×

সারাদেশ

শেরপুরে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলার ১৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:০২ পিএম

শেরপুরে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলার ১৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব

ছবি: ভোরের কাগজ

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে চাঞ্চল্যকর অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় ৯বছর আত্মগোপনে থাকা ১৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী মো. গোলাপ হোসেন (৪০)’কে ঢাকার আশুলিয়া থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১৪। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটের সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের মধ্য ডেফলাই গ্রামের ছাবেদ আলীর ছেলে।

র‍্যাব-১৪, জামালপুর এর প্রেস রিলিজ সুত্রে জানা গেছে, ভিকটিম একজন হতদরিদ্র ঘরের নাবালিকা সন্তান। ভিকটিমের প্রতিবেশী আসামী মো. গোলাপ হোসেনের সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন পারিবারিক বিষয়াদি নিয়ে দ্বন্দ্ব কলহ চলতে ছিল। সেই পূর্ব কলহের জের ধরে ভিকটিম এবং তার পরিবারের ক্ষতিসাধন করার নিমিত্তে আসামী বিভিন্ন অযুহাতে বাকবিতন্ড করে  আসছিলেন। ঘটনার দিন গত ১৮/০৪/২০১৪  তারিখে দুপুর অনুমান ২ ঘটিকায় ভিকটিম তার বাড়ীর সামনে আঙ্গিনায় খেলাধুলা করছিলেন। উক্ত সময়ে গোলাপ হোসেন বাদী মো. ইউছুফ আলীর বাড়ীর সামনে গিয়ে ভিকটিমকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে শিশুটির শিশু সুলভ আচরণ ও সরল বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে ভাল পোশাক পড়াবে, দোকান হতে বিস্কুট কিনে দিবে ও ভাল খাবার খাওয়াবে ইত্যাদি বলে অত্যান্ত সু-পরিকল্পিতভাবে ভিকটিমকে অপহরন করে ঢাকার এয়ারপোর্ট নর্দান এলাকায় আসামী গোলাপ হোসেনের ভাড়া বাসায় জোরপূর্বক আটক করে রাখে। পরবর্তীতে বাদী আসামীর পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টি করলে ভিকটিমকে ঢাকা থেকে বিগত ২৯/০৪/২০১৪ ইং তারিখে ঢাকার উক্ত বাসা হতে বাদীর বাড়িতে নিয়ে আসে। বাড়িতে আসার পর পরিবারের লোকজন ভিকটিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে সে জানায় যে, আসামী গোলাপ হোসেন তার ভাড়া করা বাসায় আটক রেখে খুন-জখমের ভয়-ভীতি দেখিয়ে ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক প্রতিদিনই ধর্ষণ করে আসছিলেন। পরবর্তীতে ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে ঝিনাইগাতী থানায় অভিযোগ দাখিল করলে অফিসার-ইনচার্জ, ঝিনাইগাতী থানার মামলা নং-১, তারিখঃ ১২/০৫/২০১৪ ইং, ধারা-৭/৩০/৯(১) নারী ও শিশু নিযার্তন দমন আইন/২০০০ সংশোধনী/০৩) রুজু করেন। মামলার তদন্তকারী অফিসার মামলা সুষ্ঠু তদন্ত শেষে আসামীর বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নিযার্তন দমন আইনের ৭/৩০/৯(১) ধারায় বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ, নারী ও শিশু নিযার্তন দমন ট্রাইব্যুনাল, শেরপুরের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান গত ২৫/১০/২০২১ খ্রিস্টাব্দে আসামী মো. গোলাপ হোসেনের বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নিযার্তন দমন আইনের ৭ ধারায় অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমান হওয়ায় আসামীকে ১৪ (চৌদ্দ) বৎসরের সশ্রম কারাদন্ড ও ১০হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৩মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং ২০০০ সালের নারী ও শিশু নিযার্তন দমন আইনের ৯(১) ধারায় অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমান হওয়ায় আসামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ২০হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেন। মামলার ঘটনার পর থেকেই আসামী মো. গোলাপ হোসেন ৯ বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিল। বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামানের নেতৃত্বে এবং সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এম এম সবুজ রানা এর উপস্থিতিতে র‍্যাবের একটি অভিযানিক দল ৪এপ্রিল মঙ্গলবার বিকাল ৫টা ৪৫মিনিটের সময় ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন জামগড়া চিত্র সাইল বাজার হতে গোলাপ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। ধৃত আসামীকে সূত্রোক্ত মামলায় শেরপুর জেলায় ঝিনাইগাতী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান এ বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ধরণের অপরাধের বিরুদ্ধে র‍্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App