×

সারাদেশ

আ.লীগে বিভক্তি, স্থানীয় নেতারা ব্যস্ত দোষারোপে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৩, ১০:০৪ এএম

আ.লীগে বিভক্তি, স্থানীয় নেতারা ব্যস্ত দোষারোপে

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচন আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন ঘিরে চলছে প্রচার-প্রচারণা। এ সিটিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে বিজয়ী করতে চলছে নৌকা প্রতীকের পক্ষে গণসংযোগ ও মতবিনিময় সভা। তবে অনুষ্ঠিত হওয়া মতবিনিময় সভা ও গণসংযোগগুলোতে দলের বিভক্তির বিষয়টি দৃশ্যমান।

সম্প্রতি মহানগর যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বাদ দিয়ে যুবলীগের ব্যানারে রাসিক নির্বাচন নিয়ে মতবিনিময় ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান করেন মহানগর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ আল মাসুদ রনি ও সাংগঠনিক সম্পাদক মুকুল শেখ। এছাড়া রনির নেতৃত্বে কয়েকজন সাবেক ছাত্রনেতা গণসংযোগ করেছেন। সেটি নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। সাবেক ছাত্রলীগ ফোরামকে বিভক্তি করতেই এমন আয়োজন করা হয়েছে বলে মনে করছেন কয়েকজন ছাত্রনেতা।

সাবেক ছাত্রলীগের ব্যানারে গণসংযোগ অনুষ্ঠানে কয়েকজন বাদে অন্যরা কখনো ছাত্রলীগ করেনি বলে দাবি করেছেন রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুজ্জামান শফিক।

তিনি বলেন, ‘বিষয়টি কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ নয় বলেই আমরা বিশ্বাস করতে চাই। কিন্তু এমনটা চলতে থাকলে একে ষড়যন্ত্র ছাড়া অন্যকিছু বলার সুযোগ থাকবে না। সেই প্রচার-প্রচারণা অনুষ্ঠানে একজন জামায়াত-শিবিরের নাশকতা মামলার আসামিও উপস্থিত ছিলেন। এই বিষয়টি আরো ক্ষোভ তৈরি করেছে নেতাকর্মীদের ভেতরে।’

শফিকুজ্জামান শফিক আরো দাবি করেন, যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি থাকার পরেও ব্যানারে যুবলীগের নাম ব্যবহার করে যে অনুষ্ঠান করা হয়েছে, সেটি সাংগঠনিক রীতিনীতি ও শিষ্টাচারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

এ ব্যাপারে রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলী বলেন, যুবলীগ একটি শক্তিশালী সংগঠন। সেই সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বাদ দিয়ে কয়েকজন যুবলীগের নামে অনুষ্ঠান করে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এটা লিটন ভাইকে দেখতে হবে।

তবে গত সোমবার মেয়রপ্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন যুবলীগের সবাইকে নিয়েই মতবিনিময় করেন। সেখানে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার তাগিদ দেন তিনি। অন্যদিকে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার ও তার অনুসারীদের বাদ রেখেই রাসিক নির্বাচনে মহানগর আওয়ামী লীগকে দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। ডাবলু সরকার মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু পাননি। বিষয়টি নিয়ে একাধিক অনুষ্ঠানে মেয়রপ্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন প্রকাশ্যে ডাবলুর সমালোচনা করেছেন।

সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘সে (ডাবলু) কেন মনোনয়ন চাইল, আমি জানি না। প্রধানমন্ত্রী তাকে বলেছেন? প্রশ্নই ওঠে না। কারণ তিনি আমাকে ভোট করতে বলেছেন। এখন ঢাকার কোনো আতিপাতি নেতা তাকে দিয়ে খেলাচ্ছে কিনা, নাকি সে নিজের কামড়েই এসব করে বেড়াচ্ছে আমি জানি না।’ এ সময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা দলের একজন কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে সমস্বরে স্লোগান দিয়ে ওঠেন।

এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, ‘নির্বাচনে সব কার্যক্রমে আমাকেসহ মহানগরের অনেক নেতাকর্মীকে মাইনাস করা হয়েছে। তবে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় আমরা তার পক্ষেই কাজ করছি, আর কাজ করেও যাব। কারণ প্রধানমন্ত্রী তাকে নৌকা দিয়েছে, আমরা নৌকার পক্ষে কাজ করব।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমিও মনোনয়ন তুলেছিলাম। তবে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করব না।

বিভাজনের বিষয়ে নৌকার প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমরা কোনো বিভাজন চাই না। অতিদ্রুত তা নিরসন করা হবে, সেই অর্থেই কেন্দ্রীয় নেতারা চেষ্টা করছেন। বিভাজন সৃষ্টিকারীরা অতি ক্ষুদ্র একটি অংশ, দলের মধ্যে সেই অর্থে বিভাজন বলা যায় না।

অন্যদিকে, সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে মেয়রপ্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটনের দেয়া একটি বক্তব্য নিয়ে দলের মধ্যকার সংকট ভিন্ন রূপ পেয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে মেয়র লিটন জেলার একাধিক দলীয় সংসদ সদস্যকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন।

একজন সংসদ সদস্যের ‘এখনো নাক দিয়ে পোঁটা (সর্দি) পড়ে’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। আরেকজন তার নানিশাশুড়ির এলাকায় ভোট করেন বলে উল্লেখ করেন। তার এসব বক্তব্য নিয়ে ওইসব সংসদ সদস্যের অনুসারীরাও ক্ষুব্ধ হয়েছেন।

সেই অনুষ্ঠানে কয়েকজন সংসদ সদস্য ও দলের কিছু নেতার বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তুলে লিটন বলেন, ‘ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ নেই, আমি যতক্ষণ ভুল না করছি, আল্লাহ ছাড়া কেউ আমাকে ফেলে দিতে পারবে না।’ তিনি তাদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘তাদের মনে রাখা উচিত দিনের পরে রাত আছে, রাতের পরে দিন।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App