠিয়ে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App