মানিকগঞ্জের সাটুরিয়াতে একই দিনে দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ হওয়ার পর পুলিশের তৎপরতায় মানবপাচার থেকে রক্ষা পেয়েছে দুই শিক্ষার্থী। নিখোঁজের চার দিন পর দুই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় মানবপাচারকারী গ্রুপের সদস্য এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় এক শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়েছে সাটুরিয়া থানায় মামলা করেছেন।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দুপুরে পুলিশ সুপার এক প্রেসব্রিফিংয়ে এসব তথ্য প্রকাশ করেন।

প্রেসব্রিফিংয়ে উদ্ধার হওয়া মাদ্রাসা পড়ুয়া ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী জানান, সাটুরিয়া উপজেলার গোলড়া গ্রামে লেবু মিয়ার মেয়ে নুসরাত জাহান তানজিনা (২০) অনেক দিন ধরে ঢাকায় চাকরি করেন। পরিচয় থাকার সুবাদে নুসরাত তাদের ঢাকায় কাপড়ের দোকানে চাকরির প্রলোভন দেখায়। নুসরাতের কথায় তারা দুইজন ঢাকা গিয়ে চাকরি করার সিদ্ধান্ত নেন। নুসরাতের পরিচিত হৃদয় নামে এক যুবকের সাথে গত ৪ মার্চ দুপুরে তারা ঢাকা চলে যায়। ঢাকায় গিয়ে তারা হৃদয়ের বাসায় ওঠেন। এক দিন পর তাদের বোরকা পড়িয়ে একটি হোটেলে নিয়ে অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করে হৃদয়। এভাবে তিনদিন তাদের উপর অত্যাচারের পর নুসরাত জাহান তানজিনা হৃদয়কে মোবাইল ফোনে জানান, তাদেরকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে হবে। বুধবার সন্ধ্যার পর হৃদয় তাদের বাড়ি উদ্দেশ্যে গাড়িতে উঠিয়ে দেয়। এরপর গোলড়া বাসস্ট্যান্ডে নামার পর পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। নুসরাত জাহান তানজিনা জানান, হৃদয়ে সাথে ফেসবুকে পরিচয় তার। এরপর অভাবের কারণে ঢাকায় গিয়ে হৃদয়ের কথায় সে বিভিন্ন হোটেলে গিয়ে দেহ ব্যবসা করেন। ওই দুই শিক্ষার্থীকে সে হৃদয়ের কাছে পাঠিয়েছিলো। কিন্তু ওই শিক্ষার্থীদের পরিবার ও পুলিশের চাপে সে ওই দুই শিক্ষার্থীকে বাড়িতে পাঠানোর কথা বলে হৃদয়কে। প্রেসব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খান জানান, সাটুরিয়াতে একই দিনে দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে জানতে পারেন নুসরাত নামে এক নারী ওই দুই শিক্ষার্থীকে চাকরির লোভ দেখিয়ে ঢাকায় পাচার করেছে। উদ্ধার হওয়া শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে তাদেরকে অসামাজিক কাজে বাধ্য করা হয়েছে। এই ঘটনায় উদ্ধার হওয়া এক শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। উদ্ধার হওয়ার দুই শিক্ষার্থীর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে। এই ঘটনায় নুসরাত জাহান নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হৃদয়কে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ কাজ করছে। এই চক্রটি গ্রামের সহজ-সরল অপ্রাপ্ত নারীদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে দেহব্যবসা পরে দেশের বাইরে পাচার করে দেয়।