×

সারাদেশ

নারায়ণগঞ্জে চোখ উপড়ে যুবদল নেতাকে হত্যা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২৩, ০১:০৪ এএম

নারায়ণগঞ্জে চোখ উপড়ে যুবদল নেতাকে হত্যা

যুবদল নেতা মাহবুব আলম

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে স্বজনদের সামনেই যুবদল নেতা মাহবুব আলমকে (৩০) হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে, কুপিয়ে ও চোখ উপড়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) আড়াইহাজারের দুপ্তারা ইউনিয়নের সিংরাটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ সময় মাহবুবকে বাঁচাতে তার বাবা-মা-ভাই এবং চাচার অনুনয় বিনয় ও প্রাণভিক্ষার আঁকুতিতে কর্ণপাত করেনি ঘাতকরা। মাহাবুব সিংরাটি এলাকার হানিফ মিয়ার ছেলে এবং দুপ্তারা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক।

অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হাশমত আলী ঘটনার পর থেকে পলাতক। তিনি দুপ্তারা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি। এ ছাড়া হাশমত সম্পর্কে মাহবুবের খালাতো বোনের স্বামী হলেও তাদের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ ছিল।

নিহতের বড়ভাই হাবিবুর রহমান ও মহিবুর রহমান বলেন, মাহবুবের সঙ্গে হাশমত আলীর জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। এ নিয়ে একাধিকবার স্থানীয়ভাবে সালিশও হয়েছে কিন্তু সমাধান হয়নি। হাশমত জমির বদলে তিন লাখ টাকা দাবি করে; কিন্তু আমার ভাই ওই টাকা দিতে রাজি হয়নি। এ নিয়ে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় আমার ভাই কালীবাড়ি বাজারে গেলে হাশমতের লোকজন তাকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে আহত করে।

তারা জানায়, এক পর্যায়ে তারা অটোরিকশাতে করে আমার ভাইকে হাশমতের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে হাশমত, তার ভাই কিসমত, কামাল, বাবা ইব্রাহীম, চাচাতো ভাই হান্নান, আল আমিনসহ তাদের লোকজন মাহবুবকে হাতুড়ি দিয়ে আরেক দফা পিটিয়ে আহত করে। অপহরণের খবর পেয়ে মাহবুবের বাবা-মা ও দুই ভাই দ্রুত হাশমতের বাসায় যান। সেখানে তারা দেখে হাশমতের লোকজন হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মাহবুবের দুই পা ভেঙে দিয়েছে।

তাদের ভাষ্য, এ সময় মাহবুবকে বাঁচাতে তার বাবা-মা-ভাইয়েরা হাশমতের পা ধরে জীবনভিক্ষা চান এবং দাবিকৃত টাকা আজই শোধ করে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। তবু ঘাতকদের মন গলেনি। উল্টো তারা মাহবুবের ভাই মহিবুরকে পিটিয়ে উলঙ্গ করে বাইরে বের করে দেয়। হাবিবুরকেও মারধর করা হয়। এরপর হাবিবুরের সামনেই মাহবুবকে কোপানো হয় এবং ছুরি দিয়ে উপড়ে ফেলা হয় তার একটি চোখ। মাহবুব নিস্তেজ হয়ে পড়লে ঘাতকরা ঘরের ভেতরে যায়। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় মাহবুবকে উদ্ধার করে প্রথমে থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে মাহবুব মারা যান।

আড়াইহাজার থানার ওসি এমদাদুল হক তৈয়ব জানান, এ ঘটনায় কিসমত ও কামাল, পাবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে আরও ৫ জনকে। প্রধান অভিযুক্ত হাশমত পলাতক আছেন। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। দু’পক্ষের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। লাশ নারায়ণগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে আছে।

এদিকে যুবদল নেতাকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি। উপজেলা বিএনপির সভাপতি ইউসুফ আলী ভূঁইয়া বলেন, রাজনৈতিক কারণে যুবদল নেতা মাহবুবকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর বিচার ও খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার চাই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App