×

সারাদেশ

তীব্র দাবদাহে লোডশেডিং, অতিষ্ঠ জনজীবন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৩, ০৭:২৮ পিএম

তীব্র দাবদাহে লোডশেডিং, অতিষ্ঠ জনজীবন

ফাইল ছবি

নোয়াখালীতে গত এক সপ্তাহে তীব্র দাবদাহ ও ব্যাপক লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। রমজান এবং পবিত্র ইদুল ফিতরকে সামনে রেখে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যস্ততায় তাপদাহ ও লোডশেডিংয়ের প্রভাব পড়েছে ব্যপকভাবে।

শনিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে নোয়াখালীতে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই তীব্র তাপদাহের মধ্যে কোনো নিয়মনীতি ছাড়াই দেয়া হচ্ছে লোডশেডিং। এ কারণে প্রায় সব এলাকাই ১৪-১৫ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ছে।

ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। যখন সব জায়গায় তাপদাহে মানুষ হাঁপিয়ে উঠছে ঠিক তখনই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৪-১৫ ঘণ্টা লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে। এতে শিল্প-কারখানায় উৎপাদন কমে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির হিস্যা গুনতে হচ্ছে প্রতিষ্ঠান মালিকদের। অন্যদিকে তীব্র তাপদাহে ক্রেতারা বড় বড় এসিযুক্ত শপিং মহলে চলে যাওয়ায় ক্রেতা সংকটে ভুগছেন ফুটপাতের হকার ও ছোট আকারের দোকানীরা। তাপদাহের মধ্যে লোডশেডিং দেয়ায় বাসা-বাড়িসহ সর্বত্ব অবস্থান নেয়া মানুষ হাঁপিয়ে উঠছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের যে পরিসংখ্যান দিচ্ছে তা বাস্তবের সঙ্গে কোনো মিল নেই। জেলা সদর, বেগমগঞ্জ, সোনাইমুড়ী, চাটখিল, সেনবাগ, কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট ও সুবর্ণচর উপজেলায় রয়েছে নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুতের সাড়ে ৬ লক্ষাধিক এবং জেলা শহর মাইজদী, প্রধান বাণিজ্য শহর চৌমুহনীতে রয়েছে পিডিবির কয়েক হাজার গ্রাহক। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়লেও তা চাহিদার তুলনায় কম হওয়ায় লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।

এবিষয়ে জেলা শহরের বাসিন্দা আরিফ আহমেদ বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগের লোডশেডিংয়ের রোস্টার না মেনেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং জনজীবনকে বিষিয়ে তুলেছে। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে বলা হচ্ছে, দুই ঘণ্টা পর এক ঘণ্টা লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে আধঘণ্টা পরও লোডশেডিং হচ্ছে। এই অবস্থায় তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। অপরদিকে ব্যবসা-বাণিজ্যেও নেমে এসেছে স্থবিরতা।

জেলার সদর উপজেলার মান্নান নগর এলাকার বাসিন্দা আবদুল খালেক বলেন, এখন পবিত্র মাহে রমজান চলছে, তার ওপর তীব্র গরম। এই রমজানে গরমের মধ্যে এত বেশি লোডশেডিং মেনে নিতে পারছিনা। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টায় লোডশেডিং দিয়ে পুনরায় বিদ্যুৎ দিয়েছে সেহেরী খাওয়ার পর ফজর নামাজের সময়। লোডশেডিং রোধে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দেওয়া জরুরী হয়ে গেছে।

জেলা শহরের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের অনেক কিছু নির্ভর করে বিদ্যুতের ওপর। কিন্তু অতি মাত্রায় লোডশেডিংয়ের কারণে এখন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সচল রাখাই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. জাকির হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহের কারণে লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। এই মুহূর্তে আমরা চাহিদার তুলনায় ৩৯ ভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ কম পাচ্ছি। আমরা গ্রিডে যদি ৩৯ ভাগ কম পায়, তাহলে গ্রাহক পর্যায়ে সরবরাহ ৪৫ ভাগ কম পাবে।

বিদ্যুৎ বিভাগ নোয়াখালীর (মাইজদী) নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল আমিন বলেন, জাতীয় গ্রিডে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে গ্রাহক এবং বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তা দিয়ে চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না। আমাদের বিদ্যুৎ চাহিদা রয়েছে ২৮ মেগাওয়াট, পাচ্ছি ২০ মেগাওয়াটের নিচে। তাই লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। সমস্যা উত্তোরণে আরো কিছুদিন সময় লাগবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App