×

সারাদেশ

পঞ্চগড় সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে আসছে ভারতীয় আলু

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৩, ০৯:১০ পিএম

পঞ্চগড় সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে আসছে ভারতীয় আলু

ছবি: ভোরের কাগজ

যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়

ভারতীয় আলু অবৈধভাবে পঞ্চগড়ে সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে আসছে। প্রকাশ্য দিবালোকে আসা এসব আলু রপ্তানি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। এসব আলু চোরাই পথে আমদানি হওয়ায় সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনি ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হবার আশঙ্কায় স্থানীয় আলু চাষিরা।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঘাগড়া সীমান্ত এলাকায় কয়েকদিন ধরেই জমে ওঠেছে ভারতীয় আলুর কারবার। স্থানীয় চোরাকারবারিদের মাধ্যমে এসব আলু কিনছেন বহিরাগত ব্যবসায়ীরা। বিজিবির ক্যাম্পের সামনে দিয়েই এসব আলু পারাপার হলেও ভ্রুক্ষেপ নেই তাদের। কারবারিদের সঙ্গে যোগসাজসেরও অভিযোগ রয়েছে বিজিবির বিরুদ্ধে।

গত রবিবার (২৬ মার্চ) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিচ্ছিন্নভাবে বিপুল সংখ্যক আলুর বস্তা সাজানো রয়েছে ট্রাকে লোড করার অপেক্ষায়। আবার কারো আলু লোড হচ্ছে ট্রাকে। অন্যদিকে, ভারতীয়দের জমি থেকে বস্তাভর্তি আলু বিভিন্নভাবে দেশের সীমানায় আনছেন স্থানীয় শ্রমিকরা। সেখান থেকে ভ্যান বা পিকআপে ভরে নিয়ে যাচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। কেউ কেউ ভারতীয় বস্তা বদলে এসব আলু ভরছেন অন্য বস্তায়। সব প্রস্তুতি শেষে তোলা হবে ট্রাকে।

জানা গেছে, হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঝুলিপাড়া, মমিনপাড়া, তিনঘড়িয়া পাড়া এবং বাঙ্গালপাড়া- এই চারটি গ্রাম ভারতের সীমান্ত ঘেষা। এই চার গ্রামের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে ভারতের কয়েকটি গ্রামের। ওই গ্রামগুলোর অবস্থান ভারতে হলেও তারকাটার বেড়া তাদের প্রতিবেশি গ্রামগুলো থেকে আলাদা করতে পারেনি। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে উভয় পাশের স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তি জায়গাটি বাণিজ্যিক রুট হিসেবে ব্যবহার করছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তারকাটার এ পারের ভারতীয় গ্রামগুলোতে চাষ হওয়া আলু প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে বাংলাদেশে।

স্থানীয়রা জানান, ভারতে আলুর দাম কম হওয়ায় এমনটা করছেন তারা। মাত্র ৩ টাকা কেজিতে কেনা এসব আলু ১১ থেকে ১৩ টাকা দরে পাইকারি কিনছেন বহিরাগত ব্যবসায়ীরা। মুজুরি, পরিবহণ খরচ আর বিভিন্নখানে ম্যানেজ করতে গিয়ে খুব বেশি লাভ টেকেনা এমন দাবি তাদের। এসব আলুর বিষয়ে কথা বলতে গেলে কেউ কেউ ভারতীয় বলে স্বীকার করলেও অনেকেই এড়িয়ে যান। দাবি করেন সীমান্ত এলাকার বাংলাদেশিদের চাষের আলু এসব।

স্থানীয় কয়েকজন কাঁচামাল ব্যবসায়ী বলেন, অবৈধ পথে আসা আলু কম রেটে কেনা হচ্ছে। সে মতে বিক্রিও হবে কম দামে। এতে দেশের আলুর চাহিদা অনেকটাই কমে আসবে এবং ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হবে চাষিরা। এসব আলু বৈধ পথে আসলে সরকারও রাজস্ব পেত।

এদিকে, বিষয়টি নজরে আনলে অভিযান চালায় বিজিবি। জব্দ করে মাত্র ৬৬ বস্তা আলু। বিপুল পরিমাণ আলু আসলেও জব্দের পরিমাণ এত কম কেন?- এর সদোত্তর মিলেনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বলেন, বিজিবিকে ম্যানেজ করেই সীমান্তে অবৈধ ব্যবসা চলছে। বিষয়টি জানাজানি হলে দায়সারা দায়িত্ব দেখাতে কিছু আলু জব্দ করেন তারা। এই ৬৬ বস্তা আলুজব্দ করে বিপুল সংখ্যক আলুর বৈধতাও দিয়েছে বিজিবি।

বিজিবি ঘাগড়া ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজল মজুমদার বলেন, আমরা অভিযান চালিয়েছি। যাচাই বাছাই করে যেগুলো মালিকবিহীন এবং কোনো কাগজপত্র নেই এমন ৬৬ বস্তা জব্দ করেছি। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এখানে ভারত এবং বাংলাদেশ সীমান্ত ইন্ডিকেট করা খুবই কঠিন। উভয়দেশের জমিতেই আলু চাষ হচ্ছে। কোনটা ভারতের সেটা বোঝা কঠিন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App