সিরাজগঞ্জের তাড়াশের দেশীগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক জনপ্রিয় চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস সরকারকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার ঘটনার ৫৪দিন পর তাড়াশ থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ আন্ত:জেলা সর্বহারা দলের সক্রিয় ৮ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।

শনিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো: আব্দুল বাতেন (বিপিএম, পিপিএম) এতথ্য জানিয়েছেন।

গ্রেপ্তারকৃত সর্বহারারা হলেন, পাবনা জেলার চাটমোহর থানার বাঙ্গালা পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত আমির সরকারের ছেলে মো. জহুরুল ইসলাম তুষার (২৫), পাবনার কাটাখালী পুর্বপাড়া গ্রামের আলহাজ্জ মো. আমির সরকারের ছেলে মো. রহমত আলী (৪৫)। দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী থানার সুজাপুর বানিয়াপাড়া গ্রামের বিকাশ মহন্তের ছেলে বিশ্বনাথ মহন্ত (৩২), সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সুজাদক্ষিণ পাড়া গ্রামের মৃত গফুর মোল্লার ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪০), রায়গঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণপুর উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত গকুল চন্দ্র দাসের ছেলে শ্রী বলরাম চন্দ্র দাস (৩৮), তাড়াশ উপজেলার গুরপিপুল গ্রামের মৃত শংকর চন্দ্র দাসের ছেলে উত্তম চন্দ্র দাস (৪০), টাংগরা দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত জুরান উদ্দিনের ছেলে মো. রহমত আলী (৩৮), দেওঘর গ্রামের মৃত গোনেস উরাও এর ছেলে শ্রী সুনীল উরাও (৪৫)।

সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আব্দুল বাতেন বলেন, চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় উপজেলার ভোগলমান চারমাথা বাজারে শত শত লোকের সামনে প্রকাশ্যে মুখোশধারী আগ্নেয়াস্ত্র বহনকারী ১৪-১৫ জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী গুলি করে আ. কুদ্দুস সরকারকে হত্যা করে। হত্যা করে বাজারেই পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টির লিফলেট এবং সর্বহারা পার্টি জিন্দাবাদ স্লোগান দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ঘটনায় ২০ ফেব্রুয়ারী তাড়াশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

তিনি আরও জানান, শনিবার ভোর রাতে তাড়াশ দেশীগ্রাম ইউনিয়নের দোগাড়ীয়া ঈদগাহ মাঠ এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ একটি সন্ত্রাসী দল মহড়া দিচ্ছে। গোপন সংবাদে জেলা গোয়েন্দা শাখা ও তাড়াশ থানার বিশেষ টিম এই সন্ত্রাসীদের অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে। এসময় তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী সন্ত্রাসীদের আশ্রয়দানকারী তাড়াশ থানার তালম ইউনিয়নের দেওঘর গ্রাম হতে শ্রী সুনীল উরাওকে গ্রেপ্তার করে।

এসময় তাদের কাছ থেকে, ২০০২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর বেলকুচি উপজেলার রান্ধুনিবাড়ী পুলিশ ক্যাম থেকে লুট হওয়া ১টি এসএমজি, ১টি থ্রি-নট থ্রি রাইফেল, ১টি থ্রি নট থ্রি কাটা রাইফেল, ১১ রাউন্ড থ্রি নট থ্রি তাজা গুলি, ১টি গুলির খোসা, ২টি চাকু, ১টি সাউন্ড গ্রেনেড ও ১টি অটো ভ্যান গাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মো. সামিউল আলম, জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রওশন আলী, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির, তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম ও জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই মো. জুলহাজ উদ্দিনসহ জেলা ও উপজেলার প্রিন্ট ও ইলেক্টনিক্স মিড়িয়ার সাংবাদকর্মীরা উপিস্থিত ছিলেন।