বান্দরবানে কলাগাছের আঁশের সুতায় তৈরি ‘কলাবতী’ শাড়ি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার হিসেবে দেয়ার কথা বলেছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি।

রবিবার (২ এপ্রিল) বিকেলে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে ‘কলাবতী’ শাড়ি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

জেলা প্রশাসক বলেন, জুম চাষের দারিদ্র্য থেকে পাহাড়ের নারীদের বের করে এনে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য অগ্রণী ভূমিকা রাখবে কলাগাছের বাকল থেকে শাড়ি তৈরি। এটা সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব। ‘কলাবতী’ শাড়ি হবে বান্দরবানের ব্র্যান্ডিং।

তিনি আরো বলেন, শুধু শাড়ি নয়, এই কলাগাছের সুতা থেকে পর্দা, ব্যাগ, পাপোস, জুতা ও কলমদানি তৈরি করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে পাঞ্জাবি ও ফতুয়াসহ আরও আকর্ষণীয় হস্তশিল্প কিভাবে তৈরি করা যায় তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে সুতা পাঠানো হয়েছে।

ইয়াছমিন পারভীন বলেন, এ সুতা দিয়ে হাতের ও গলার মালাসহ বিভিন্ন আধুনিক অলঙ্কার কীভাবে তৈরি করা যায় সে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। প্রশিক্ষিত কর্মীরা বান্দরবানের সাত উপজেলায় গিয়ে নারীদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, শাড়ি তৈরির কাজে সুতা বানানো, সুতা শুকানো, সুতা বাছাই করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিভাগে অনেক নারী জড়িত। এক কেজি সুতা দিয়ে ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে দৈর্ঘে্য সাড়ে তের হাত ও প্রস্তে আড়াই হাত শাড়ি তৈরি করা হয়েছে।

শাড়ির দাম নিয়ে জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, এই শাড়ির বাজার মূল্য চার-পাঁচ হাজার টাকা হতে পারে।

এই কাজে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের বিভিন্ন গ্রুপকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া গ্রাউস ও ওয়ার্ল্ড ভিশনসহ কয়েকটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাও এ কাজে জড়িত রয়েছে বলে জানান তিনি।

জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে এসব উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে জেলার নয়টি গ্রামকে বাছাই করা হয়। সেখান থেকে পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা রয়েছে এমন দুটি গ্রামকে বেছে নেয়া হয়।

সংবাদ সম্মলনে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক লুৎফুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুরাইয়া আক্তার সুইটি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সাইফুল ইসলাম, এনডিসি শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব কুমার বিশ্বাস, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক আতিয়া চৌধুরী, তাঁত শিল্পী রাঁধাবতী দেবী ও বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাই সাই উ মারমা নিনি।