×

সারাদেশ

কলাপাড়ায় হাট-বাজারের ইজারা নিয়ে ধ্রুমজাল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২৩, ০৫:০৯ পিএম

কলাপাড়ায় হাট-বাজারের ইজারা নিয়ে ধ্রুমজাল

ছবি: সংগৃহীত

সরকার হারাচ্ছে মোটা অংকের রাজস্ব

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় হাট-বাজারের ইজারা নিয়ে চলছে ধ্রুমজালের খেলা। ক্ষমতাশীল দলের প্রভাবশালী মহলের হস্তক্ষেপে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হাটগুলোকে সরকারি খাসে পরিণত করার পায়তারা চালাছে। হাটগুলো নিলামে উঠলেও সিন্ডিকেটের কারণে সেখানে কোনো সাধারণ ইজারাদার অংশগ্রহণ করতে পারছেন না।

ফলে নির্দিষ্ট সময় শেষে খাসে পরিণত হচ্ছে হাটগুলো। এতে সুবিধা ভোগ করছে প্রভাবশালী মহল। নাম মাত্র সরকারি খাজনায় নিজেদের পছন্দের লোকের হাতে হাটের ইজারা দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সাধারণ ইজারাদার। পাশাপাশি সরকার হারাচ্ছে কোটি টাকার রাজস্ব। ইজারাদার নিলামে অংশ না নিলে হাটগুলো খাসে নেয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই বলে দায় সাড়া উত্তর দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি সাধারণ ইজারাদারদের।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় মোট ১৫টি হাট রয়েছে। এরমধ্যে ৬টি হাটের নিলামে কোনো ইজারাদার অংশ না নেয়ায় হাটগুলো এখন সরকারি খাসে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ হাটগুলো হলো মহিপুর, হাফেজ প্যাদা, নোমরহাট, পাটুয়া, লক্ষীর ও পক্ষীয়াপাড়া হাট। এছাড়া লালুয়া, চাপলী, তেগাছিয়া, ছোট বালিয়াতলী, বড় বালিয়াতলী, ডালবুগঞ্জ, দেবপুর, কালু মিয়া ও আলীপুর হাট ইজারা হয়েছে। তবে এ হাটগুলোর কয়েকটি সিস্টেমের মধ্যে ফেলে খাসে পরিণত করা হতে পারে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। গত বছর নোমর হাট ৮০ লক্ষ ও মহিপুর হাট ৮৪ লক্ষ টাকায় সর্বোচ্চ নিলামে ইজারা দেয়া হয়। বিগত বছরে সবগুলো হাট কয়েক কোটি টাকায় ইজারা হয়ে আসছে। কিন্তু এ বছর কিছু ইজারাদার ফরম ক্রয় করলেও সিন্ডিকেটের কারণে শেষ পর্যন্ত কেউ নিলামে অংশগ্রহণ করেনি। ফলে মোটা অংকের টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

উপজেলার খেয়াগুলোও একই পথে রয়েছে। উপজেলার মোট ২০টি খেয়ার মধ্যে ৮টি খেয়া এখন পর্যন্ত ইজারা দেয়া হয়েছে। বাকিগুলোর অবস্থা কি হবে তা নিয়ে নিশ্চিত নয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর। তবে কোনো ইজারাদার পাওয়া না গেলে অবশিষ্ট খেয়াগুলো খাসে পরিণত হতে পারে এমনটাই জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিস।

এদিকে নাম না বলার শর্তে একাধিক ইজারাদার জানান, হাট-বাজারগুলো নিয়ে কলাপাড়ায় এখন হরিলুট চলছে। আমরা সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পরেছি। আমরা সাধারণ ইজারাদার তাদের ক্ষমতার সঙ্গে পারছি না। তাই মুখ বুঝে তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই।

তারা আরোও বলেন, গত বছর বড় বালিয়াতলী ও চাপলী হাটসহ কয়েকটি হাট নিলামে বিক্রি হলেও পরবর্তীতে সিস্টিমের মাধ্যমে তা খাসে পরিণত হয়। এবারও সেই পদ্ধতিতে ইজারা দেয়া হাটের অনেকগুলোই খাসে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের মতে, অনেকেই নির্দিষ্ট মূল্যের অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে নিলাম কিনেছে। কিন্তু পরবর্তীতে তারা টাকা দিতে ব্যর্থতা স্বীকার করলে হাটগুলো খাস ল্যান্ডে পরিণত করা হয়। এতে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হলেও প্রভাবশালী নেতাদের পকেট ভারী হচ্ছে।

মহিপুর হাটের বর্তমান ইজারাদার আক্তার হোসেন তালুকদার জানান, এবছর সে ফরম ক্রয় করেছিলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিলামে অংশগ্রহণ করেনি।

নোমর হাটের ইজারাদার তনু মাতব্বর জানান, এ হাটের নিলামে সে ফরম ক্রয় করেছে তবে অতিরিক্ত মূল্য নির্ধারণ করায় নিলামে অংশগ্রহণ করেননি। বাজারটি এবছর খাস ল্যান্ডে যেতে পারে বলে তিনি জানান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমরা একে একে তিনবার নিলাম ডেকেছি। কিন্তু কেউ তাতে অংশগ্রহণ করেনি। তাই প্রক্রিয়ানুযায়ী ৬টি বাজার খাস ল্যান্ডে যাবে। তবে বাকি বাজারগুলোর ইজারা দেয়া হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App