নেত্রকোনার মদন-কেন্দুয়া সড়কের সাইডুলী নদীর পাশের ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীরা। বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় ঈদে ঘর ফেরৎ মানুষেরা চরম ভোগান্তির মধ্যে দিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ ব্রিজটি সংস্কারের উদ্যোগ না নেয়ায় চালক ও যাত্রীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। মদন-কেন্দুয়া ব্যস্থতম এই সড়কে প্রতিদিন যাত্রী ও পণ্যবাহী ছোট বড় হাজারো গাড়ি চলাচল করে থাকে। মদন ও খালিয়াজুরী থেকে কেন্দুয়া, তাড়াইল, কিলোরগঞ্জ, ভৈরব, ঢাকা, সিলেট এবং চট্টগ্রামের সঙ্গে দূরপাল্লার যান চলাচল করে ওই সড়ক দিয়ে। ওই সড়ক দিয়ে প্রতিদিনি আটপাড়া, মদন, খালিয়াজুরী হাওরাঞ্চলের নানা পেশার শতশত লোকজন যাতায়াত করে। ঈদ যাত্রায় ঘর ফেরৎ মানুষের জন্য সড়কটি আরো ব্যস্থতম হয়ে ওঠে। এই সড়কের সাইডুলী নদীর পাশে একটি ছোট ব্রিজ রয়েছে। গত ১২ (এপ্রিল) সেই ব্রিজটি ভেঙে যায়। কর্তৃপক্ষ ধায়সারা ভাবে সংস্কার করলেও সেটিও ভেঙে গেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ঈদ যাত্রার ঘর ফেরৎ মানুষ ও স্থানীয়রা।

বুধবার (১৯ এপ্রিল) সরজমিন গেলে দেখা যায়, সেতুটি ভেঙে যাওয়ার কারণে রাস্তায় দুই পাশে ছোট বড় গাড়ি আটকে আছে। এতে যানযটের সৃষ্টি হয়েছে। যাত্রী ও চালকরা পাটাতন দিয়ে চলাচলের উপযোগী করার জন্য চেষ্টা করছেন। অনেক যাত্রী তাদের মালপত্র নিয়ে অপেক্ষা করছেন। কেউ কেউ আবার গাড়ি বদল করে বাড়ির ফিরছেন। এতে যেমন বাড়ছে খরচ তেমনি পৌহাতে হচ্ছে চরম দূর্ভোগ।

এ সময় মদনের শারমিন আক্তার, কাজল মিয়া, মফিজুল জানান, আমরা চট্টগ্রামে পোশাক শ্রমিকের কাজ করি। ছুটি পেয়ে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করার জন্য বাড়ি আসছি। কিন্তু এখানে এসে দেখি ব্রিজটি ভেঙে গেছে। তাই বাস আরা সামনের দিকে যাওয়া সম্ভব না। বাধ্য হয়েই নেমে যেতে হচ্ছে । বাড়তি খরচ তো আছেই কিন্তু ভোগান্তির শেষ নেই।’

সিএনজি চালক কামাল মিয়া, মমিন মিয়া জানান,‘এখন ঈদের মৌসুম। শহর থেকে লোকজন বাড়িতে ফিরছে। কিন্তু ব্রীজটি ভেঙ্গে যাওয়ায় এখানে এসে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এক সপ্তাহ ধরে ব্রিজটির অবস্থা খারাপ। সেখানে শুধু দুইটি পাটাতন দেওয়া হয়েছে। পণ্যবাহী বড় ট্রাক ও বাসের কারণে আবার সেগুলোও ধসে গেছে। এখন ছোট গাড়িও চলাচল করতে পারছে না।’

মদন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহনূর আলম বলেন,কেন্দুয়া থেকে মদনে যাতায়াত করার একমাত্র রাস্তা হচ্ছে এই সড়কটি। এই সড়কের একটি ব্রিজ ভেঙে যাওয়ার কারণে লোকজন ভোগান্তিতে পড়েছে। বুধবার দুপুরে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী আমি নিজেও সেখানে অপেক্ষা করেছি। ভেঙে যাওয়া ব্রিজটি কেন্দুয়া উপজেলার অংশে। আমি বিষয়টি সমাধান করার জন্য কেন্দুয়া উপজেলা প্রসাশনের সঙ্গে কথা বলেছি।’

এ বিষয়ে কেন্দুয়া উপজেলা প্রকৌশলী মোজাম্মেল হোসেন জানান, ‘ছোট এই ব্রিজটি অনেক পুরাতন হওয়ায় ভেঙে গিয়েছে। নতুন করে নির্মাণ করার জন্য কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ছোট ছোট যানবাহন চলাচলের জন্য মেরামত করা হয়েছে। কিন্তু ভারী যান চলাচল করায় সেটা ধসে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। ধান বোঝাই ট্রাক ও ঈদে যাত্রীবাহী গাড়িগুলো বিকল্প সড়কে যাতায়াত করার জন্য তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন।