×

সারাদেশ

শিবালয়ে রাতের আঁধারে চুরি হচ্ছে কান্তাবতীর মাটি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৩, ০৩:১৩ পিএম

শিবালয়ে রাতের আঁধারে চুরি হচ্ছে কান্তাবতীর মাটি
শিবালয়ে রাতের আঁধারে চুরি হচ্ছে কান্তাবতীর মাটি

ছবি: ভোরের কাগজ

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদী, খাল-বিল, ডোবা ও ফসলি জমি কেটে বিক্রি করা প্রায় সারা বছরের চিত্র। সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সিংহভাগ মাটি ব্যবসায়ী তাঁদের এ ব্যবসা গুটিয়ে নিলেও প্রভাবশালী মাটি ব্যবসায়ী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রতন মোল্লা দাপটের সাথে এ অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ঈদের প্রাক্কালে সমস্ত প্রশাসন যখন ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আপ্রাণ কাজ করে যাচ্ছেন, এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মাটি ব্যবসায়ী রতন দিনের পরিবর্তে রাতের অন্ধকারে কান্তাবতী নদীর মাটি কেটে অবাধে বিক্রি করছেন বলে জানা গেছে। অবৈধভাবে মাটি কাটা নিয়ে প্রকাশ্য প্রতিবাদ করার সাহস স্থানীয়দের না থাকলেও তাঁরা মাটি ব্যবসায়ি রতন মোল্লার প্রতি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, উথলী ইউনিয়নের কলাবাগান এলাকার আলম ড্রাইভারের ছেলে মো. রতন মোল্লা (সাংগঠনিক সম্পাদক, উথলী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগ) দীর্ঘদিন যাবত নদীর মাটি কেটে বিক্রি করছেন। সম্পতি তিনি কান্তাবতী নদী সংলগ্ন মল্লিকপুর এলাকার ইমান আলীর ফসলী জমি কেটে বিক্রি করছেন। পাশাপাশি তিনি নদী থেকে বিপুল পরিমাণ মাটি কেটে ভারি করছেন তাঁর তহবিল ভান্ডার।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার উথলী ইউনিয়নের কলাবাগানের সামান্য পূর্বদিকে মল্লিকপুর এলাকার কান্তাবতী নদীর মাটি ভেকু দিয়ে কেটে ট্রাকে করে রাতের আঁধারে বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে। এতে এলাকার রাস্তাঘাট চলাচলের অযোগ্য করে দিয়েছেন ওই মাটি ব্যবসায়ী। ভারি বর্ষণে কিংবা বর্ষাকালে আশেপাশের ফসলি জমি ভেঙ্গে নদীতে চলে যাবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা বলেন, রাত নয়টা থেকে ভোর পর্যন্ত ভেকু আর ট্রাকের বিকট শব্দে আমরা বিব্রতকর অবস্থায় রাত্রি যাপন করি। এলাকার রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর দেখে মনে হয় আমরা যেন চর এলাকায় বসবাস করি। রতনের মাটির ট্রাকের কারণে বাড়াদিয়া থেকে ধূসরের আঞ্চলিক মহাসড়ক পর্যন্ত কাঁচা মাটির প্রলেপ পড়ে গেছে। পিচ ঢালাই রাস্তা হলেও রাতের বেলায় ট্রাক থেকে মাটি পড়ে সকাল বেলা একেবারে পিচ্ছিল হয়ে থাকে। এমতাবস্থায়, যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা। শুধু তাই নয়, মাটি ব্যবসায়ী রতনের কারণে কান্তাবতী নদীর মাটি ও আশেপাশের ফসলী জমির মাটি যেভাবে দিন দিন উজার হচ্ছে তাতে একটা সময় চাষাবাদের কোন জমি অবশিষ্ট থাকবে না। তাঁরা আরো বলেন, যাঁরা সরকারি নির্দেশা উপেক্ষা করে নিজেদের পকেট ভারী করার জন্য অবৈধ এ মাটি ব্যবসার সাথে জড়িত রযেছেন তাঁরা মূলত দলকে মন থেকে ভালোবাসেন না। দলীয় সাইনবোর্ড ব্যবহার করে মাটি ব্যবসায়ই এদের মূল লক্ষ্য।

মাটি ব্যবসায়ী রতন মোল্লাকে ফোন দিলে তিনি জানান, আমি ব্যক্তিমালিকানা জমির মাটি কাটছি। আমি নদীর মাটি কাটছি না। কিছুক্ষণ পর মাটি ব্যবসায়ীর একজন নিকট আত্মীয় মোবাইল ফোনে জানান, ভাই নিউজ করার প্রয়োজন নাই। আপনি আমাকে আপনার বিকাশ নম্বর দিন, আপনার জন্য খরচ মোবাইলে পাঠিয়ে দিতে বলি।

শিবালয় উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. আনিছুর রহমান খান দৈনিক ভোরের কাগজকে জানান, ফসলি জমি বা নদী থেকে মাটি কাটার কোন বিধান নেই। আমি অতিসত্বর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App