×

সারাদেশ

সিলেটে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে মারধরের অভিযোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৩, ০৪:২৭ পিএম

সিলেটে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে মারধরের অভিযোগ

ছবি: সংগৃহীত

সিলেটে মো. লিলু মিয়া নামে এক ব্যক্তি মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতে তার উকিলের সাথে দেখা করে ফেরার পথে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে মারধর করে ৫৫৫০ টাকাসহ কিছু কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে মো. লিলু মিয়া সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. ইলিয়াস শরীফ বিপিএম (বার) পিপিএম বরাবর একটি অভিযোগ দিয়েছেন। তবে পুলিশ বলছে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়নি।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ এপ্রিল মো. লিলু মিয়া নামে এক ব্যক্তি মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে সিলেট আদালতে তার উকিলের সাথে দেখা করে কোর্ট থেকে কালীঘাটের দিকে যাওয়ার জন্য কুদরত উল্লাহ মার্কেটের সামনে রাস্তায় আগে থেকেই দুই মোটরসাইকেলে দুইজন করে চারজন লোক বসে ছিল। লিলু মিয়া ফুটপাত দিয়ে হেঁটে তাদের সামনে চলে যাওয়ার সময় শুনতে পান ‘মুরব্বী দাঁড়ান’ বলে একজন মোটরসাইকেল আরোহী ডাক দেয়।

তার মুখে মাস্ক পড়িহিত ছিল। তবে তারা লিলু মিয়ার পরিচিত না হওয়ায় সেদিকে কর্ণপাত না করে হাঁটতে থাকেন তিনি। এ সময় হঠাৎ করে সিএনজি অটোরিক্সা করে তিনজন লোক এসে রাস্তার পাশে দাঁড়ায়। সেখান থেকে একজন নেমে এসে বলেন- তোরে ডাকতেছি শুনছস না কেন? তখন লিলু মিয়া বলেন- আমাকে কেন ডাকবেন? এ সময় অন্য দুজন সিএনজি থেকে নেমে আসেন এবং বলেন- তোর বিরুদ্ধে মামলা আছে গাড়িতে উঠ। তখন লিলু মিয়া আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন এবং তাদের শার্টে ঝুলানো ডিবি লেখা দেখে সত্যিকারের ডিবি পুলিশ ভেবে ঘাবড়ে যান।

এ সময় তাদের দুজন লিলু মিয়াকে ফুটপাত থেকে টান দিয়ে নামিয়ে সিএনজি অটোরিক্সায় তুলে নিয়ে ডান হাতে হাতকড়া লাগায় এবং লাগাতার চড় ঘুষি মারতে মারতে বলে ফাইল কোথায়। তোর উকিলের নাম কি? প্রশ্ন করতে করতে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করতে থাকেন। একই সময়ে সিএনজি মধুবন পেরিয়ে শিশুপার্কের দিকে রওনা হয়। এমতাবস্থায় একজন পকেট চেক করে লিলু মিয়ার বাজারের জন্য রাখা ৫৫৫০ টাকা ও কিছু কাগজপত্র ছিল তা নিয়ে নেয়।

এ সময় লাগাতার চড়-ঘুষি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ডিবি নামধারী একজন আরেকজনকে বলতে থাকে তাকে পরেও পাওয়া যাবে। মামলা তো কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। তারা লিলু মিয়াকে বলেন- বুঝতে পারছিস আজ যখন তোরে উঠাইতে পারছি। তখন মামলার হাজিরা দিতে এলে অথবা থানায় গেলে তোকে শেষ করে দেব। এক পর্যায়ে তার হাত থেকে হাতকড়া খুলে নেয় এবং শিশু পার্কের কর্নারে লিলু মিয়াকে লাথি মেরে রাস্তায় ফেলে সিএনজি এবং তাদের সামনে পিছনে থাকা দুই মোটরসাইকেল নাইরপুলের দিকে চলে যায়।

পরে লিলু মিয়া সেখান থেকে হাঁটতে হাঁটতে আবার কোর্টে আসার পথে লিলু মিয়ার এলাকার একজনের সাথে দেখা হলে তাহার কাছ থেকে ১শত টাকা গাড়ি ভাড়া ধার নিয়ে লিলু মিয়ার উকিলের সাথে দেখা করে ঘটনায় কথা বলে বাড়ি চলে যান। বিষয়টি আশেপাশের ভাসমান লোকজন দেখেছে। তবে ডিবি পুলিশের পোশাক পরিহিত অবস্থায় থাকায় কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি।

এছাড়া ঘটনার পর লিলু মিয়া তার আত্মীয়-স্বজন মিলে লিলু মিয়াকে তুলে নেয়ার স্থান এবং ছেড়ে যাওয়ার স্থান ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে। তারা কুদরত উল্লাহ মার্কেটের সামনে কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরা দেখতে পান এবং এই ক্যামেরাগুলো সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের ব্যবস্থাপনায় জানতে পেরে মনে আশার আলো জাগে লিলু মিয়ার। সেখানে লিলু মিয়ার ঘটনার ফুটেজ পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে যারা লিলু মিয়াকে উঠিয়ে নিয়ে ফেলে যায়, তাদের কাউকে আগে কখনো দেখেনি। যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেন। তবে এই সাত অপরাধীকে ধরতে সহজ হবে। এ বিষয়ে লিলু মিয়া গত ১৯ এপ্রিল দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের দপ্তরে গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। বিষয়টি কমিশনারের দপ্তর থেকে তাৎক্ষণিক সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। পরে মডেল থানা থেকে দুই পুলিশ কর্মকর্তা লিলু মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছেন।

এ বিষয়ে মো. লিলু মিয়া বলেন- কমিশনার মহোদয় আমার বিষয়টি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এই জন্য আমি তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আশা করি অচিরেই অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।

সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই অজয় বলেন- ওসি স্যারের নির্দেশে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি ও সিসি টিভি ফুটেজ চেক করে ঘটনার সত্যতা পাইনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App